রাজনৈতিক ইতিহাসের লেখাকে উঁচু স্তরে নিয়ে গিয়েছিলেন বদরুদ্দীন উমর
Published: 24th, October 2025 GMT
প্রয়াত চিন্তক ও লেখক বদরুদ্দীন উমর তাঁর লেখনীর মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক ইতিহাসের লেখাকে উঁচু স্তরে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি এক বিরল পণ্ডিত, যিনি কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক সাহায্য ছাড়াই নিজের শ্রমে ও ঘামে ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। ইতিহাসের ভেতর দিয়ে তিনি রাজনৈতিক দর্শনকে বিশ্লেষণ করতে ভালোবাসতেন।
শুক্রবার রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ে জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশন আয়োজিত বদরুদ্দীন উমর স্মরণানুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান। গত ৭ সেপ্টেম্বর বদরুদ্দীন উমর মারা যান।
রেহমান সোবহান বলেন, একাডেমিক জগতে যেখানে অনেকেই ক্যারিয়ার বা খ্যাতির জন্য লেখেন, তিনি লিখতেন একান্ত দায়বোধ থেকে। জ্ঞানচর্চাকে তিনি দেখতেন দায়িত্ব হিসেবে, পেশা হিসেবে নয়। এদিক দিয়ে তিনি অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের মতো, যিনি জ্ঞানের জন্যই জ্ঞানচর্চা করতেন, প্রকাশ বা পদোন্নতির জন্য নয়।
বদরুদ্দীন উমর এমন একজন মানুষ, যিনি চাইলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অধ্যাপক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন রাজনীতির কঠিন, অনিশ্চিত, বিপজ্জনক পথ। কারণ, তাঁর বিশ্বাস ছিল, পরিবর্তন আসতে পারে কেবল জনগণের মধ্য দিয়েরেহমান সোবহান, অর্থনীতিবিদতবে রাজ্জাক স্যার খুব বেশি বই প্রকাশ করেননি, আর উমর ছিলেন তাঁর প্রজন্মের সবচেয়ে প্রগলভ লেখকদের একজন— এমন মন্তব্য করে এই অর্থনীতিবিদ বলেন, তাঁর দুই খণ্ডের ‘বাংলাদেশের অভ্যুদয়’ বইটি প্রকাশিত হয় প্রথমে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস থেকে, পরে কেমব্রিজ ও ভারতের বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে। এসব লেখায় তিনি শ্রমিক শ্রেণির ইতিহাসকে তুলে ধরেন, যা স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনীতি বোঝার ক্ষেত্রে এক অনন্য অবদান।
বদরুদ্দীন উমর শুধু তাত্ত্বিক গবেষকই নন, একজন রাজপথের কর্মীও বলেও উল্লেখ করেন রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, বদরুদ্দীন উমর এমন একজন মানুষ, যিনি চাইলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অধ্যাপক বা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হতে পারতেন। কিন্তু তিনি বেছে নিয়েছিলেন রাজনীতির কঠিন, অনিশ্চিত, বিপজ্জনক পথ। কারণ, তাঁর বিশ্বাস ছিল, পরিবর্তন আসতে পারে কেবল জনগণের মধ্য দিয়ে।
জ্ঞানতাপস আব্দুর রাজ্জাক ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক রওনক জাহান পরিচয়ের প্রাথমিক পর্বের স্মৃতিচারণা করে বলেন, ‘১৯৭২ সালের পর অধ্যাপক আব্দুর রাজ্জাকের মারফতে আমার সঙ্গে বদরুদ্দীন উমরের পরিচয়। পরিচয়ের অনেক আগে আমি তাঁর নাম শুনেছিলাম।’
বদরুদ্দীন উমর স্মরণানুষ্ঠানে আলোচক ও আয়োজকেরা। রাজধানীর বেঙ্গল শিল্পালয়ে; ২৪ অক্টোবর ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বদর দ দ ন উমর র জন ত প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রতারক পুরুষ বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে, তবে আল্লাহ সব দেখেন’
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—দু’জায়গাতেই অভিনয় গুণে জায়গা করে নিয়েছেন অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা। পর্দার চরিত্রে যেমন সাহসী, বাস্তব জীবনেও তেমনি সরব ও স্পষ্টভাষী।
বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাবনার উপস্থিতি সবসময়ই আলোচনায় থাকে। নিয়মিত ছবি ও ভাবনার টুকরো অংশ প্রকাশ করায় অনেক সময় কটাক্ষের মুখেও পড়েছেন এই অভিনেত্রী। গতকাল রাতে ভাবনা তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট দিয়েছেন। তাতে নারীর সঙ্গে পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতার একটি চিত্রায়ণ করেছেন এই অভিনেত্রী।
আরো পড়ুন:
‘খুকুমণির’ বিয়ে
রাজবাড়িতে বসবে মধুমিতার বিয়ের আসর!
এ বিষয়ে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “একজন প্রতারক পুরুষ তার বিশ্বাসঘাতকতা গোপন রাখে। কিন্তু যে নারীকে সে আঘাত করেছে, তাকে রক্ষা করার জন্য আল্লাহ তা প্রকাশ করেন। প্রতিটি মিথ্যা, যা সে পেছনে বলেছে, নীরবে ভাঙা প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, কান্নার প্রতিটি মুহূর্ত, অথচ পুরুষটি ভান করেছে সব ঠিক আছে। তবে আল্লাহ সব দেখেন, যা সে দেখতে পায় না।”
কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। এমন তথ্য স্মরণ করে ভাবনা বলেন, “একজন পুরুষ ভাবেন, তার কর্ম ঢাকতে সে যথেষ্ট চতুর। কিন্তু কোনো গোপন বিষয় চিরকাল গোপন থাকে না। তাকে ধ্বংস করার জন্য আল্লাহ সত্য প্রকাশ করেন না। বরং সেই নারীকে জীবনভর কষ্ট পাওয়া থেকে রক্ষা করার জন্য এটি করেন।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে আশনা হাবিব ভাবনা বলেন, “বিশ্বাসঘাতকতা হয়তো গোপনে করা হয়। কিন্তু তার প্রকাশ হলো ঐশ্বরিক সুরক্ষা। আল্লাহ যখন পর্দা সরিয়ে দেন, তা শাস্তি নয় বরং এটা উদ্ধার। আমি এখন গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আলহামদুলিল্লাহ।”
তবে ভাবনা কেন এ ধরনের একটি পোস্ট নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন, তার পেছনের কারণ জানা যায়নি। কিন্তু তার ভাবনার সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন নেটিজেনরা।
ঢাকা/শান্ত