ভারতের আমৃতসর থেকে বার্মিংহামের পথে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭ বিমানে আবারো হঠাৎ করে ত্রুটি দেখা দেয়। ঘটনাটি গত ৪ অক্টোবর ফ্লাইটটির চূড়ান্ত অবতরণ পর্যায়ে থাকাকালে ঘটে। তবে বিমানের সব সিস্টেম স্বাভাবিক থাকায় বিমানটি নিরাপদে বার্মিংহামে অবতরণ করে।

রবিবার (৫ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

আরো পড়ুন:

পশ্চিমবঙ্গের কারাগারে ৮৯ শতাংশ বাংলাদেশি, ভারতের এনসিআরবির তথ্য

শেখ হাসিনাকে ফেরত দেওয়া ছাড়া প্রত্যাশিত আচরণ পাবে না ভারত: সারজিস

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিমানটির জরুরি শক্তি উৎপাদনকারী যন্ত্র ‘র‌্যাম এয়ার টারবাইন’ (র‌্যাট) হঠাৎ করেই সক্রিয় হয়ে গিয়েছিল।

সাধারণত যখন বিমানের দুটি ইঞ্জিনই বিকল হয় অথবা সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক বা হাইড্রোলিক ব্যবস্থা ব্যর্থ হয় তখনই র‌্যাট সক্রিয় হয়। এটি বাতাসের গতিকে ব্যবহার করে জরুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

ঘটনার পর এয়ার ইন্ডিয়া জানিয়েছে, বার্মিংহাম-দিল্লি ফিরতি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে এবং বিমানটি পরীক্ষার জন্য মাটিতে নামানো হয়েছে।

যাত্রীদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। তবে বিমানে কতজন যাত্রী ছিলেন, সে তথ্য প্রকাশ করেনি সংস্থাটি।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১২ জুন আহমেদাবাদ থেকে লন্ডন গ্যাটউইকের উদ্দেশ্যে উড্ডয়নের পর এয়ার ইন্ডিয়ার একটি বোয়িং ৭৮৭-৮ বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ২৬০ জনের মৃত্যু হয়। সেই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ হিসেবে ইঞ্জিন, হাইড্রোলিক বা বৈদ্যুতিক ত্রুটি কিংবা সফটওয়্যার বিভ্রাটের কথা বলা হয়েছিল।

এই ঘটনার পরই এয়ার ইন্ডিয়া ও ড্রিমলাইনার বিমান নিয়ে একাধিক প্রশ্ন ওঠে। যান্ত্রিক ত্রুটির পাশাপাশি বিমান রক্ষণাবেক্ষণও প্রশ্নের আওতায় চলে আসে। এয়ার ইন্ডিয়া নিয়ে বিতর্ক অব্যাহত থেকেছে দুর্ঘটনার বহু পরেও। প্রায় দুই মাস আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়। ১ আগস্ট থেকে আংশিকভাবে সেগুলো চালু করা হয়। এরপর ১ অক্টোবর থেকে পুরো মাত্রায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিষেবা চালু করেছে এয়ার ইন্ডিয়া। আর এরপরপরই ফের বিতর্কে জড়াল সেই বোয়িং ৭৮৭।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ইন ড য ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞায় বেকার বরগুনার লক্ষাধিক মৎস্যজীবী

ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদী ও সাগরে মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার। এই সময়ে বেকার হয়ে পড়েছেন জেলার লক্ষাধিক জেলেসহ মৎস্যজীবীরা। 

জেলেদের দাবি, নিষেধাজ্ঞায় সরকারি সহায়তার চাল নিয়ে নয়ছয় বন্ধে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

নিষেধাজ্ঞার এক দিন আগে থেকেই বরগুনার পাথরঘাটার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ও তালতলীর ফকিরহাট এলাকায় নোঙর করেছে কয়েক হাজার ট্রলার।

নিষেধাজ্ঞা চলাকালীন এই ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বিপণন ও মজুত সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। তাই আইন মেনে জাল দড়ি গুছিয়ে বাড়ি ফিরেছেন উপকূলের জেলেরা। তবে ২২ দিন বেকার সময়ে আয়ের পথ বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। 

বরগুনার পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, জাল-দড়ি গুছিয়ে বাড়ি ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন এফবি সৈকত সম্রাট ট্রলারের মাঝি সোবাহান হাওলাদার। 

তিনি বলেন, ‘ইলিশের ভরা মৌসুমে ২২ দিনের এই নিষেধাজ্ঞা গলার কাঁটা হয়েছে। কিছুদিন আগে মাছ শিকারে ৬১ দিনের নিষেধাজ্ঞা ছিল। সেই সময়ের দেনা পরিশোধ করার আগেই ২২ দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণের নিষেধাজ্ঞা শুরু। দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়েছি। তারপরেও সরকারের আইন না মেনে উপায় নেই।” 

অন্যান্য জেলেরা জানান, নিষেধাজ্ঞায় বেকার হয়ে পড়েছেন তারা। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সহায়তার চাল বিতরণের দাবিও জানান তারা। 

এফবি সাদিয়া ট্রলারের জেলে ফোরকান মিয়া বলেন, “দেশের পট পরিবর্তনের পরে নানামুখী সংস্কার মুখে শুনলেও বন্ধ হয়নি জেলেদের ভাগের চাল চুরির চর্চা। জেলে প্রতি ২৫ কেজি করে সহায়তার চালের পুরোটাই চাই আমরা। প্রতিটি জেলে পরিবারে কমপক্ষে পাঁচ জন সদস্য আছে। ২৫ কেজি চালে সবটা না চললেও আমরা দুমুঠো খেতে পারি।”

তিনি বলেন, “গতবছর মা ইলিশ সংরক্ষণ অবরোধের সহায়তার চাল নিয়ে নয় ছয় করেছে দায়িত্বরতরা। ২৫ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও জেলেদের চাল দেওয়া হয়েছে ১৫ থেকে ১৮ কেজি। বাকি চাল চুরি করেছে জনপ্রতিনিধিরা।”

জেলে সগির, হিরন, শামসু, হাসানসহ একাধিক জেলে বলেন, চাল বিতরণের সময় নৌবাহিনীর উপস্থিতি থাকলে সহায়তার চাল পুরোটাই পাবেন তারা। 

এসব বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নের পাশাপাশি জেলে ও মৎস্য শ্রমিকদের সহায়তার চাল সঠিক বণ্টনে বদ্ধ পরিকর প্রশাসন। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসক ও নৌবাহিনীর সাথে কথা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে তারা কঠোর থাকবেন। অন্যদিকে চাল বিতরণে অনিয়ম ঠেকাতেও কাজ করবে যৌথবাহিনীর সদস্যরা।”

গত বছরের নিষেধাজ্ঞায় প্রায় ৫৩ শতাংশ মা ইলিশ নিরাপদে ডিম ছাড়তে পেরেছিল। এর ফলে ৪৪ দশমিক ২৫ হাজার কোটি জাটকা যুক্ত হয়েছে নদী ও সাগরে।

ঢাকা/ইমরান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিষেধাজ্ঞায় বেকার বরগুনার লক্ষাধিক মৎস্যজীবী