রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের আগের রাতে ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। ‘রাকসু, রাকসু, রাকসু’ স্লোগান আর ঢোলের তালে তালে নানা সুরের গানে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। উৎসবে মেতে থাকা এই শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়ে সংহতি জানিয়েছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।

বুধবার রাত ৮টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা এ আসর বসান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় শিক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান করছিলেন। নির্বাচনের আগের রাতে শিক্ষার্থীদের এ রকম উৎসবে বিভিন্ন বিভাগের পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী জড়ো হয়েছেন। কেউ দলবেঁধে ছবি তুলছেন।

রাত পৌনে ১০টার দিকে পরিবহন মার্কেটে গানের তালে তালে ঠোঁট মেলাচ্ছিলেন শিক্ষার্থী কাউছার আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘সচরাচর নির্বাচনের আগের দিন থমথমে পরিবেশ থাকে, কিন্তু আজ আমাদের ঈদের মতো আনন্দ। আমরা বিশ্বাস করি, বিগত দিনে যে দাবিদাওয়াগুলো প্রশাসনের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, এই নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিনিধিরা সেই দাবি তুলে ধরবেন।’

গানের আসরে অংশ নিয়ে রাকসু নির্বাচনে সাংস্কৃতিক সম্পাদক প্রার্থী কাজী শফিউল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘ ৩৫ বছর একটা নির্বাচন হচ্ছে। এ জন্য ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। আমাদের প্রথম পরিচয় শিক্ষার্থী। তারপর আমরা ভোটার, তারপর আমরা প্রার্থী। শিক্ষার্থী হিসেবেই আমরা এই উৎসবে এসেছি।’

রাত পোহালেই রাকসু নির্বাচন। আজ রাতে ক্যাম্পাসে উৎসবে মেতেছেন শিক্ষার্থীরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ১৫ অক্টোবর.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র আগ র

এছাড়াও পড়ুন:

কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব

বর্ষা মানেই শুধু বৃষ্টি নয়- এ সময়টা মাছ শিকারিদের কাছে আনন্দের মৌসুমও। কেউ জীবিকার তাগিদে, কেউবা নিছক শখের বশেই ছুটে যান জলাশয়ের ধারে। গাজীপুরের কালীগঞ্জের বিল-ঝিল, নদী-নালা আর খালের পাড়ে এখন জমে উঠেছে বড়শি দিয়ে মাছ ধরার উৎসব।

আষাঢ়-শ্রাবণের শুরুতেই যখন চারদিক জলময় হয়ে ওঠে, তখন প্রাণ ফিরে পায় কালীগঞ্জের বিল ও নদীগুলো। আশ্বিনে খাল বিলে মাছ বেড়ে ওঠে। সঙ্গে জেগে ওঠে শখের মাছ শিকারিদের দল। কেউ পেশায় ব্যবসায়ী, কেউ শিক্ষক, কেউ চাকরিজীবী। তবে সবারই এক পরিচয়, তারা বড়শি দিয়ে মাছ ধরার টানে ছুটে আসেন এই জলমগ্ন মাঠে।

জেলেরা যেখানে সারা বছর মাছ শিকারেই ব্যস্ত, সেখানে এই শৌখিন শিকারিরা মৌসুমি অভিযানে নামেন। কেউ বড়শি ফেলে নদীর ধারে বসে থাকেন, কেউ আবার ডিঙি নৌকা ভাড়া করে চলে যান জলাশয়ের গভীরে।

বিলের নিয়মিত শিকারি পারভেজ বলেন, “বড়শি দিয়ে মাছ ধরার আনন্দটাই আলাদা। দিনভর বসে থেকেও যদি একটা বড় মাছ পাই, তাতেই সারাদিনের ক্লান্তি মুছে যায়। টাকা-পয়সা ওঠে কি না, সেটা ভাবি না।”

অনেকে জানান, টোপ বানাতে কেউ কেউ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করেন। কারো কাছে এটা প্রতিযোগিতা, কারো কাছে ধ্যানের মতো এক অভ্যাস।

কালীগঞ্জ উপজেলার বেলাই বিল, আফাইন্নার বিল, অন্যান্য জলাশয় ও শীতলক্ষা নদীতে অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত চলে এই ‘বড়শি মৌসুম’। সকাল থেকেই ডিঙি নৌকা, বাঁশের চেয়ার, ছাতা, টিফিনবক্স-সব নিয়ে হাজির হন শিকারিরা।

বিকেল গড়ালে পাড়ে ভিড় জমে দর্শকদেরও। কেউ কৌতূহল নিয়ে দেখেন, কেউ পরামর্শ দেন, আবার কেউ মাছ ধরার মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বলেন, “শখের মাছ শিকার আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ। এতে মানুষ প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যায়। আমরা চাই, সবাই নিয়ম মেনে শিকার করুক-ছোট মাছ ছেড়ে দিক, জলাশয়ের ভারসাম্য বজায় থাকুক।”

মাছ ধরা এখন শুধু জীবিকার বিষয় নয়- এটা হয়ে উঠেছে গ্রামীণ বিনোদনের এক অনন্য মাধ্যম। ছুটির দিনে অনেকে পরিবার নিয়ে আসেন। অনেকেই শিকার করা টাটকা মাছ বিলের পাড়েই রান্না করেন।

হঠাৎ বড় মাছ টোপে ধরা পড়লে পাড়ে ছড়িয়ে পড়ে উচ্ছ্বাস। কেউ হাসে, কেউ চিৎকার দেয়, আবার কেউ বলে- ‘এই আনন্দের দাম টাকায় মাপা যায় না!’
 
বর্ষা শেষে জল কমে এলেও শিকারিদের মন থেকে বড়শির টান যায় না। তারা বলে, “মাছ না ধরলে দিনটা অসম্পূর্ণ লাগে।”

কালীগঞ্জের জলাশয়গুলো তাই শুধু জীবিকার উৎস নয়-এগুলো এখন মানুষ ও প্রকৃতির সংযোগের প্রতীক। বড়শির ফাঁদে ধরা পড়ে শুধু মাছ নয়, ধরা পড়ে আনন্দ, ধৈর্য আর জীবনের রঙ।

ঢাকা/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুক্রবার জুলাই সনদে স্বাক্ষর, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন
  • জুলাই সনদে স্বাক্ষর শুক্রবার, ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
  • ৩৫ বছর পর চাকসু নির্বাচনে উৎসব
  • চাকসু নির্বাচনে উৎসবের আমেজ
  • ভারতে ‘আই লাভ মুহাম্মদ’ বলায় কেন মুসলিমদের ওপর দমন–পীড়ন চলছে
  • এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের দাবি মেনে নিন: জিএম কাদের
  • কালীগঞ্জে শখের মাছ শিকারিদের উৎসব
  • রাকসু নির্বাচন: শেষ মুহূর্তের প্রচারে মুখরিত ক্যাম্পাস
  • নাটক গান কবিতায় উৎসবমুখর প্রচার