পাবনার রূপপুর গ্রিন সিটি প্রকল্পের কাজে অস্বাভাবিক ব্যয়ের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তরের দুই উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে বাধ্যতামূলক অবসর এবং একজনকে নিম্নবেতন গ্রেডে ডি‌মোশন (অবনমন) দেওয়া হ‌য়ে‌ছে।

তারা হ‌লেন, পাবনা গণপূর্ত উপবিভাগ উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ফজলে হক, রাজশাহী গণপূর্ত জোনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম, পিএন্ডডি) মোসা.

শাহনাজ আখতার এবং একই জো‌নের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) খোরশেদা ইয়াছরিবা।

গত বুধবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত পৃথক আদেশে তাদের তিন জন‌কে গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তা‌দের ম‌ধ্যে পাবনা গণপূর্ত উপবিভাগ উপ-সহকারী প্রকৌশলী (সিভিল) মো. ফজলে হক ও রাজশাহী গণপূর্ত জোনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ই/এম, পিএন্ডডি) মোসা. শাহনাজ আখতারকে দোষী সাব‌্যস্ত ক‌রে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪ এর উপবিধি ৩ এর (খ) অনুযায়ী ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান' গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

অন‌্যদি‌কে, উপ-সহকারী প্রকৌশলী খোরশেদা ইয়াছরিবাকে ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপবিধি ৩ (ক) অনুযায়ী ‘নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ' গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আদেশে বলা হয়, তিন উপ-সহকারী প্রকৌশলী রাজশাহী গণপূর্ত সার্কেলে কর্মরত থাকা অবস্থায় রূপপুর গ্রিন সিটি প্রকল্পের (২০১৯ সালে নির্মাণাধীন) ২০ ও ১৬ তলা ভবনের আসবাবপত্র ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী ক্রয় এবং ভবনে উঠানোর কাজে অস্বাভাবিক ব্যয় অপক‌র্মে জ‌ড়িত থাকার অভিযোগ উঠে। বিষয়টি সে সময়ে বিভিন্ন মিডিয়াতে প্রকাশিত হয়। উক্ত বিষয়ে ২০১৯ সালের ১৯ মে  গণপূর্ত অধিদপ্তর এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে গঠিত পৃথক তদন্ত কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে প্রকল্পের কাজে অস্বাভাবিক ব্যয়ের বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে। পরবর্তীতে বিভাগীয় তদন্তেও ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগ সন্দেহতাতীত প্রমাণিত হয়েছে।

তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রাক্কলন প্রস্তুতের সাথে সরাসরি জড়িত থেকে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় মো. ফজলে হক ও মোসা. শাহনাজ আখতার ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৪ এর উপবিধি ৩ এর (খ) অনুযায়ী তাদের ‘বাধ্যতামূলক অবসর প্রদান' গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আরেক উপ-সহকারী প্রকৌশলী খোরশেদা ইয়াছরিবা অস্বাভাবিক ব্যয়ের প্রাক্কলন প্রস্তুতের সাথে সরাসরি জড়িত থেকে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করায় তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ‘অসদাচরণ' এর অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী একই বিধিমালার বিধি ৪ এর উপবিধি ৩ (ক) অনুযায়ী তাকে ‘নিম্নবেতন গ্রেডে অবনমিতকরণ' গুরুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ অন য য় অসদ চরণ গণপ র ত প রক শ সরক র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানলেন মুজিবুর রহমান

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের বরাইয়া গ্রামে জন্ম। সেই গ্রামেরই শিশুদের হাতে ধরে ছড়িয়েছেন শিক্ষার আলো। দীর্ঘ তিন দশকের শিক্ষকতা জীবন শেষে অবসরে গেলেন বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম মুজিবুর রহমান (৫৯)।

শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে অনুষ্ঠিত হয় বিদায়ী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা (ইউএনও) এ টি এম কামরুল ইসলাম। এ সময় সাবেক সভাপতি, শিক্ষকবৃন্দ ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের নিষ্ঠা, সততা ও মানবিক অবদানের কথা স্মরণ করে বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সহকর্মী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহার প্রদান করা হয়। পরে সুসজ্জিত গাড়িতে তাকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দেওয়া হয় সম্মানজনক বিদায়।

মুজিবুর রহমান তার প্রাথমিক শিক্ষা বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েই শুরু করেন। ১৯৮৯ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি এবং ১৯৯০ সালে একই বিষয়ে এমএসসি সম্পন্ন করেন। উচ্চ শিক্ষা শেষে তিনি সরকারি একাধিক চাকরির সুযোগ পেলেও তা গ্রহণ করেননি। কারণ, তার বাবার ইচ্ছা ছিল—শিক্ষক হয়েই জীবন শুরু এবং শেষ করতে হবে। বাবার সেই কথাকে আজীবন লালন করেছেন তিনি।

১৯৯৫ সালের ১২ জুন পুনসহি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন মুজিবুর রহমান। এরপর দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই বছর শিক্ষকতা শেষে ২০০৪ সালের ২৭ এপ্রিল নিজ গ্রাম বরাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। টানা ২২ বছর দায়িত্ব পালন শেষে সেখান থেকেই অবসরে গেলেন।

বিদায়ী শিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, “আমি শিক্ষকতা পেশাকে কখনো চাকরি মনে করিনি। এটা ছিল আমার জীবনের ভালোবাসা ও দায়িত্ব। আজ বিদায় নিচ্ছি, কিন্তু হৃদয়ে এই বিদ্যালয় চিরদিন অমলিন থাকবে।”

ঢাকা/রফিক/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টি-টোয়েন্টি থেকে উইলিয়ামসনের অবসরের ঘোষণা
  • ৩০ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টানলেন মুজিবুর রহমান