প্রাণসায়ের খাল রক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানির অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রাণসায়ের খালের পশ্চিম পাশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইয়ুথ অ্যালায়েন্স, প্রথম আলো বন্ধুসভাসহ ১৮টি যুব সংগঠন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আজাদ হোসেন সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক এস এম বিপ্লব হোসেন।

বক্তারা বলেন, একসময় সাতক্ষীরা শহরের বুক চিরে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খাল জেলার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত একটি জলাধার। ব্রিটিশ আমলে স্থানীয় জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী ১৮৬০ সালের দিকে শহরের উন্নয়ন, নৌযান চলাচল ও কৃষিকাজের সুবিধার্থে এই খাল খনন করেন। তাঁর নামানুসারেই খালের নাম হয় ‘প্রাণসায়ের খাল’। একসময় খালটি মরিচ্চাপ নদী থেকে বেতনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এবং নৌযান চলাচল, সেচ ও স্থানীয় বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। শহরের পানি নিষ্কাশন, কৃষি উৎপাদন ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায়ও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।

কিন্তু বর্তমানে খালটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে খালের দুই পাশে থাকা এল্লারচর ও খেজুরডেঙ্গীর স্লুইসগেট অপসারণ এবং খালে ময়লা–আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে খালকে বাঁচাতে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে বক্তারা জানান।

মানববন্ধনে খালের নান্দনিকতা ফিরিয়ে আনতে দুই পাড়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি যথাযথ স্থানে ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন স্থাপন, নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ, ড্রেনেজব্যবস্থার সংস্কার, অবৈধ দখল উচ্ছেদ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম চালুর দাবি জানানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

আইনজীবীর বিরুদ্ধে বৃদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ, প্রতিবাদে মানববন্ধন

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার ৬৫ বছরের বৃদ্ধা পারুল বেগম। স্বামী হাফিজুর রহমান মুন্সী মারা যান প্রায় সাড়ে ৪ বছর আগে। স্বামী মারা যাবার আগে মেয়ের বিয়ে হলেও এখন তার সংসারে রয়েছে দুই ছেলে, দুই পুত্রবধূ ও ৪ নাতী-নাতনী।

কিন্তু স্বামী মারা যাওয়াই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে বৃদ্ধা পারুল বেগমের। সদর উপজেলার গোবরা মৌজার ৫০ শতাংশ জমির দখল নিতে ২০০৩ সালে তারই সৎ ভাবি জেসমিন আরা তাকে আসামি করে গোপালগঞ্জ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপরই শুরু হয় আদালতে দৌঁড়ঝাঁপ। সংসার সামলাবেন নাকি মামলা চালাবেন- এমন দ্বিমুখী সংকটে পড়েন তিনি।

আরো পড়ুন:

গাজীপুরে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় চবিতে মানববন্ধন

গাজীপুরে শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে রাবিতে মানববন্ধন

দীর্ঘ ১৬ বছর পর আদালত তারপক্ষে রায় দিলেও তার আইনজীবী প্রতারণার মাধ্যমে সেই জমি দখল করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তিনি ওই জমি এখন হারাতে বসেছেন।

এ জমি ফেরতসহ প্রতারক অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলমের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগম ও তার পরিবারের সদস্যরা।

বুধবার (২২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে শহরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা। এ সময় তারা জমি ফেরতসহ প্রতারক অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলমের বিচারের দাবি করে। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগমসহ তার পরিবারের ১১ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগম বলেন, “সদর উপজেলার ১১৬ নম্বর গোবরা মৌজার ২৮৮৯ খতিয়ানের ৩০৮৯ খতিয়ানের ৮৩৭ নম্বর দলিলের ৫০ শতাংশ জমির মালিক আমি। পরে এ জমির মালিকানা নিয়ে সৎ ভাবি জেসমিন আরা আমার নামে মামলা দায়ের করেন। এ মামলা চালাতে আমি আমার আপন ছোট ভাইয়ের শ্যালক অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলমের কাছে যাই। মামলায় আদালত আমার নামে রায় দেন।”

তিনি বলেন, “কিন্তু মামলা চলাকালে অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম প্রতারণা করে মামলার বাদী জেসমিন আরার নামে ২২ শতাংশ, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি করে নিজের নামে ৩২ শতাংশ এবং তার স্ত্রী তানিয়া আক্তারের নামে ২৬ শতাংশ জমি লিখে নেন। এছাড়া আমার ছেলের কাছে ভুয়া দলিল দিয়ে ৪ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন।”

তিনি আরো বলেন, “এ নিয়ে তার কাছে জানতে গেলে উকিলবারের ভিতর আমাকে ও আমার ছেলেকে মারধর করে। এ ঘটনার বিচার চেয়ে কোনো প্রতিকার তো পাইনি, উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও জীবননাশের হুমকী দিয়ে যাচ্ছে। এ ঘটনায় আমি আমার জমি ফেরতসহ দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।”

ভুক্তভোগীর ছেলে মো. মানিক মুন্সী বলেন, “জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আমাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। আমার গর্ভবতী স্ত্রীকেও মারধর ও বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিলে ভয়ে আমি স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরালয়ে অবস্থান নেই। এ সময় আমার স্ত্রী মৃত সন্তান প্রসব করে।”

তিনি বলেন, “ওই আইনজীবী আমার কাছে ভুয়া দলিল দিয়ে ৪ শতাংশ জমি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এমনকি আমি সাড়ে ১৫ লাখ টাকার একটি চেকের মামলা দিলেও ওই আইনজীবী আমাকে না জানিয়ে আসামিদের সঙ্গে রফাদফা করেন। আমি এসব ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানাই।”

ভুক্তভোগী মোছা. পারুল বেগমের জামাতা বলেন, “আমার শ্বাশুড়ী আদালত থেকে রায় পেলেও অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম প্রতারণা করে জমি লিখে নিয়েছে। আমরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরেও কোনো বিচার পাচ্ছি না। জেলা প্রশাসক ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি দাবি জানাই, আমরা যেন সুষ্ঠু বিচার পাই।”

এ ব্যাপারে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম বলেন, “এ জমি নিয়ে তারই সৎ ভাবি জেসমিন আরা মামলা দায়ের করেন। এরপর তিনি আমাকে প্রথমে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেয়। পরে আমার কাছে জমি বিক্রি করেন। তার জমি আমি প্রতারণা করে নিয়েছি- এটা পুরোপুরি মিথ্যা।”

তিনি বলেন, “তিনি বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ দিয়েছিলো। কিন্তু কাগজপত্রে আমি এসব জমি পাই। পারুল বেগম আমার কাছে জমি বিক্রি করে বিভিন্ন সময় দামবাবদ টাকা নিয়েছেন।”

ঢাকা/বাদল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যে পুকুরে ভেসে উঠত সোনার চালুনী
  • নড়াইলে শ্রেণিকক্ষে ছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা, শিক্ষক পলাতক
  • ধর্ষণে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থীর বিচার দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
  • আইনজীবীর বিরুদ্ধে বৃদ্ধার জমি দখলের অভিযোগ, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • গির্জা ও স্কুলের সামনে ময়লার ভাগাড় নির্মাণ বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন
  • খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে নির্মাণাধীন ভাস্কর্য অপসারণের দাবি
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাজারের খাস জায়গার বন্দোবস্ত বাতিলের দাবিতে ব্যবসায়ীদের মানববন্ধন
  • গাজীপুরে ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় চবিতে মানববন্ধন
  • ৩ দফা দাবিতে ৪৪তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডারদের মানববন্ধন