ভারত-বাংলাদেশ লড়াইয়ে এখনও প্রাসঙ্গিক রুবেল
Published: 24th, September 2025 GMT
কৌতূহলটা টের পাওয়া গেল সংবাদ সম্মেলন কক্ষে ঢুকেই। ভারতীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে ততক্ষণে জমে গেছে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের আড্ডা। এ এখন কোথায়, সে কী এখনো জাতীয় দলের আশপাশে আছে—তাঁদের বেশির ভাগ জিজ্ঞাসাই এমন। হুট করে তাতে হাজির পেসার রুবেল হোসেন প্রসঙ্গও। পশ্চিমবঙ্গের এক ভারতীয় সাংবাদিক বাংলাতেই করলেন প্রশ্নটা, ‘ও এখন কোথায়?’
বাইকের ব্যবসায় থিতু হওয়া এই ক্রিকেটারকে নিয়ে কৌতূহলের কারণটাও একটু পরই বললেন তিনি—‘আরে, ওর সেই বলটা দিয়েই তো সবকিছুর শুরু হয়েছিল!’ প্রায় বিস্মৃত রুবেল ফিরে এলেন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের উত্তাপ ছড়ানোর কথা বোঝাতেই।
২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে রোহিত শর্মাকে ক্যাচ বানিয়েও রুবেল উইকেট পাননি আম্পায়ার উচ্চতার কারণে নো বল ডাকায়। বলটা আসলেই নো ছিল কি না, তা নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচে এরপর ‘উত্তাপ’ শব্দটা সব সময়ই ছিল। তবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে মাঠের লড়াইয়ে সেই উত্তাপ কখনোই ছিল না।
আজ এশিয়া কাপের সুপার ফোরের ম্যাচে দুই দল মুখোমুখি হওয়ার আগপর্যন্ত যে ১৭ ম্যাচ খেলেছে তাতে বাংলাদেশের জয় একটিই। ২০১৯ সালে দিল্লিতে পাওয়া সেই জয়ের সংখ্যাটা দুই হওয়ার সম্ভাবনা এবারও কাগজে-কলমে কমই। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচেই জেতা ভারত সুপার ফোরে তাঁদের প্রথম ম্যাচে হারিয়েছে পাকিস্তানকে। বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারতের দখলে আছে র্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর জায়গাটাও।
২০১৯ সালে ভারত সফরে প্রথম টি–টোয়েন্টিতে জিতেছিল বাংলাদেশ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ ম্যাচকে মনে করানোর দিনে বুমরার ৫ উইকেট
২০১৯ সালের নভেম্বরে ইডেন গার্ডেনে দিবারাত্রির টেস্ট খেলেছিল ভারত–বাংলাদেশ। সেটিই ছিল ভারতের প্রথম দিবারাত্রির টেস্ট, বাংলাদেশেরও। এরপর গত ছয় বছরে কলকাতার বিখ্যাত মাঠটিতে আর টেস্ট হয়নি। ইডেনের টেস্ট–খরা কেটেছে আজ ভারত–দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে। অর্ধযুগ বিরতির কারণেই কিনা কে জানে, প্রথম দিনে খেলা দেখতে মাঠে গিয়েছেন ৩৬ হাজার ৫১৩ দর্শক।
দিনটা তাঁদের মন্দ যায়নি। টসে জেতা দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৫৯ রানে অলআউট করেছে ভারত। এরপর দিনের শেষ দিকে ভারত ২০ ওভার ব্যাট করে শুধু যশস্বী জয়সোয়ালের উইকেটটাই হারিয়েছে। দিন শেষে দর্শকেরা সঙ্গে নিয়ে গেছেন যশপ্রীত বুমরার ৫ উইকেট দেখার আনন্দ।
দুই টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টসে জিতে ব্যাট করতে নামা প্রোটিয়াদের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। প্রথম ১০ ওভারেই ৫৭ রান তুলে ফেলেছিলেন দুই ওপেনার এইডেন মার্করাম ও রায়ান রিকেলটন। ১১তম ওভারে রিকেলটনকে বোল্ড করে ভারতকে উদ্যাপনের প্রথম উপলক্ষ এনে দেন বুমরা। ২২ বলে ২৩ রান করা রিকেলটন বুমরার ঘণ্টায় ১৪০.৭ কিলোমিটার গতির ডেলিভারি ঠিকঠাক বুঝেই উঠতে পারেননি।
প্রথম স্পেলে টানা ৭ ওভার করা বুমরা শেষটিতে তুলে নেন মার্করামকেও। ১ ছক্কা ৫ চারে ৪৮ বলে ৩১ রান করা মার্করাম ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে ঋষভ পন্তের হাতে। ৫ রানের মধ্যে বুমরা দুই ওপেনারকে তুলে নেওয়ার পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই চলে যায় ভারতের হাতে।
কুলদীপ যাদব এসে টেম্বা বাভুমাকে ফেরানোর পর টনি ডি জর্জি ও উইয়ান মুল্ডার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁদের ৪৩ রানের চতুর্থ উইকেট জুটিও ভেঙে দেন কুলদীপ। এরপর আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি।
১১৪ থেকে ১৫৯—৪৫ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। এর মধ্যে শেষ উইকেট হিসেবে কেশব মহারাজকে এলবিডব্লু করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন বুমরা। টেস্টে এটি তাঁর ১৬তম বার ইনিংসে ৫ উইকেট। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে ইশান্ত শর্মার পর ভারতের মাটিতে টেস্টের প্রথম দিনে কোনো পেসার ৫ উইকেট পেলেন এই প্রথম। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই ম্যাচটি হয়েছিল গোলাপি বলে।
লাল বল বিবেচনায় নিলে ভারতে টেস্টের প্রথম দিনে ফাস্ট বোলারদের ৫ উইকেট নেওয়ার সর্বশেষ ঘটনা ২০০৮ সালে আহমেদাবাদে দক্ষিণ আফ্রিকার ডেল স্টেইনের।
বুমরার ৫ উইকেট নেওয়ার দিনে বল হাতে ভালো করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার পেসাররাও। কাগিসো রাবাদা চোটের কারণে ছিটকে পড়লেও মার্কো ইয়ানসেন, করবিন বশ ও মুল্ডাররা ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন। ২০ ওভার ব্যাট করে ভারত তুলতে পেরেছে মাত্র ৩৭ রান। এর মধ্যে ইয়ানসেনের বলে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জয়সোয়াল। ৫৯ বলে ১৩ রান করা লোকেশ রাহুলের সঙ্গে ৩৮ বলে ৬ রান নিয়ে অপরাজিত নাইটওয়াচম্যান হিসেবে নামা ওয়াশিংটন সুন্দর।
সব মিলিয়ে ইডেনে প্রথম টেস্টের প্রথম দিনে ৭৫ ওভারে দুই দল মিলিয়ে উঠেছে ১৯৬ রান, উইকেট পড়েছে ১১টি। ইডেনে টেস্টের প্রথম দিনে এর চেয়ে বেশি উইকেট পড়েছিল শুধু ২০১৯ সালের বাংলাদেশ–ভারত ম্যাচেই (১৩টি)।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:দক্ষিণ আফ্রিকা ১ম ইনিংস: ৫৫ ওভারে ১৫৯ (মার্করাম ৩১, মুল্ডার ২৪, ডি জর্জি ২৪, রিকেলটন ২৩; বুমরা ৫/২৭, কুলদীপ ২/৩৬)।
ভারত প্রথম ইনিংস: ২০ ওভারে ৩৭/১ (রাহুল ১৩*, জয়সোয়াল ১২; ইয়ানসেন ১/১১)।