আধুনিক জ্ঞান–বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আগামী দিনের শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে বিএনপি কাজ করছে বলে জানিয়েছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ শনিবার বিকেলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফাবিষয়ক মেধা মূল্যায়ন পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে খন্দকার শামসুল আলম ফাউন্ডেশন। অনুষ্ঠানে তারেক রহমান ছাড়াও বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান।

অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ‘একটি রাষ্ট্রের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে তোমাদের জন্য একটা নিরাপদ রাষ্ট্র, নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়তেই কিন্তু বিএনপি ইতিমধ্যে জনগণের সামনে ৩১ দফা ঘোষণা করেছে। এরই অংশ হিসেবেই কিন্তু দেশের প্রচলিত শিক্ষা কারিকুলামকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে শিক্ষাবিদদের একটা বিশেষজ্ঞ টিম আমরা তৈরি করেছি। যারা ইতিমধ্যে অনেক কাজ এগিয়ে নিয়ে গেছেন।’

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘আমাদের দলের পক্ষ থেকে আগামী দিনের পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকে সেভাবে সাজিয়ে তুলতে চেষ্টা করছি। আধুনিক জ্ঞান–বিজ্ঞান আর উদ্ভাবনী প্রযুক্তির এই সময়ে নিজেকে অন্যের চেয়ে দক্ষ করে তোলার একাগ্রতার কোনো বিকল্প নেই। সে জন্যই মনে রাখতে হবে, মেধাবিকাশের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা, প্রচণ্ড পরিশ্রম আর ইচ্ছাশক্তি।’

পবিত্র কোরআনের আয়াত ও নেলসন ম্যান্ডেলার উদ্ধৃতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘বিশ্ব বর্তমানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের (এআই) যুগে কিন্তু প্রবেশ করছে। মেধাবীদের জন্য বিশ্বের দ্বার এখন উন্মুক্ত। জ্ঞান-বুদ্ধি-মেধা এবং যোগ্যতার প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা সর্বত্র। সুতরাং মাদ্রাসা কিংবা স্কুল যেখানেই তোমরা পড়াশোনা করো না কেন, মনে রাখতে হবে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে সম্মানের সঙ্গে টিকে থাকতে হলে তোমাদের যথোপযুক্ত শিক্ষায় কিন্তু শিক্ষিত হতে হবে। জ্ঞান–বিজ্ঞানে পারদর্শী হতে হবে। ব্যবহারিক ও কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হতে হবে।’

‘বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে হবে না’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য যে প্রত্যাশা, সেটা হলো একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। আজকে যে সংস্কার নিয়ে কথা হচ্ছে, সেই সংস্কারের রূপরেখা প্রায় আড়াই বছর আগে বিএনপি দিয়েছিল। কাজেই বিএনপিকে সংস্কার শেখাতে হবে না। বিএনপি সংস্কারে বিশ্বাস করে।’

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘ভবিষ্যতে আমরা ইনশা আল্লাহ একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাকে আবার ফিরিয়ে আনব। তারেক রহমান লন্ডন থেকে বাংলাদেশের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তিনি ইনশা আল্লাহ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘২৫ বছর আগে বিএনপি সরকারে থাকাকালে আমি লক্ষ করেছিলাম, তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি কেবল ঘরে বসে রাজনীতি করেননি; তৃণমূল পর্যায়ে গিয়ে জনগণের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলেছিলেন। তিনি লন্ডনে থেকেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হচ্ছেন, তাঁদের কথা শুনছেন।’

জেলা বিএনপির সভাপতি মো.

শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম, পাকুন্দিয়া বিএনপির আহ্বায়ক জালাল উদ্দিনসহ বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক ষ ব যবস থ ত র ক রহম ন ব এনপ র স অন ষ ঠ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

চলচ্চিত্রকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপনে সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করতে হবে

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে কাজ করতে হবে। এর মাধ্যমে চলচ্চিত্র-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জীবনমান উন্নত হবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে।

মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএফডিসি) বিজনেস অটোমেশন সার্ভিস, সিনে-আর্কাইভ, সংস্কারকৃত ডিজিটাল সাউন্ড রেকর্ডিং স্টুডিও এবং সংস্কারকৃত ঝর্ণা স্পট উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর বিএফডিসির উন্নয়নে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। গত কয়েক মাসে এডিটিং, কালার গ্রেডিংসহ অন্যান্য কারিগরি কাজের জন্য ব্যবহৃত রুমগুলো সংস্কার করা হয়েছে। এই কাজের বরাদ্দ পাওয়া খুব কষ্টসাধ্য ছিল। তারপরও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের প্রচেষ্টায় কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে।”

মাহফুজ আলম বলেন, “বিএফডিসিতে সংশ্লিষ্ট সকলের কাজ করার সুযোগ থাকবে। বিদেশে থেকেও যদি কেউ কাজ করতে চান, তাহলে তারা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন।”

তিনি আশাপ্রকাশ করে বলেন, “বিএফডিসিতে কোন সিন্ডিকেট থাকবে না। সিনেমার স্ক্রিপ্টিং থেকে শুরু করে উৎপাদন ও পরিবেশন ব্যবস্থা একটি ইকোসিস্টেমের মধ্যে নিয়ে আসা হবে।”

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বলেন, “প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে কবিরপুরে ফিল্ম সিটি নির্মাণের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।” পরবর্তী সময়ে যারা দায়িত্বে আসবেন, তারা এই কার্যক্রম চলমান রাখবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন।

দর্শকরা এখনও ভালো কনটেন্ট (আধেয়) দেখতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, “তাদের চাহিদা ও প্রত্যাশা অনুযায়ী কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। দেশীয় ও আঞ্চলিক ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর ভিত্তি করে ভালো মানের কনটেন্ট নির্মাণের জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।”

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন বিএফডিসির পরিচালক মামুনূর রশীদ, চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সভাপতি শাহীন সুমন, চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ ও প্রযোজক শিরিন সুলতানা।

অনুষ্ঠানের শেষে দেশের খ্যাতিমান শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।

তার আগে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) বিজনেস অটোমেশন সার্ভিস, সিনে-আর্কাইভ, সংস্কারকৃত ডিজিটাল সাউন্ড রেকর্ডিং স্টুডিও এবং সংস্কারকৃত ঝর্ণা স্পট উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ