নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেছেন, “ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে শতবর্ষী ঐতিহ্যবাহী প্যাডেল স্টিমার পি এস মাহসুদ। এটি বাংলাদেশের ঐতিহ্য ও নদীভিত্তিক পর্যটনের এক অনন্য মেলবন্ধন হতে যাচ্ছে।”

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)-এর শতবর্ষী ঐতিহ্যের এ স্টিমারকে ঢাকা–বরিশাল নৌরুটে আগামী মাস থেকে নদীকেন্দ্রিক পর্যটন সার্ভিসে যুক্ত করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন সংরক্ষণের পর আধুনিক সুবিধা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নতুন রূপে নদীপথে ফিরছে এ ঐতিহ্যবাহী জলযান।

আরো পড়ুন:

ভোলায় ২০ রুটে ৭ দিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ

সদরঘাটে স্বস্তির ঈদযাত্রা

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সদরঘাট থেকে ঢাকা–মুন্সীগঞ্জ রুটে ‘পি এস মাহসুদ’-এর পরীক্ষামূলক যাত্রায় অংশ নিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “স্টিমারটি এখন সম্পূর্ণ প্রস্তুত। আজকের ট্রায়াল ট্রিপের মাধ্যমে যান্ত্রিক ও নেভিগেশন সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। আগামী ১৫ নভেম্বর জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে পিএস মাহসুদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। এরপর এটি নিয়মিত পর্যটন সার্ভিস হিসেবে চলাচল শুরু করবে।”

তিনি বলেন,“পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, কীভাবে একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।”

উপদেষ্টা বলেন, “পি এস মাহসুদ-এর পাশাপাশি পি.

এস অস্ট্রিচ, পি.এস লেপচা ও পি.এস টার্নসহ আরও কয়েকটি পুরনো স্টিমার সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। লক্ষ্য হলো— নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনাকে বিস্তৃত করা।”

তিনি বলেন, “একসময় নদী ছিল বাঙালির জীবনরেখা। আমরা চাই মানুষ আবার নদীর সঙ্গে সেই সম্পর্ক নতুনভাবে আবিষ্কার করুক। ‘পি এস মাহসুদ’ সেই সম্পর্কেরই প্রতীক হয়ে ফিরছে— এটি চলমান ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি।”

স্টিমারটির সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ায় মূল কাঠামো ও ঐতিহাসিক নকশা অক্ষুণ্ণ রেখে ইঞ্জিন, নিরাপত্তা ও ফায়ার সেফটি সিস্টেম সম্পূর্ণ নবায়ন করা হয়েছে। এতে রয়েছে আধুনিক কেবিন, পর্যটক-বান্ধব ডেক এবং ডিজিটাল নেভিগেশন ব্যবস্থা।

স্টিমারটি প্রতি শুক্রবার ঢাকা থেকে বরিশাল এবং শনিবার বরিশাল থেকে ঢাকা রুটে চলবে। যাত্রীরা উপভোগ করতে পারবেন নদীর সৌন্দর্য, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের এক অনন্য ভ্রমণ অভিজ্ঞতা।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে এতে সংযোজন করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা সরঞ্জাম, লাইফ বোট, ফায়ার সেফটি ও জিপিএস ব্যবস্থা। ইঞ্জিনে ব্যবহৃত হয়েছে কম ধোঁয়া নির্গমনকারী প্রযুক্তি, যা নদীপথে দূষণ হ্রাসে সহায়ক হবে। স্টিমার পরিচালনায় থাকবেন ২৫ জন প্রশিক্ষিত কর্মকর্তা ও নাবিক।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) দেলোয়ারা বেগম, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান সলিম উল্লাহসহ মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর–সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন পথ ন পর বহন নদ বর শ ল ন

এছাড়াও পড়ুন:

প্রাণসায়ের খাল রক্ষায় সাতক্ষীরায় ১৮ সংগঠনের মানববন্ধন

প্রাণসায়ের খাল রক্ষা, জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানির অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে মানববন্ধন হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রাণসায়ের খালের পশ্চিম পাশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ইয়ুথ অ্যালায়েন্স, প্রথম আলো বন্ধুসভাসহ ১৮টি যুব সংগঠন এ মানববন্ধনের আয়োজন করে।

মানববন্ধনে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক আজাদ হোসেন সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংবাদিক এস এম বিপ্লব হোসেন।

বক্তারা বলেন, একসময় সাতক্ষীরা শহরের বুক চিরে প্রবাহিত প্রাণসায়ের খাল জেলার ইতিহাস, সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত একটি জলাধার। ব্রিটিশ আমলে স্থানীয় জমিদার প্রাণনাথ রায় চৌধুরী ১৮৬০ সালের দিকে শহরের উন্নয়ন, নৌযান চলাচল ও কৃষিকাজের সুবিধার্থে এই খাল খনন করেন। তাঁর নামানুসারেই খালের নাম হয় ‘প্রাণসায়ের খাল’। একসময় খালটি মরিচ্চাপ নদী থেকে বেতনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত ছিল এবং নৌযান চলাচল, সেচ ও স্থানীয় বাণিজ্যের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হতো। শহরের পানি নিষ্কাশন, কৃষি উৎপাদন ও পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষায়ও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত।

কিন্তু বর্তমানে খালটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। অবিলম্বে খালের দুই পাশে থাকা এল্লারচর ও খেজুরডেঙ্গীর স্লুইসগেট অপসারণ এবং খালে ময়লা–আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলা বন্ধ করতে হবে। তা না হলে খালকে বাঁচাতে আগামীতে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে বক্তারা জানান।

মানববন্ধনে খালের নান্দনিকতা ফিরিয়ে আনতে দুই পাড়ে পরিচ্ছন্নতা অভিযান, বৃক্ষরোপণ ও সৌন্দর্যবর্ধন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি যথাযথ স্থানে ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন স্থাপন, নিয়মিত বর্জ্য অপসারণ, ড্রেনেজব্যবস্থার সংস্কার, অবৈধ দখল উচ্ছেদ পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম চালুর দাবি জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জয়গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ 
  • উপন্যাস ‘মোকাম সদরঘাট’ নিয়ে বুকটক
  • যে পুকুরে ভেসে উঠত সোনার চালুনী
  • প্রাণসায়ের খাল রক্ষায় সাতক্ষীরায় ১৮ সংগঠনের মানববন্ধন
  • কুড়িল থেকে সদরঘাট হয়ে মিরপুরে বাসে যেতে কত সময় লাগে