নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির পাঁচ টন চাল বিধি বর্হিভূতভাবে কালো বাজারে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে দুই ডিলারের বিরুদ্ধে। 

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকালে মাগুরা জেলার মোহাম্মদপুর থানার নোহাটা পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ চাল জব্দ করেছে বলে জানা গেছে।

লোহাগড়া উপজেলার নলদী ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির মিঠাপুর বাজারের ডিলার হিমায়েত হোসেন এবং
নালিয়া বাজারের ডিলার কামরুজ্জামানের নিকট থেকে মিলন হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী চাল ক্রয় করে তা নসিমনে করে মাগুরায় নিচ্ছিলেন। পথে মোহাম্মদপুরের সুজাপুর গ্রামের পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। এসময় এলাকার সাধারণ মানুষ নছিমনটি তল্লাশি করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির পাঁচ টন চাল দেখতে পায়। সেসময় তারা নোহাটা পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন দিলে পুলিশ এসে চালসহ ব্যবসায়ী মিলনকে ফাঁড়িতে নিয়ে যান।

আটক মিলন জানান, নলদী ইউপির মিঠাপুর বাজারের ডিলার হিমায়েত মোল্যা ও নালিয়া বাজারের ডিলার কামরুল ইসলাম গোডাউন থেকে গাড়িতে চাল লোড দিয়ে দেয়। মাগুরায় নিয়ে যাওয়ার পথে নোহাটা ইউপির পাঁচ রাস্তা এলাকায় পৌঁছালে এলাকার লোকজন চেক করে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল দেখে পুলিশকে খবর দিলে নোহাটা ফাঁড়ির পুলিশ এসে চাল আটক করে।

বিএনপির নলদী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও মিঠাপুর বাজারের ডিলার হিমায়েত হোসেনে বলেন, “১০ বছর আগে আওয়ামী লীগ কার্ড করে গেছে। সেই কার্ডে ধনী ও বিদেশিদের নাম আছে। তারা লোক দিয়ে চাল উত্তোলন করে কালো বাজারে বিক্রি করে। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে।” 

লোহাগড়ার অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা তাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, “চাল ও ব্যবসায়ী মিলনকে নোহাটা পুলিশ ফাঁড়ি আটক করেছে বলে জানতে পেরেছি। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

এ ব্যাপারে লোহাগড়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

আবু রিয়াদ শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকালে জানান, ঘটনার সাথে জড়িতদের কেউ ছাড় পাবে না। বিষয়টি তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ঢাকা/শরিফুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল হ গড় ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে কাবাডি খেলায় হাজারো দর্শক, ফিরে এলো হারানো ঐতিহ্য

 

গ্রামবাংলার মাঠে-মাঠে একসময় জমজমাটভাবে অনুষ্ঠিত হতো কাবাডি বা হাডুডু খেলা। সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক খেলাধুলার ভিড়ে হারিয়ে যেতে বসেছে বাংলাদেশের এই জাতীয় খেলা। তবে দীর্ঘদিন পর সেই হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঐতিহাসিক চেঙ্গাকান্দী গ্রামের তরুণরা। 

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে চেঙ্গাকান্দী বালুর মাঠে আয়োজিত হয় এক চমৎকার কাবাডি প্রতিযোগিতা। আশপাশের এলাকা থেকে হাজার হাজার দর্শক মাঠে ভিড় জমান। দর্শকদের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা যেন ফিরে এসেছে গ্রামবাংলার সেই সোনালি দিন।

খেলার আয়োজক শরীফ বলেন, হাডুডু আমাদের জাতীয় খেলা হলেও আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাই গ্রামের ঐতিহ্য ধরে রাখতে আমরা এই আয়োজন করেছি। এলাকাবাসীর সহায়তায় আজ তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

প্রতিযোগিতায় লাল দল ও নীল দল মুখোমুখি হয়। টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এই ম্যাচে দুই দলই সমানভাবে জয় ভাগাভাগি করে নেয়।

খেলা দেখতে আসা স্থানীয় দর্শক মো. সিদ্দিক বলেন, এখন সবাই ক্রিকেট আর ফুটবলে ব্যস্ত। কিন্তু কাবাডিই তো আমাদের শিকড়ের খেলা। আজ এত মানুষ দেখে মনে হলো পুরোনো সময় ফিরে এসেছে।

দর্শক তারা মিয়া বলেন, এই খেলা আমাদের গ্রামের মানুষকে একসাথে করে। আজকে ছেলেমেয়েরা, বৃদ্ধ সবাই মিলে মাঠে এসেছে এটাই তো আসল আনন্দ। এমন আয়োজন বারবার হলে গ্রামের সংস্কৃতি টিকে থাকবে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক ও বারদী ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক আব্দুল আলী বলেন, কাবাডি আমাদের জাতীয় খেলা হলেও আজ তা হারিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের আয়োজন নিয়মিত করা গেলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আগ্রহ বাড়বে এবং ঐতিহ্য টিকবে।”

কাবাডি খেলোয়াড় শুক্কুর আলী বলেন, “কাবাডিতে এখনো অনেক প্রতিভা আছে, কিন্তু সুযোগের অভাবে তারা উঠে আসতে পারে না। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন যদি উদ্যোগ নেয়, কাবাডি আবারও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসেবক জাকির সরকার এবং উদ্বোধক ছিলেন এডভোকেট সানাউল্লাহ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি বারাকাহ হাসপাতালের পরিচালক ড. আবদুল মালেক।

উল্লেখ্য, এশিয়া মহাদেশেই কাবাডির উৎপত্তি। স্বাধীনতার পর ১৯৭৩ সালে বাংলাদেশে কাবাডি ফেডারেশন গঠিত হয় এবং এটিকে জাতীয় খেলার স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ