ভিক্ষা চাইতে বাড়িতে সাত নারী, প্রবাসীর স্ত্রীকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার লুট
Published: 17th, October 2025 GMT
দুপুরে প্রবাসীর স্ত্রীর বাড়িতে ভিক্ষা চাইতে আসেন সাত নারী। বাড়িতে এসেই তাঁদের কেউ পানি আবার কেউ শৌচাগার ব্যবহারের অনুমতি চান। এভাবে কথা বলার এক ফাঁকে কৌশলে প্রবাসীর স্ত্রীকে অচেতন করে চক্রটি। এরপর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যান তাঁরা।
গত বৃহস্পতিবার দুপরে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার সাবেকগুলদি এলাকা এ ঘটনা ঘটে। ওই গৃহবধূর নাম শারমিন জান্নাত। এ ঘটনায় মামলার পর গতকাল মধ্যরাত থেকে আজ দুপুরের পৃথক অভিযানে এই চক্রের আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
কারাগারে যাওয়া আটজনের মধ্যে সাতজন নারী। তাঁরা হলেন চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদপুরের রেনু বেগম (৬০), তাঁর মেয়ে মুক্তা বেগম (৩৮), শ্রীকালিয়া গ্রামের রৌশন আরা বেগম (৬০), ফরিদগঞ্জ পৌরসভার কাছিয়াড়া গ্রামের গোলাপী বেগম (৫৮), তাঁর স্ত্রী রুবি বেগম (৩৭), একই এলাকার কাকলী বেগম (২৫) ও কুমিল্লা জেলার বরুড়া পৌরসভার মনিপুর গ্রামের শেফালী বেগম (৪৫)। আরেকজন হলের একই জেলার মতলব দক্ষিণ থানার নায়েরগাঁও গ্রামের সেলিম উদ্দিন (৪০)।
পুলিশ জানায়, রেনু বেগমের নেতৃত্বে আটজনের চক্রটি চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন। সেখানে থেকে তাঁরা সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া ও পেকুয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করেন। নারীপ্রধান পরিবার বা স্বামী প্রবাসে থাকেন, এমন তথ্য নিশ্চিত হলে কৌশলে পানি খেতে চেয়ে বা শৌচাগার ব্যবহারের অনুমিত চেয়ে বসতঘরে ঢোকেন। বাসায় কেউ না থাকলে গৃহবধূকে অজ্ঞান করে তাঁর পরনে থাকা স্বর্ণালংকার লুট করেন।
জানতে চাইলে পেকুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সিরাজুল মোস্তফা বলেন, ভিক্ষার আড়ালে কৌশলে চুরি করে এই চক্রটি। চক্রের সদস্যরা নারী হওয়ায় সহজে যেকোনো বসতঘরে ঢুকে যেতে পারেন। আর সুযোগ বুঝে অজ্ঞান করে সোনা, নগদ টাকা ও অন্যান্য দামি জিনিসপত্র লুট করেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব স
এছাড়াও পড়ুন:
শিশুদের হত্যার ভয় দেখিয়ে মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একই গ্রামের দুটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল ওই দুই বাড়ির চার পরিবারের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের বেঁধে শিশু ও নারীদের জিম্মি করে টাকা, স্বর্ণালংকার, কম্বল ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত উপজেলার হিঙ্গলী ইউনিয়নের একটি গ্রামের পাশাপাশি দুই প্রবাসী বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার রাত দেড়টার দিকে ডাকাত দল প্রথম হানা দেয় কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে। দ্বিতল পাকা বাড়ির মূল ঘর লাগোয়া রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে। দলে সাত থেকে আটজন ছিল বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান একা ছিলেন ঘরে। ডাকাত দল ওই বাড়িতে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।
ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়ার বাড়িতেও ডাকাতেরা হানা দেয়। সেখান থেকে চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা।
রাত চারটার দিকে প্রথম বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার পশ্চিমে আরেক প্রবাসীর বাড়িতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। সেখানে একতলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক সৌদি আরব প্রবাসীর শ্বশুর, তাঁর স্ত্রী ও ছোট দুই শিশুপুত্র ছিল। শাবল দিয়ে সদর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরুষ সদস্যদের হাত পা বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। পরে দুই শিশুকে হত্যা ও বাড়ির নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়। ২২ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি শেষ করে নির্বিঘ্নে চলে যায় তারা।
ডাকাতির শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের পরনে হাফপ্যান্ট ও কালো রঙের মুখোশ ছিল। তাদের সবার হাতে দেশি ধারালো অস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ধর্ষণের হমকি দেয়। তাঁর ছেলেকেও মারধর করে। এরপর তারা দ্বিতীয় তলায় তাঁর দুই ভাড়াটিয়ার ঘরেও হানা দেয়।
ডাকাতি হওয়া আরেক বাড়ির বাসিন্দা প্রবাসীর শ্বশুর প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় একা বাড়িতে তিনি সবার দেখভাল করেন। বুধবার ভোর চারটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে সাত–আটজন ডাকাত ঢুকে দেশি অস্ত্রের মুখে তাঁকে বেঁধে ফেলে। এরপর মেয়েকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা, ৭টি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে গেছে ডাকাতরা। ২২ মিনিট সময়ের মধ্যে ঘরের ভেতর তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা।
দুই বাড়ির চারটি পরিবারে ডাকাতির ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার রাতে হিঙ্গুলী ইউনিয়নে এক বাড়িতে গ্রিল কেটে ও আরেক বাড়িতে দরজা ভেঙে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। গ্রামটি ফেনী নদীর পাড়ে হওয়ায় নদীর উত্তর পাশের ছাগলনাইয়া উপজেলার সমিতির বাজার এলাকা থেকে শেষ রাতে ডাকাত দল এখানে এসে হানা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।