আসামিদের হুমকিতে অসহায় মা, নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি
Published: 15th, September 2025 GMT
খুলনা মহানগরীর লবণচরার বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার ঘের ব্যবসায়ী মো. আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ (২৪) হত্যা মামলার বিচার কাজ এক যুগ অতিবাহিত হলেও এখনো শেষ হয়নি। মামলার দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে আসামিরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন নিহতের পরিবারকে। তাদের বিরুদ্ধে বাদীর অপর ছেলেকে হত্যার ভয়-ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ উঠেছে।
এ অবস্থায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা দিয়ে সাক্ষ্য গ্রহণের ব্যবস্থা এবং আসামিদের অপতৎপরতা থেকে রক্ষা করে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির আহ্বান জানিয়েছেন নিহত বিদ্যুতের মা জাহানারা বেগম। রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিচার বিভাগ, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
আরো পড়ুন:
কেএমপির ৮ থানার ওসি রদবদল
জলবায়ু পরিবর্তন আজকের বিশ্বের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: ইইউ রাষ্ট্রদূত
লিখিত বক্তব্যে জাহানারা বেগম বলেন, “২০১২ সালের ৪ ডিসেম্বর সন্ত্রাসীরা আমার ছোট ছেলে মো.
“মামলায় লবণচরা বাংলাদেশ সী ফুডস রোড এলাকার নাজিম খলিফার দুই ছেলে আরমান খলিফা ও আরিফ খলিফা, লবণচরা মোহাম্মদীয়া পাড়া মসজিদ এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের ছেলে হারুন হাওলাদার, লবণচরা ইব্রাহীমিয়া মাদরাসা রোড এলাকার হামিদ মিস্ত্রীর ছেলে মো. সিরাজ এবং লবণচরা মোক্তার হোসেন রোড এলাকার হযরত আলী ফকিরের ছেলে বাদল ফকিরকে আসামি করা হয়। এ মামলায় আসামিরা বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারেও ছিলেন। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেয়ে জেল থেকে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধামকি অব্যাহত রেখেছে। এই সব আসামিদের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলাও রয়েছে”, যোগ করেন তিনি।
জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, “আমার কলিজার টুকরো সন্তানকে হত্যা করেও সন্ত্রাসীরা ক্ষ্যান্ত হয়নি। উপরন্ত জামিনে মুক্তি পেয়ে তারা এখন মামলা তুলে নিতে আমি ও আমার এক মাত্র সন্তান এবং মামলার স্বাক্ষীদের জীবননাশসহ বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে বারবার সাধারণ ডায়রি (জিডি) করার ফলে হত্যাকারী-সন্ত্রাসীরা ক্ষুদ্ধ হয়ে আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যে কোন সময় তারা আমি ও আমার বড় ছেলেসহ আমার পরিবারের সদস্যদের বড় ধরণের ক্ষতি করতে পারে। এ অবস্থায় আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছি।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকারী-আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ভয়ে আমি এখন পর্যন্ত খুলনা ও লবণচরা থানায় চারটি সাধারণ ডায়রি করেছি। সর্বশেষ গত ৩ মার্চও আমি লবণচরা থানায় জিডি করি। কারণ ২ মার্চ দুপুরে মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি আরমান তার ভাই আরিফ এবং অপর আসামি জুয়েল শেখ, হারুন হাওলাদার, সিরাজ ও বাদল ফকিরসহ আরো অনেকে আমার বাসার সামনে এসে মামলা তুলে নেয়ার জন্য ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। এমনকি তারা আমাকে ও আমার বড় ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেন বিপ্লবকেও হত্যা করবেন বলেও হুমকি দেয়। এ ছাড়া, একই ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকির কারণে আমি ২০১৪ সালের ৪ মার্চ ও ২ মে খুলনা থানায় এবং একই বছরের ৪ মে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে লবণচরা থানায় সাধারণ ডায়রি করি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ড এল ক র সন ত র স
এছাড়াও পড়ুন:
“উচ্চশিক্ষা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতার পথ” নারায়ণগঞ্জে অনুপ্রেরণামূলক শিক্ষা সেমিনার অনুষ্ঠিত
বিদেশে উচ্চশিক্ষা আর কেবল ধনী পরিবারের সন্তানদের স্বপ্ন নয় এখন এটি সম্ভব পরিশ্রম, আত্মবিশ্বাস ও সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে। এমন অনুপ্রেরণামূলক বার্তা নিয়েই নারায়ণগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়েছে “Higher Education, Possibilities and Dream” শীর্ষক শিক্ষা সেমিনার।
বৃস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল ৩টায় নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির মিলনায়তনে এ সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে IELTS World ও Smart World Consultancy।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর হোসেন। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন-এর চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউকে-এর সাংগঠনিক সম্পাদক ড. আতাউর রহমান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি এবং ডেইলি নারায়ণগঞ্জ অনলাইন পোর্টালের সম্পাদক মনির মুন্না।
এ ছাড়া জেলার বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শতাধিক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক অংশ নেন অনুষ্ঠানে।
সেমিনারে বক্তারা বিদেশে উচ্চশিক্ষার সুযোগ, আবেদন প্রক্রিয়া, ভিসা প্রস্তুতি, শিক্ষাবৃত্তি এবং বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেন। পাশাপাশি ইংরেজি দক্ষতা বৃদ্ধি, আত্মবিশ্বাস গঠন ও মানসিক প্রস্তুতি নিয়েও পরামর্শ দেন তাঁরা।
প্রধান অতিথি আলমগীর হোসেন বলেন,“আজকের তরুণরাই আগামী দিনের বিশ্বনেতা। তোমাদের চোখে আমি দেখি স্বপ্নের আগুন, সেই আগুনই একদিন আলোকিত করবে বাংলাদেশকে। উচ্চশিক্ষা শুধু নিজের উন্নতির জন্য নয়, এটি দেশের উন্নয়নেও এক গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ।”
প্রধান বক্তা ড. আতাউর রহমান বলেন,“আজকের বিশ্বে উচ্চশিক্ষা কেবল একটি সনদ নয়, এটি মানসিক ও পেশাগত পরিপূর্ণতার প্রতীক। বিদেশে পড়াশোনার মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী শুধু জ্ঞানই অর্জন করে না, বরং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি, নেতৃত্বের গুণাবলি এবং সংস্কৃতির প্রতি সহনশীলতাও অর্জন করে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এখন বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সামর্থ্য রাখে।”
তিনি আরও বলেন,“বড় স্বপ্ন দেখো, তবে সেই স্বপ্ন পূরণে ঘাম ঝরাতে হবে, পরিশ্রম করতে হবে, আর নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে। বিদেশে পড়াশোনা কেবল তোমার জীবনের পথ নয়, এটি তোমার দেশের জন্যও এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।”
IELTS World ও Smart World Consultancy–এর প্রতিনিধিরা বলেন,“এই সেমিনারের লক্ষ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে থাকা ভয় ও দ্বিধা দূর করা। বিদেশে পড়াশোনা কেবল সার্টিফিকেট অর্জনের বিষয় নয়, এটি জীবনের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সাহস।”
অংশগ্রহণকারী এক শিক্ষার্থী বলেন,“বিদেশে পড়াশোনা নিয়ে আগে ভয় লাগত, আজ বুঝেছি সঠিক দিকনির্দেশনা ও আত্মবিশ্বাস থাকলে আমরাও পারব।”
অভিভাবকেরা এ ধরনের উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলে উল্লেখ করেন। তাঁদের মতে, “এমন সেমিনার শিক্ষার্থীদের বাস্তব তথ্য জানার সুযোগ দেয়, নতুন উদ্যমে লক্ষ্য স্থির করতে সহায়তা করে।”
অনুষ্ঠানের শেষে আয়োজক প্রতিষ্ঠান IELTS World ও Smart World Consultancy অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে ভবিষ্যতেও এমন উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেয়।
নারায়ণগঞ্জের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এ সেমিনার সৃষ্টি করেছে নতুন উদ্দীপনা ও আশা। আয়োজনটি যেন প্রমাণ করেছে উচ্চশিক্ষা আর কল্পনা নয়, এটি দৃঢ় প্রত্যয় ও পরিশ্রমের বাস্তব পথ।