নুরকে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর, অন্যরা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে
Published: 29th, August 2025 GMT
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরকে রাজধানীর কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ আগস্ট) রাতে গণঅধিকারের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসাধীন রাশেদ খাঁন জানান, নুরুল হকের অবস্থা সংকটাপন্ন। তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন, তার সমস্ত শরীর রক্তাক্ত।
গণঅধিকারের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ জানান, আহত নুরকে কাকরাইল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাশেদ খাঁন নিজেও গুরুতর আহত। তিনিও চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কাকরাইলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, গণঅধিকারের আহত নেতাকর্মীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ক্ষতের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন অনেকে। তাদের কারো মাথায় প্যান্ডেজ, কারো পায়ে, কারোবা হাতে।
শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে দ্বিতীয় দফায় জাপা কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন গণঅধিকার পরিষদের নেতারা। এ সময় জাপা নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী এসে জাপা নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেয়। তখন গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের ঘটনাস্থল ছাড়তে ১০ মিনিট সময় বেঁধে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গণঅধিকারের নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থল না ছাড়লে তাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করেন পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নুরুকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন তারা। এমন কি আত্মরক্ষার চেষ্টা করতে গিয়ে পড়ে যাওয়ার পরও তাকে আঘাত করা হচ্ছে।
এর আগে জাতীয় পার্টি নেতাকর্মীদের ওপর গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করে জড়িতদের বিচার দাবি করেন জাপার মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী।
রাতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। তাদের হামলায় দলের বেশ কয়েকজন নেতা আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি। এ সময় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইফুদ্দিন মিলন, আলমগীর সিকদার লোটন উপস্থিত ছিলেন।
এ দিন সন্ধ্যার দিকে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জন্য তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধ এবং দলটির নেতাদের গ্রেপ্তারের দাবিতে পল্টন জিরো পয়েন্টে সমাবেশ ডাকে গণঅধিকার পরিষদ। এই খবর পেয়ে জাতীয় পার্টির কাকরাইল অফিসে দলের মহাসচিব ব্যারিষ্টার শামীম পাটোয়ারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, আলমগীর সিকদার লোটনসহ দলটির বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অবস্থান নেন কাকরাইলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। গণঅধিকার পরিষদের সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়ে যাওয়ার পথে শ্লোগান পাল্টা শ্লোগানে জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার একপর্যায়ে সংঘর্ষ হয়।
রমনা থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আতিকুল আলম খন্দকর সাংবাদিকদের বলেন, “সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।”
ঢাকা/রুহানি/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন ত কর ম গণঅধ ক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো. আলমগীর হোসেন ওরফে বিদ্যুৎকে (২৪) নগরীর খানজাহান আলী (র.) সেতু এলাকায় নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর ৭ ডিসেম্বর আমি বাদী হয়ে খুলনা সদর থানায় হত্যা মামলা করি (মামল নং- ০৩)। মামলাটি বর্তমানে খুলনা মহানগর দায়রা জজ (মামলা নং: ৪৪৯/১৫) বিচারাধীন আছে।”
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ