বাকৃবি অনির্দিষ্টকাল বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ
Published: 31st, August 2025 GMT
অবরুদ্ধ ভিসিসহ শিক্ষক-কর্মকর্তাদের উদ্ধারে বহিরাগতদের হামলার পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সোমবার সকাল ৯ টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রবিবার (৩১ আগস্ট) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আবদুল আলীম বলেন, “উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সব ছাত্র-ছাত্রীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
আরো পড়ুন:
দেশের পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল করে তোলা হচ্ছে: তারেক
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌথবাহিনীর অভিযান
ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসক মফিদুল আলম জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল পরবর্তী উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরি সিন্ডিকেট সভার মিটিংয়ে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, “শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে। কিন্তু আজকে দুপুর থেকে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এক পর্যায়ে কিছু লোকজন শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে।”
জানা যায়, রবিবার দুপুর থেকে কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে উপাচার্যসহ প্রায় আড়াইশ শিক্ষক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন। পরে রাতে ওই হামলার পর বের হয়ে যান সব শিক্ষক। হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে দুপুরে অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের শিক্ষক অংশ নেন। সভা শেষে ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী সেশন থেকে কম্বাইন্ড কোর্সে ১৫০ জন, ভেটেরিনারিতে ৫০ জন এবং পশুপালনে ৫০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হবে। ইতোমধ্যে যারা ভর্তি হয়েছেন, তাদের জন্য অপশন থাকবে-তারা চাইলে ভেটেরিনারি, পশুপালন বা কম্বাইন্ড যেকোনো একটি ডিগ্রি নিতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী দুই অনুষদ একীভূত করা সম্ভব নয়; তবে দুই অনুষদ মিলিতভাবে কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রদান করবে এবং পালাক্রমে দুই অনুষদ থেকেই ডিন নির্বাচিত হবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো.
তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তিনটি ডিগ্রি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত মানতে রাজি নন। তারা এক পেশায় এক ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান।
ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘২৫ জুলাই থেকে যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। অথচ আজকের সিদ্ধান্তে দেখা গেল তিনটি ডিগ্রিই বহাল রাখা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট সব স্টেকহোল্ডার যেখানে কম্বাইন্ড ডিগ্রির পক্ষে, সেখানে শিক্ষকদের এ সিদ্ধান্ত গ্রহণযোগ্য নয়।’
পশুপালন অনুষদের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিনা আক্তার বলেন, “সকালে আমরা আমতলায় অবস্থান করি। পরে দুপুরে শিক্ষকরা আমাদের জানান তিনটি ডিগ্রিই বহাল থাকবে। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল কেবল একটি ডিগ্রি, আর সেটি হলো কম্বাইন্ড ডিগ্রি। আমাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মিরা বলেন, “৩৬ দিন ধরে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আমরা আন্দোলন চালাচ্ছি। চাকরির ক্ষেত্রে সব জায়গায় কম্বাইন্ড ডিগ্রির প্রাধান্য রয়েছে। কিন্তু এখন তিনটি ডিগ্রি রাখলে ভবিষ্যতে সমস্যা আরো বাড়বে। আমরা একটাই দাবি জানাই, এক পেশায় একটি ডিগ্রি থাকতে হবে।”
ঢাকা/লিখন/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চকবাজারে প্রিজন ট্রাকের ধাক্কায় ঠেলাগাড়ির শ্রমিক নিহত
রাজধানীর চকবাজারে প্রিজন ট্রাকের ধাক্কায় সোহাগ হাওলাদার (৩০) নামের ঠেলাগাড়ির এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার বেলা সোয়া একটার দিকে চকবাজারের নাজিমুদ্দিন রোডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সহকারী প্রধান কারারক্ষী সাইফুল ইসলাম বলেন, দুপুরে কেরানীগঞ্জ থেকে কারা সদর দপ্তরের দিকে যাচ্ছিল ট্রাকটি। ট্রাকটি চালাচ্ছিলেন মনসুর নামের এক চালক। নাজিমুদ্দিন রোডে পৌঁছালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সোহাগের সহকর্মীরা বলেন, দুপুরে আগামাছি লেন থেকে তাঁরা চারজন মিলে ঠেলাগাড়িতে ইট বহন করে নাজিমুদ্দিন রোড দিয়ে যাচ্ছিলেন। নাজিমুদ্দিন রোডের বড় মসজিদের সামনে পৌঁছালে দ্রুতগতির একটি প্রিজন ট্রাক ঠেলাগাড়িতে ধাক্কা দেয়। এতে সোহাগ সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে সোহাগকে উদ্ধার করে বেলা দেড়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোহাগের সহকর্মী আশরাফুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর এলাকাবাসী ট্রাক ও চালককে আটক করেছেন।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক বলেন, সোহাগের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট থানাকে জানানো হয়েছে।
নিহত সোহাগের বাড়ি বরিশালের মুলাদী উপজেলায়। বাবার নাম দুলাল হাওলাদার। স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সোহাগ কেরানীগঞ্জের জিনজিরা এলাকায় থাকতেন।