বিখ্যাত আইরিশ লেখক অস্কার ওয়াইল্ডকে সম্মান জানাতে ১৩০ বছর পর তাঁর নামে নতুন করে একটি লাইব্রেরি কার্ড (পাঠক কার্ড) ইস্যু করেছে ব্রিটিশ লাইব্রেরি।

ঔপন্যাসিক, কবি ও নাট্যকার হিসেবে খ্যাত ওয়াইল্ডের ওপর ১৮৯৫ সালে লাইব্রেরির পাঠককক্ষে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। কারণ, তখন তাঁর বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। সে সময় এটি যুক্তরাজ্যে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হতো।

নতুন কার্ডটি তাঁর নাতি ও লেখক মার্লিন হল্যান্ডের হাতে তুলে দেওয়া হবে। মার্লিন হল্যান্ড বলেছেন, ‘এটি খুব ভালো উদ্যোগ। আমি নিশ্চিত যে তাঁর আত্মা শান্তি পাবে।’

ব্রিটিশ লাইব্রেরির দলিল অনুযায়ী, ১৮৯৫ সালের জুনে লাইব্রেরির নথিতে হাতে লেখা ছিল ‘মি.

ও. ওয়াইল্ডকে পাঠককক্ষ থেকে বহিষ্কার করা হলো।’ এ সিদ্ধান্ত সে বছরের ১৫ জুন ব্রিটিশ মিউজিয়ামের (তৎকালীন ব্রিটিশ লাইব্রেরি) ট্রাস্টি বোর্ডের সভার কার্যবিবরণীতে কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই লিপিবদ্ধ করা হয়েছিল।

তখন ওয়াইল্ড কারাগারে ছিলেন। ওই মামলায় তাঁকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ওয়াইল্ডকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় লর্ড কুইন্সবেরির বিরুদ্ধে করা তাঁর মানহানির মামলা হেরে যাওয়ার পর। কুইন্সবেরি তাঁকে সমকামী বলে অভিযুক্ত করেছিলেন। কারণ, তাঁর ছেলে লর্ড আলফ্রেড ডগলাসের সঙ্গে ওয়াইল্ডের বন্ধুত্ব ছিল।

তৎকালীন লাইব্রেরি নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে লাইব্রেরি কার্ড স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল করা হতো। নতুন কার্ডে মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখ রাখা হয়েছে অস্কার ওয়াইল্ডের মৃত্যুর দিন—৩০ নভেম্বর ১৯০০।

সূত্র: বিবিসি
গ্রন্থনা: রবিউল কমল

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

জবিতে নিখোঁজ ৩ ছাত্রদল নেতার সন্ধানে মানববন্ধন

২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নিখোঁজ তিন ছাত্রদল নেতার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ছাত্রদল। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচিতে শিক্ষক সমিতির নেতারাও সংহতি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জামান রানা ও আল-আমিনকে নিখোঁজের ১১ বছর পরও উদ্ধার করা যায়নি। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গুম-খুন, পেটোয়া বাহিনীর হামলা ও নির্যাতন ছিল নিয়মিত ঘটনা।”

আরো পড়ুন:

ভাইকে তো পাব না, অন্তত বিচার যদি পাই: বিশ্বজিতের ভাই

বিশ্বজিৎ হত্যার দৃশ্যচিত্র আজো দেশের মানুষকে কাঁদায়: অধ্যাপক রইছ

বক্তারা সব নিখোঁজ নাগরিকের সন্ধান নিশ্চিত করা এবং বিচার বিভাগের কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।

জবির ছাত্রদল সমর্থিত জাকসুর প্যানেলের জিএস প্রার্থী ও শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খাদিজাতুল কোবরা বলেন, “আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে বহু মানুষ গুম হয়েছে। স্বাধীন দেশে ভাইদের খুঁজতে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়, এটাই আমাদের বেদনা। আমরা এমন দেশ চাই যেখানে কেউ গুম হবে না এবং সবার ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।”

শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “ফ্যাসিস্ট আমলে বহু বিএনপি নেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। ছাত্রলীগের হাতে বহু শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আমাদের অনেকে ফিরে এলেও জবির তিন ভাইকে এখনো পাইনি। দীর্ঘ ১৭ বছর আমরা মৃত্যুকে উপেক্ষা করে আন্দোলন করছি। গুম-খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচার চাই।”

মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ্ উদ্দিন বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে গুম-খুন ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। জুলাই আন্দোলনের পরও অনেকের সন্ধান পাইনি। জবির তিন ছাত্রদল নেতা, আমার কাজিন ইলিয়াস আলীসহ বহু মানুষ এখনো নিখোঁজ। প্রতি ১০ ডিসেম্বর মানববন্ধন করি, পরদিন ভুলে যাই-এটাই দুঃখজনক।”

শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, “অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো জবিতে এখনো হয়নি। আমরা চাই, জবি থেকে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।”

ঢাকা/লিমন/জান্নাত

সম্পর্কিত নিবন্ধ