ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, যারা ফ্যাসিবাদ তাড়ানোর জন্য রাজপথে ছিল, ছাত্র জনতা সহ দেশপ্রেমিক যারাই আন্দোলন করেছে তাদের সাথে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাষ্ট্র গঠন করবো।

অতীতের সিস্টেমে অনেকে নির্বাচন চায়, কিন্তু রাষ্ট্র সংস্কার হোক এটা চায় না। তবে আমরা ধন্যবাদ জানাই যে, সন্ত্রাসী, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির দায়ে তাদের ১০ হাজার নেতাকর্মীকে তারা বহিষ্কার করেছে।

তারা স্বীকার করে নিয়েছে যে, তাদের টপ টু বটম সকল জায়গায় চাঁদাবাজ আছে, সন্ত্রাস আছে। এ বহিষ্কারের পরও কি সংশোধন হয়েছে? না হতে পারে নাই। যারা তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তারা কিভাবে দেশ নিয়ন্ত্রণ করবে এটা আমাদের জানা নাই। 

তিনি বলেন, আমরা মনে করি ৭২’র সংবিধান আমাদের মুক্তি দিতে পারে নাই। যদি সংস্কার করতে হয় তাহলে মূল সংস্কার হলো নির্বাচনী সংস্কার। শুধু একটি নির্বাচনের জন্য তো জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে রক্ত ঝড়ে নি। বরং একটি আদর্শিক পরিবর্তন হতে হবে। বর্তমানে ইসলামপন্থীরাই এখন দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি।

শুক্রবার বিকাল ৩টায় চাষাড়া শহীদ মিনারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের উদ্যোগে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন, প্রয়োজনীয় রাষ্ট্রসংস্কার, খুনিদের দৃশ্যমান বিচার ও মেট্রোরেল প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করার দাবীতে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সভাপতি মুফতি মাসুম বিল্লাহর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মুহা.

সুলতান মাহমুদের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) মুফতি দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক উপকমিটি সম্পাদক আলহাজ্ব মুহা. হারুনুর রশিদ, নারায়ণগঞ্জ মহানগর সহ-সভাপতি নুর হোসেন, জয়েন্ট সেক্রেটারি ডা. সাইফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মাও. শামসুল আলম, প্রচার ও দাওয়া সম্পাদক বিলাল খান, অর্থ সম্পাদক ইসমাইল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

তিনি আরও বলেন, বিগত দিনে শেখ হাসিনা যেভাবে ইসলামপন্থীদের কটুক্তি করতো, বর্তমানে তারাও আমাদের মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ বলে মিথ্যা আখ্যা দেয়। তারা নাকি আমাদের আফগানিস্তান ও পাকিস্তান পাঠিয়ে দিবে।

আমরা বলি, কখনো আমরা আফগানিস্তান ও পাকিস্তান যাবো না। আমরা দেশকে ভালবাসি, দেশেই থাকবো। বরং যাদেরকে আমরা ভারতের দালাল বলতাম তারাই ভারত পালিয়ে গিয়ে প্রমাণ করেছে তারা ভারতের দালাল। তাদেরও কিন্তু বিভিন্ন দেশে বাড়ীঘর আছে। আমরা চাই সবাই দেশেই থাকুক। একসাথে আমরা দেশে থেকে সুন্দর রাষ্ট্র গঠন করি।

প্রধান বক্তা দেলাওয়ার হোসাইন সাকী বলেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ক্ষমতার রাজনীতি করে না, জিঘাংসার রাজনীতির চর্চা করেনা। আদর্শিক রাজনীতি করা হলো আমাদের কাজ। আমরা মানুষকে স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে দিতে চাই, কোন চাঁদাবাজের স্থান আমাদের এখানে নেই।

শুধু এমপি হওয়ার জন্যই যদি আন্দোলন করতাম তাহলে এই অফার বহুবার আমাদেরকে দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে কোন রাজনীতি করতে চাই না। 

সভাপতির বক্তব্যের মুফতি মাসুম বিল্লাহ বলেন, অনেকে বলে পি আর খায় না মাথায় দেয়? আমরা স্পষ্ট বলতে চাই, পি আর এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। পি আরের বিরুদ্ধে কথা বললে জনগণ আপনাদেরকে মেনে নিবে না।

যারা ১৬ বছর অন্যায়ভাবে মানুষকে হত্যা করেছে, গুম করেছে এবং ৫ আগস্টের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছে তাদের  বিচার হওয়ার পূর্বে কোন নির্বাচন দেখতে চাই না।

তিনি আরও বলেন, ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আমাকে হাতপাখার প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। আমি বলতে চাই, এমপি নয়; জনগণের খাদেম হিসেবে কাজ করতে চাই।

মানুষ আমাদের কাছে আসবে না, আমরা জনগণের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের প্রয়োজন পূরণ করব ইনশাআল্লাহ। আমাদের সহ সকল নগরবাসীর একটাই দাবি, “মেট্রোরেল প্রকল্পে নারায়ণগঞ্জকে যুক্ত করতে হবে”।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: র জন ত ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ আম দ র র জন ত ন র জন ইসল ম গঠন ক

এছাড়াও পড়ুন:

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু

ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা আগে যে কাজ করতেন, তাদেরকে সে কাজে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। 

শনিবার (১ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী বিভাগের ব্যবসায়ীদের এক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অনুরোধ জানান।

ঐকমত্য কমিশনের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, “জোর করে আরেকটি দলের অথবা দুটি দলের বা তিনটি দলের মতামত বাকি দলগুলোর ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা একটা রাজনৈতিক দল, তারাও একটি রাজনৈতিক দল। এখানে ঐকমত্যের বাইরে গিয়ে তাদের দাবি আমাদের ওপর চাপাতে চাচ্ছে, জনগণের ওপর চাপাতে চাচ্ছে। অথচ, ঐকমত্য কমিশন করার উদ্দেশ্য ছিল, ঐকমত্য যতটুকু হবে, সেটা নিয়ে আমরা জনগণের কাছে যাব।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “ঐকমত্য হয়েছে, সই হয়েছে, তার বাইরে গিয়ে এখন নতুন নতুন দাবি নিয়ে আসছে। তাদের দাবি মানতে হবে, না মানলে এটা হবে, সেটা হবে...। আবার তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে ঐকমত্যের কিছু লোকজন। তাদেরও আবার মতামত আছে। রাজনীতিবিদদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে তারা তাদেরটা চাপাতে চাচ্ছে। আবার ঐকমত্য কমিশনেরও একটা নিজস্ব মতামত আছে। ঐকমত্য কমিশনের মতামতের জন্য তো তাদেরকে সেখানে রাখা হয়নি। এখন তাদেরও মতামত আছে এবং ওটা আমাদেরকে মানতে হবে।”

দেশের মানুষকেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, যাদের দাবি রাজনীতিবিদদের ওপর চাপাতে চান, জনগণের ওপর চাপাতে চান; তাদের প্রতি আমার অনুরোধ- আপনারা যে যেই কাজ করতেন আগে, ওই জায়গায় ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নিতে দেন। আমি অনুরোধ করছি, আপনারা স্ব স্ব কাজে ফিরে যান। বাংলাদেশের মানুষকে তাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দয়া করে তাদের ওপরেই ছেড়ে দেন। আপনাদেরকে এই দায়িত্ব কেউ দেয় নাই।”

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে তাদের সিদ্ধান্ত দেবে। যেসব দল তাদের দাবি-দাওয়া চায়, তাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হবে তো। জনগণের মতামত নিতে হবে তো। জনগণের ম্যান্ডেট নিতে হবে তো। মতামত জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।”

নির্বাচন বিলম্বিত করার চেষ্টা চলছে, অভিযোগ করে আমীর খসরু বলেন, “ব্যবসায়ীরা আমাকে প্রতিনিয়ত বলছেন, ফেব্রুয়ারি নয়; পারলে এখনই নির্বাচন করে আমাদেরকে একটু মুক্ত করেন। আমাদের ব্যবসা ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমরা কোনো বিনিয়োগ করতে পারছি না। বিদেশিরা কোনো বিনিয়োগ করছে না। সুতরাং, এই নির্বাচনকে যারা বিলম্বিত করতে চায় তাদের স্বার্থের জন্য, এখানে ব্যবসায়ীদেরকে সোচ্চার হতে হবে। দ্রুতই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে।”

রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে এই বিভাগীয় ব্যবসায়ী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ব্যবসায়ী ফোরাম এর আয়োজন করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনুসহ রাজশাহী বিভাগের আট জেলার ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান।

ঢাকা/কেয়া/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ জনগণের নয়, কিছু উপদেষ্টার প্রয়োজন: হাফিজ
  • একাত্তরের গণহত্যার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে হবে: আলাল
  • জ্বালানি সুবিচার নিশ্চিতে সংগ্রাম, শপথ যুব সংসদের সদস্যদের
  • ঐকমত্য কমিশনে যারা আছেন, তারা নিজেদের কাজে ফিরে যান: খসরু
  • বন্দরে বিএনপি নেতা তাওলাদের উপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে আল্টিমেটাম
  • বিএনপি ও জামায়াত কে কোন ফ্যাক্টরে এগিয়ে
  • অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল
  • সরকার নিরপেক্ষতা হারালে জনগণ মাঠে নামবে: তাহের
  • সংস্কার ইস্যুতে সব দল ঐক্যবদ্ধ থাকলেও বিএনপি অবস্থান পরিবর্তন করে
  • বিএনপি-জামায়াত দেশকে অন্য এক সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী