চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) কর্মীরা ‘গণছুটি’ কর্মসূচি পালন অব্যাহত রেখেছেন। তারা চাকরিতে বৈষম্য দূরীকরণ ও হয়রানিমূলক পদক্ষেপ বন্ধসহ চার দফা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেছেন।

কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর)  পবিস কর্মীর মধ্যে ২২০ জন গণছুটি কর্মসূচিতে ছিলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে এই কর্মসূচি পালন করছেন তারা। এ কর্মসূচি পালন করায় জনভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরসহ মোট ৬টি দপ্তরে কর্মকর্তা-কর্মচারী ৪৪৭ জন। তাদের ৪ দফা দাবি আদায়ে গণছুটি কর্মসূচি উপলক্ষে ৩০৯ জন ছুটির আবেদন দিয়েছেন। এরমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সদর দপ্তরের ৮৮ কর্মীর মধ্যে ৪২ জন ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন। মহারাজপুর সাব-জোনাল আফিসে ৭৯ কর্মীর মধ্যে ৫৯ জন, শিবগঞ্জ জোনাল অফিসে ৯৯ কর্মীর মধ্যে ৮১ জন, সাহাপাড়া সাব-জোনাল অফিসে ৪৩ কর্মীর মধ্যে ৩৫ জন, মহারাজপুর সাব-জোনাল আফিসে ৭৯ কর্মীর মধ্যে ৫৯ জন, ভোলাহাট জোনাল অফিসের ৫৩ কর্মীর মধ্যে ৩৮ জন এবং নাচোল জোনাল অফিসের ৮৫ কর্মী মধ্যে ৫৪ জনই ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন। এসব পবিস কর্মীরা ৭ দিন, ১০ দিন, ১৫ দিন এবং ৪ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন। 

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির প্রথম দিন অর্থাৎ রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) ৩০৯ জন পবিস কর্মী গণছুটি কর্মসূচি পালন করেছেন। 

এ দিন রাতেই বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাদের আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। বলা হয়, গণছুটির নামে অনুপস্থিত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদান না করলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) গণছুটি কর্মসূচিতে থাকা ৪৪৭ জনের মধ্যে ৮৯ জন স্ব-স্ব কর্মস্থলে যোগদান করেছেন। অনুপস্থিত রয়েছেন এখনো ২২০ জন। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৩টি উপকেন্দ্রের সকল কার্যক্রম ঢিমেতালে চলছে। যথাসময়ের মধ্যে ত্রুটিপূর্ণ লাইনগুলো মেরামত না হলে প্রায় ৩ লাখেরও বেশি গ্রাহক সেবা থেকে বঞ্চিত থাকবেন। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার হাওলাদার মো.

ফজলুর রহমান জানান, পবিস কর্মীরা আলাদা-আলাদাভাবে ছুটির আবেদন দিয়ে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে তারা গণছুটি কর্মসূচি পালন করছেন। ৩০৯ জন ছুটির আবেদন দিয়েছিলেন, তারা কেউই অফিসে আসেননি। তবে রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রাতে সরকারের পক্ষ থেকে আল্টিমেটাম দেওয়ার পর সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) কিছু কর্মী কাজে যোগ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘‘আশা করছি আগামী দিনগুলোয় তারা নিজ-নিজ কর্মস্থলে যোগ দেবেন।’’

চার দফা দাবি
১. বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (বিআরইবি)-পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি (পিবিএস) একীভূতকরণ অথবা অন্যান্য বিতরণ সংস্থার মতো কোম্পানি গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি, সব চুক্তিভিত্তিক ও অনিয়মিত কর্মীদের (মিটার রিডার কাম ম্যাসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক ও পৌষ্য বিলিং সহকারী) নিয়মিতকরণ, মামলা প্রত্যাহার করে চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল, সংযুক্ত ও সাময়িক বরখাস্তকৃতদের স্বপদে ফেরত আনা এবং অন্যায়ভাবে বদলিকৃতদের পদায়নে বিদ্যুৎ বিভাগের কমিটির প্রতিবেদন বাস্তবায়ন।

২. ১৭ আগস্ট ২০২৫ থেকে অদ্যাবধি যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী হয়রানিমূলকভাবে চাকরিচ্যুত, বরখাস্ত বা সংযুক্ত হয়েছেন তাঁদের বরখাস্তাদেশ বাতিল করে আগের কর্মস্থলে পদায়ন।

৩. জরুরি সেবায় নিয়োজিত লাইনক্রুদের কর্মঘণ্টা নির্ধারণ এবং শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচির সময় যোগদান করতে না পারা পাঁচজন লাইনক্রুকে আগের কর্মস্থলে ফেরত আনা।

৪. পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ।

ঢাকা/শিয়াম/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৭ স প ট ম বর জ ন ল অফ স কর মকর ত রব ব র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ