কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এক শিক্ষার্থীকে সিএনজি চালক ও মালিক মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শরীফ উল ইসলাম। এছাড়া অভিযুক্ত সিএনজি চালকের নাম আনোয়ার এবং সিএনজির মালিক হারুন।

আরো পড়ুন:

অবশেষে শেষ হলো জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা

জাকসু নির্বাচন: নজরুল-রবীন্দ্রনাথ হলে ভোট গণনা বাকি 

শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৯টার দিকে কোটবাড়ির চাঙ্গিনী দক্ষিণ মোড় এলাকায় এ মারধরের ঘটনা ঘটে। 

জানা যায়, ভুক্তভোগী শরীফ টিউশন শেষ করে কুমিল্লা শহর থেকে সিএনজিতে করে কোটবাড়ির দিকে রওনা দেন। সে সময় বৃষ্টি পড়ায় সিএনজির পর্দা টেনে দেন। বৃষ্টি কমলে পর্দা ভাজ করতে বলে চালক আনোয়ার। এ নিয়ে দুইজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে কোটবাড়ি বিশ্বরোড এলাকায় সিএনজি থেকে শরীফকে নামিয়ে দিতে চান সিএনজি চালক।

কিন্তু নামতে না চাইলে সিএনজি চালক তাকে নিয়ে চাঙ্গিনী দক্ষিণ মোড় এলাকায় সিএনজি গ্যারেজে আসে। সেখানে নামিয়ে তাকে গালিগালাজসহ মারধর করেন সিএনজি চালক আনোয়ার ও সিএনজি মালিক হারুন।

পরে ভুক্তভোগী শরীফ সহপাঠীদের ফোন দিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী মিলে সেই সিএনজি গ্যারেজে যায় বিষয়টি সমাধান করতে। তখন সিএনজি চালক, মালিক এবং গ্যারেজে থাকা অন্যান্য লোকজন মিলে ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ লাঠিসোটা নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে। হামলা থেকে বাঁচতে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল থেকে সরে এসে গন্ধমতি নামক এলাকায় অবস্থান নেয়। 

এরপর ১০টার দিকে গন্ধমতি থেকে শতাধিক শিক্ষার্থী একত্র হয়ে আবারো সিএনজি গ্যারেজে যায়। তখন পুলিশ প্রশাসনের উপস্থিতিতে সিএনজি চালক আনোয়ারকে গণধোলাই দেয় উৎসুক জনতা। এতে তিনি আহত হন। 
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ শিক্ষার্থীদের শান্ত করে এবং সমাধানের জন্য উভয় পক্ষকে আলোচনার আহ্বান করে।

আলোচনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শরীফ উল ইসলাম বলেন, “আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর শুরু করে। আমার পায়ে আঘাত করে। পকেটে থাকা মোবাইল ভেঙে গেছে। এছাড়া আমাদের ওপর বৃষ্টির মত ইট মেরেছে।”

এ সময় ভুক্তভোগী প্রমাণ হিসেবে ভাঙা ফোন দেখান। এছাড়া আরেক শিক্ষার্থীর ফোনও ভাঙা অবস্থায় দেখানো হয়। পাশাপাশি একটি স্মার্ট ওয়াচ, একজনের পাওয়ার ব্যাংক ও নগদ টাকা ঘটনাস্থলে হারিয়ে গেছে বলে দাবি করেন এক শিক্ষার্থী । 

সমাধানের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পর মারধরের শিকার শাহিনুল ইসলাম গালিব বলেন, “আমরা গিয়েছি কথা বলে সমাধান করতে। কিন্তু, আমরা অটোরিকশা থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়। আমার একটি স্মার্ট ওয়াচ সেখানে হারিয়ে গেছে। আমাদের ওপর রড এবং দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি বৃষ্টির মত ইট নিক্ষেপ করা হয়েছে।”

রাত ১টার দিকে পুলিশ প্রশাসন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড.

মো. আবদুল হাকিম ও সহকারী প্রক্টর মুতাসিম বিল্লাহ এবং এলাকাবাসী মিলে আলোচনায় অভিযুক্তদের মুচলেকা ও ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করে।

অভিযুক্ত সিএনজি চালক আনোয়ার বলেন, “তিনি (শিক্ষার্থী) যখন সিএনজিতে উঠেন তখন বৃষ্টি পড়ছিল। বৃষ্টি পড়া বন্ধ হলে আমি পর্দাটি ভাজ করতে বলি। তখন আমাকে বাজে ভাষায় গালাগালি করে। তখন তিনি (শিক্ষার্থী) ফোনে লোকজনকে আসতে বললে আমি ভয়ে তাকে গ্যারেজের সামনে নামিয়ে দেই। আমি বাকি যাত্রীদের কোটবাড়ি নামিয়ে আবার গ্যারেজে আসলে ২০ থেকে ২৫ জন এসে আমাকে মারধর করে। তারপর আবারো ৬০ থেকে ৭০ জন এসে মারধর করে।”

অভিযুক্ত সিএনজির মালিক হারুন বলেন, “আমি প্রথমে গ্যারেজের ভেতরে ছিলাম। পরে চিল্লাচিল্লি শুনে বাহিরে এসে দেখি উনার (শিক্ষার্থী) সঙ্গে ঝামেলা। এরপরে ২০ থেকে ২৫ এসে চালককে মারধর করতে থাকলে আমি বাঁধা দেই।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, “সিএনজি চালক ও মালিকের সঙ্গে হওয়া ঝামেলা সমাধান করা হয়েছে। চালক ও সিএনজি মালিকের মুচলেকা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। আমাদের শিক্ষার্থীদের আরো সহনশীল হতে হবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন স এনজ দ র ওপর আম দ র এল ক য়

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় গুলিতে ৩ পুলিশ নিহত

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যে গুলিতে অন্তত তিনজন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন পুলিশ সদস্য।

অঙ্গরাজ্যটির পুলিশ কমিশনার ক্রিস্টোফার প্যারিস বুধবার সংবাদমাধ্যমকে হতাহতের এ তথ্য জানান।

ক্রিস্টোফার প্যারিসের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার দুপুরের এ ঘটনায় সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। আহত দুই পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

পেনসিলভানিয়ার গভর্নর জশ শাপিরো ফিলাডেলফিয়া থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমিটার বা প্রায় ১১৫ মাইল পশ্চিমে নর্থ কোডোরাস টাউনশিপে ঘটনাস্থলে গেছেন।

কে বা কারা এ গুলিবর্ষণের পেছনে জড়িত, সে সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে পুলিশ কোনো তথ্য দেয়নি।

অ্যাটর্নি জেনারেল পামেলা বন্ডি পুলিশের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ‘আমাদের সমাজের জন্য একটি অভিশাপ’ বলে অভিহিত করেছেন।

পামেলা বন্ডি আরও বলেন, স্থানীয় কর্মকর্তাদের সহায়তার জন্য ফেডারেল এজেন্টরা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ