বাগেরহাটে রিমান্ডে থাকা আসামির হাসপাতালে মৃত্যু
Published: 26th, September 2025 GMT
বাগেরহাটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোজাফফর (২৬) নামের এক আসামির মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার সকাল আটটার দিকে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, চুরির মামলায় গতকাল বৃহস্পতিবার এক দিনের রিমান্ডে মোজাফফরকে বাগেরহাট সদর মডেল থানার আনা হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর চুরির অভিযোগে মোজাফফরসহ চারজনকে মারধর করে পুলিশে দেয় সদর উপজেলার রাখালগাছি এলাকার একদল লোক। চিকিৎসকেরা বলছেন, হৃদ্রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
মোজাফফর বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ভাগা এলাকার মো.
থানা-পুলিশ বলছে, ১৮ সেপ্টেম্বর রাখালগাছি এলাকায় বৈদ্যুতিক তার, ট্রান্সফরমারসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের চোর সন্দেহ মোজাফফরসহ চারজনকে ধরে মারধর করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন স্থানীয় লোকজন। পরে ওই দিনই তাঁদের চুরির মামলায় আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাগেরহাট সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহামুদ-উল-হাসান বলেন, পুলিশের আবেদনে গতকাল আসামিদের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। সদর থানায় রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আজ সকালে মোজাফফর অসুস্থ হয়ে পড়লে অন্য আসামিরা পুলিশকে জানান। সকাল সাড়ে সাতটার দিকে পুলিশ মোজাফফরকে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানোর পর জরুরি বিভাগের তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। আটটার দিকে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
হার্ট অ্যাটাকে ওই রোগীর মৃত্যু হয়েছে উল্লেখ করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এস কে সোহেলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে দায়িত্বরত চিকিৎসক অনুসা রায় তাঁকে রিসিভ করেন। পুলিশের সহায়তায় হেঁটে তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ঢোকেন। তবে তখন ইসিজি করে দেখা যায় অবস্থা বেশ ক্রিটিক্যাল। তাই তাৎক্ষণিক তাঁকে রেফার্ড করা হয়। কিন্তু তাঁকে নিয়ে খুলনায় যাওয়ার আগেই সকাল আটটার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।’
আজ বেলা একটা পর্যন্ত হাসপাতালে অবস্থান করেও মোজাফফরের কোনো স্বজনকে পাওয়া যায়নি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রিমান্ডের আসামি মোজাফফরের নামে চারটি মামলা আছে। সকালে অসুস্থ হয়ে পড়লে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে হাসপাতালে নেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসেছেন। সুরতহালসহ প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাঁর ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব গ রহ ট ম জ ফফর চ ক ৎসক অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
মামুন হত্যা মামলায় চার আসামি পাঁচ দিনের রিমান্ডে, অস্ত্র মামলায় ইউসুফের দায় স্বীকার
রাজধানীর পুরান ঢাকায় আদালত এলাকায় ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ তারিক সাঈদ মামুন হত্যার ঘটনায় অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার পাঁচ আসামির মধ্যে চারজনকে আজ রোববার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পরে এ মামলায় তাঁদের আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।
আজ রোববার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান এ আদেশ দেন।
অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন মো. ফারুক হোসেন ফয়সাল (৩৮), রবিন আহম্মেদ ওরফে পিয়াস (২৫), মো. রুবেল (৩৪), শামীম আহম্মেদ (২২) ও মো. ইউসুফ জীবন (৪২)। তাঁদের মধ্যে ইউসুফ আজ দায় স্বীকার করে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাঁকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়নি।
এ হত্যাকাণ্ডের পর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজারে আসামি ইউসুফ জীবনের বাসার ওয়ার্ডরোবের নিচ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রের গুলির উদ্ধার করা হয়। ১২ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেন পুলিশ। পরে সেদিনই এই মামলায় গ্রেপ্তার পাঁচজনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ফটকের ঠিক বিপরীতে অবস্থিত ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সামনে ১০ নভেম্বর সকালে গুলি করে হত্যা করা হয় তারিক সাইফ মামুনকে। তিনি মামলার হাজিরা দিয়ে বের হচ্ছিলেন তখন। নিকটস্থ সিসিটিভি ক্যামেরার এক ফুটেজে দেখা যায়, মামুন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। তখন দুই ব্যক্তি খুব কাছ থেকে তাঁকে গুলি করছেন।
এ ঘটনায় আজ গতকাল শনিবার ১৫ নভেম্বর সূত্রাপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত মামুনের স্ত্রী বিলকিস আক্তার। তবে মামলায় তিনি কারও নাম উল্লেখ না করে অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগের উপপরিদর্শক আবু বকর জানান, আজ মামুন হত্যা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন। আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আগের অস্ত্র মামলার চার দিনের রিমান্ডে সব তথ্য বেরিয়েছে। পুলিশও মিডিয়াকে সব জানিয়েছে। হত্যার ঘটনা কেন হয়েছে? কে কী করেছে। সে ক্ষেত্রে আর রিমান্ডে যৌক্তিকতা নেই। বিচারক বলেন, ওটা তো অন্য মামলায়। আসামিপক্ষের আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, তাঁদের সঙ্গে আর কে কে আছেন, সেটা জানা দরকার। শুধু ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নয়, এখানে আরও বেশি টাকার লেনদেন হয়েছে।
আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, মিডিয়াতে এসেছে, রনি জড়িত। এ ছাড়া হত্যা মামলায় আসামি সব অজ্ঞাতনামা। বিচারক তখন তদন্ত কর্মকর্তার কাছে এ মামলায় এজাহারনামীয় আসামি কে কে, তা জানতে চান। জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি। বাদী চেয়েছেন, তদন্তের মাধ্যমে আসামি বের হোক। সে জন্য অজ্ঞাতনামা দিয়েছেন। বাদী ন্যায়বিচার চান।
তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, এ আসামিদের প্রতি বাদীর (হত্যা মামলা) কোনো সন্দেহ নেই। তাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন পাঁচ দিন আগে। তিনি মামলা করেছেন গতকাল শনিবার। কাউকে তিনি সন্দেহ করেননি। তখন তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, এঁরাই গুলি করছেন। মামলাটি তদন্তের পর্যায়ে রয়েছে। তদন্ত হলে সব বেরিয়ে আসবে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে বিচারক ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।