বলিউডের মোস্ট এলিজেবল ব্যাচেলর সালমান খান। তার ভাই আরবাজ খানও একজন অভিনেতা ও প্রযোজক। চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও খান পরিবারের পারিবারিক অনুষ্ঠানে ভাইয়ের সঙ্গে সালমানের দারুণ সম্পর্ক দর্শকদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ ভিন্ন বার্তা দিলেন ‘দাবাং’ সিনেমার পরিচালক অভিনব কাশ্যপ।

বলিউডের সুপারহিট সিনেমা ‘দাবাং’ ২০১০ সালে মুক্তি পায়। এ সিনেমায় সালমান-আরবাজ দুজনেই অভিনয় করেন। সিনেমাটির শুটিং সেটে দুই ভাইয়ের নানা ঘটনা শেয়ার করেছেন পরিচালক অভিনব কাশ্যপ।   

আরো পড়ুন:

সালমানকে অনেকেই ভয় পান: এলি

অরিজিতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব, ভুল স্বীকার করলেন সালমান

বলিউড থিকানাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনব কাশ্যপ বলেন, “একবার রাত ১টা ৩০ মিনিটের দিকে সালমান আমার ঘরে আসে। সে দেখল আরবাজের একটি চেজ সিকুয়েন্স আছে, আর সেটা পুরোপুরি কেটে দিলো। সালমান অনিরাপদ বোধ করেছিল। পর্দায় ও নিজেকে বেশি দেখাতে চেয়েছিল।”

আরবাজ-সালমান খানের ব্যক্তিগত সম্পর্ক বাইরে থেকে যেমনটা দেখা যায়, আসলে সম্পর্কটা মোটেও তেমন নয়। অভিনবর দাবি—“এই দুই ভাই একে-অপরকে ঘৃণা করে। কিন্তু কেন যে একসঙ্গে থাকে, তা বুঝি না।”

‘দাবাং’ সিনেমার শুটিং সেটে সালমান ও আরবাজের প্রচণ্ড ঝগড়া হয়েছিল। এ তথ্য উল্লেখ করে অভিনব কাশ্যপ বলেন, “একবার সালমান খান তার ভাই আরবাজের দিকে বাসনপত্র ছুড়ে মেরেছিল, আমি ভয়ে পেয়ে ছিলাম। আমি থামাতে গিয়েছিলাম। কিন্তু সালমান বলল, ‘তুমি এখানে নেই,’ আমাকে দূরে থাকতে বলল।”

আরবাজ খান ব্যক্তিগত জীবনে অভিনেত্রী মালাইকা আরোরার সঙ্গে ঘর বেঁধেছিলেন। যদিও এ সংসার ভেঙে গেছে। ‘দাবাং’ সিনেমা নির্মাণের সময়ে স্বামী-স্ত্রী ছিলেন তারা। এ সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় ‘মুন্নি বদনাম’ গানে পারফর্ম করে তাক লাগিয়ে দেন মালাইকা। 

‘মুন্নি বদনাম’ গানে মালাইকাকে কাস্ট করার বিষয় নিয়ে আরবাজের সঙ্গে পরিচালকের জটিলতা তৈরি হয়েছিল। অভিনব জানান, আইকনিক গান ‘মুন্নি বদনাম’-এ মালাইকা অরোরাকে নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানান আরবাজ। কারণ গানটি ‘অশ্লীল’ হবে বলে তার ভাবনা ছিল। কিন্তু পরিচালক নিজের সিদ্ধান্তে অটল ছিলেন।  

এ বিষয়ে অভিনব কাশ্যপ বলেন, “মালাইকা আগেও আইটেম নাম্বারে জনপ্রিয় ছিলেন, যেমন ছিলেন হেলেন।”

এখানেই শেষ নয়, সালমান খানের বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগও করেছেন পরিচালক অভিনব কাশ্যপ। তার ভাষায়, “সালমান ‘দাবাং’ সিনেমার এডিটরকে তার ফার্মহাউজে আটকে রেখেছিলেন এবং দুই দিন আমার কাছ থেকে তাকে দূরে রেখেছিলেন।”

অভিনব কাশ্যপের এসব অভিযোগ-মন্তব্য নিয়ে বলিপাড়ায় কানাকানি চলছে। এ নিয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি সালমান কিংবা আরবাজ। তবে বিগ বসের মঞ্চে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে সালমান খান বলেন, “এমন কিছু মানুষ আছে, যারা কাজ না থাকায় পডকাস্টে বসে মিথ্যা গল্প বানায়। সময় নষ্ট না করে কাজের দিকে মন দাও। কাজের চেয়ে ভালো কিছু নেই। জীবনে যা-ই ঘটুক না কেন, উঠো, গোসল করো, আর কাজে চলে যাও।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আরব জ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিশোধ নয়, সমাধানের পথে যাবে বিএনপি

দেশে সহনশীল ও ভয়মুক্ত রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। 

তিনি বলেন, বিএনপি আজ প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, আমরা সমাধানের পথে বিশ্বাসী। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী।

মানবাধিকার দিবসে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে ফেসবুক পোস্টে এসব কথা জানান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সেখানে তিনি লেখেন, “১৬টা বছর ধরে বাংলাদেশ যেন একটা কালো মেঘের নিচে চাপা পড়ে ছিল। কেউ সেই অন্ধকারকে খুব তীব্রভাবে টের পেয়েছে, কেউ চুপচাপ বয়ে বেড়িয়েছে। কিন্তু যাদের রাজনৈতিক অবস্থান তখনকার পতিত সরকারের বিপরীতে ছিল, তাদের জন্য এই অন্ধকার ছিল নিত্যদিনের বাস্তবতা। রাতের বেলা দরজায় কড়া নাড়া, মিথ্যা মামলা, নির্যাতন, ভয়কে সংস্কৃতি বানিয়ে ফেলা, আর অসংখ্য পরিবার অপেক্ষা করেছে সেই প্রিয়জনদের জন্য, যারা আর কোনোদিন ঘরে ফিরে আসেনি।” 

এই বোঝা বিএনপির চেয়ে বেশি আর কেউ বহন করেনি দাবি করে তিনি বলেন, “বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, হেফাজতে মৃত্যু, মিথ্যা মামলা- সব জায়গায় বিএনপির নেতা-কর্মীরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানেও সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরেছে বিএনপির ঘরেই। কিন্তু অত্যাচারের শিকার শুধু বিএনপি ছিল না; ছাত্র, সাংবাদিক, লেখক, পথচারী, সাধারণ মানুষ- সবাই সেই ভয়ংকর পরিবেশের ক্ষত বয়ে বেড়িয়েছে, নূন্যতম মানবাধিকার হিসেবে বিবেচিত মর্যাদা, নিরাপত্তা, মত প্রকাশের অধিকার এর মত মৌলিক সব বিষয়গুলো ছিল হুমকির মুখে।” 

এই বছরগুলোতে তাকে কথা বলার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছিল জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, “২০১৫ সাল থেকে আমার কথা বলার অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নেওয়া হয়। দেশের কোনো পত্রিকা, টিভি বা সোশ্যাল মিডিয়া যেন আমার কোনো বক্তব্য প্রকাশ না করা হয়, এমন নির্দেশনা জারি ছিল। তবুও এই চাপিয়ে দেয়া নীরবতার মধ্যেও আমি অধিকার, গণতন্ত্র আর মানুষের ন্যায্য দাবির পক্ষে লড়াই চালিয়ে গেছি, কারণ সত্যের স্পিরিটকে আদেশ দিয়ে থামানো যায় না।” 

“এই পুরো অন্ধকার সময়টায় দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ছিলেন আমাদের ধৈর্য ও প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় প্রতীক। মিথ্যা মামলা, কারাবাস, তাকে রাজনৈতিকভাবে নিঃশেষ করে দেওয়ার চেষ্টা- এসবই পুরো দেশের ওপর চাপিয়ে দেওয়া এক কর্তৃত্ববাদী শাসনের প্রতিফলন। তবুও তিনি তাঁর গণতান্ত্রিক আদর্শ থেকে কখনো সরে যাননি। তাঁর বিশ্বাস একটাই- অধিকার সবার; ভয় দেখিয়ে দেশকে এগোনো যায় না।”
তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবেও সেই দুঃসহ সময়ের সাক্ষী। আমার মা, যিনি দেশনেত্রী, নিজ হাতে সহ্য করেছেন তাঁর ছেলেকে জেলে নেওয়া, নির্যাতন করার মানসিক যন্ত্রণা। তাঁর আরেক ছেলেকে আমরা চিরতরে হারিয়েছি।”

“বাংলাদেশের হাজারো পরিবারের মতো আমাদের পরিবারও ছিল লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু ইতিহাসের একটা সত্য আছে- কষ্ট মানুষকে সবসময় তিক্ত করে না। কখনো কখনো কষ্ট মানুষকে আরও মহান করে তোলে। দেশনেত্রী, আমার মা- এটাই প্রমাণ করেছেন। তিনি শিখিয়েছেন- যে অন্যায় আমরা সহ্য করেছি, তা যেন আর কারও জীবনে না আসে। দেশকে বদলাতে হলে, ঘৃণার পথ নয়- ন্যায়, নৈতিকতা আর ক্ষমাশীলতার পথই ভবিষ্যত গড়ে”, বলেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, “আজ বাংলাদেশের প্রয়োজন রাজনীতির চেয়েও বড় কিছু- একটি ঐক্যবদ্ধ দেশ, যেখানে সবার জন্য মানবাধিকারের নিশ্চয়তা থাকবে, যেখানে কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে, বিরোধী মত যেখানে হুমকি না হয়ে বরং গণতন্ত্রের অংশ হবে। যেখানে ভিন্ন মতের কারণে কাউকে নিপীড়িত হতে হবে না বা গুম হয়ে যেতে হবে না।” 

বিএনপি প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি আজ প্রতিশোধের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করছে, আমরা সমাধানের পথে বিশ্বাসী। আমরা এই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে, কোনো বাংলাদেশিকে রাষ্ট্রের ভয়ে বাঁচতে হবে না, তা সে সরকারের সমর্থক হোক বা বিরোধী।” 

“১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়- মানবাধিকারই মানুষের দৈনন্দিন বেঁচে থাকার মৌলিক শর্ত। আমরা আবরার ফাহাদ, মুশতাক আহমেদ, ইলিয়াস আলী, সাজেদুল ইসলাম সুমন, সাগর-রুনি- আর অসংখ্য শহীদের গল্প মনে রাখি, যেন ভবিষ্যতে এমন নিপীড়ন আর দায়মুক্তি আর কখনো ফিরে না আসে।” 

তিনি বলেন, “বিএনপি মারাত্মক ক্ষতি সহ্য করেছে, কিন্তু ভেঙে যায়নি। বরং সত্য, ন্যায়, জবাবদিহি, পুনর্মিলন, আর আইনের শাসনে বিশ্বাস রেখে আরও দৃঢ় হয়েছে। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই- যেখানে প্রতিটি মানুষের কণ্ঠ, অধিকার ও জীবন মূল্যবান; যেখানে মানবাধিকার আমাদের ভবিষ্যতের ভিত্তি।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ