শুক্রবার সকাল ১০টা। ঢাকার সদরঘাটের ১১ নম্বর পন্টুনের সামনে বেশ জটলা। সবার চোখ শতবর্ষী স্টিমার পি এস মাহসুদের দিকে। কারও চোখে পুরোনো স্মৃতি, কারও চোখে উচ্ছ্বাস। নদীকেন্দ্রিক ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক পি এস মাহসুদ তিন বছর পর আবার ঢাকার নদীপথে ফিরছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) জানিয়েছে, আগামী ১৫ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে চলাচল শুরু করবে এই ঐতিহাসিক জলযান। ঢাকার সদরঘাট থেকে প্রতি শুক্রবার সকালে ছেড়ে যাবে বরিশালের উদ্দেশে। পরদিন শনিবার আবার ফিরবে ঢাকায়। যাত্রাপথে পর্যটকেরা উপভোগ করবেন নদী আর দক্ষিণাঞ্চলের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।

পি এস মাহসুদ ১৯২২ সালে কলকাতার গার্ডেন রিচ ওয়ার্কশপে নির্মিত হয়। বেলজিয়ামের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ১৯৮৩ সালে নারায়ণগঞ্জের ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ লিমিটেডের মাধ্যমে স্টিমারটির স্টিম ইঞ্জিনকে ডিজেল ইঞ্জিনে রূপান্তর করা হয়। ১৯৯৫ সালে মেকানিক্যাল গিয়ার সিস্টেমে রূপান্তর করা হয়।

পি এস মাহসুদে জীবন রক্ষাকারী লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বয়া, ফায়ার এক্সটিংগুইসারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। পি এস মাহসুদ শতবর্ষ ধরে নৌপথে কোনো দুর্ঘটনা ছাড়া নিরাপদভাবে নিরবচ্ছিন্ন যাত্রী ও পর্যটনসেবা দিয়ে আসছে।

ঢাকা থেকে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে চলাচল করত স্টিমারটি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রীর অভাবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে স্টিমারটির চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর তিন বছর ধরে অচল থাকা প্যাডেল স্টিমারটিকে নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। ৭০ লাখ টাকা ব্যয়ে এর সংস্কারকাজ করা হয়েছে বলে বিআইডব্লিউটিসি জানিয়েছে।

গতকাল শুক্রবার স্টিমারটির ঢাকা থেকে মুন্সিগঞ্জে পরীক্ষামূলক যাত্রা শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘পি এস মাহসুদ কেবল একটি নৌযান নয়, এটি বাংলাদেশের নদীজ সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের জীবন্ত প্রতীক। আমরা চাই, নতুন প্রজন্ম কাছ থেকে দেখুক, একসময় নদীপথই ছিল যোগাযোগ ও সংস্কৃতির প্রাণ।’

উপদেষ্টা জানান, পি এস মাহসুদের পাশাপাশি আরও তিনটি পুরোনো স্টিমার—পি এস অস্ট্রিচ, পি এস লেপচা ও পি এস টার্ন সংস্কারের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নদীপথের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও নদীভিত্তিক পর্যটনের সম্ভাবনা বিস্তৃত করার লক্ষ্যে এটা করা হবে।

শতবর্ষী স্টিমার পি এস মাহসুদ তিন বছর পর আবার নদীপথে যাত্রী পরিবহন শুরু করছে। গতকাল শুক্রবার সদরঘাটে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক রব র স শতবর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

জয়গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ 

নারায়ণগঞ্জের অন্যতম শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জয়গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এগারো সদস্যের ওই এডহক কমিটি ঘোষণা করা হয়। 

কমিটিতে শিক্ষক এস এম হাবিবুর রহমানকে আহবায়ক ও এড. শাহনেওয়াজ সিদ্দিক সুজনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে। কমিটিতে যুগ্ম আহবায়ক হিসেবে সাংবাদিক মোহাম্মদ নেয়ামত উল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব পদে সাব্বির আল ফাহাদের নাম ঘোষণা করা হয়। 

কমিটিতে সদস্য হিসেবে রয়েছেন- এড. কাজী রুবাইয়াত হাসান সায়েম, রাজীব হোসেন রাজু, এমএন সাঈদ বিপুল, পারভেজ আসিফ উৎস, তারেক উল্লাহ সজল, শিক্ষক প্রতিনিধি এম এ করিম ও শিক্ষক প্রতিনিধি আবুল কালাম। 

সাবেক শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি আলোচনা সাপেক্ষে কমিটি গঠনে সম্মতি দিয়েছেন। 

কমিটির আহবায়ক এসএম হাবিবুর রহমান জানান, স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীদের এ বৃহৎ প্লাটফর্মে সবাইকে স্বাগত। শতবর্ষে এ স্কুল থেকে হাজার হাজার ছাত্র শিক্ষাগ্রহণ করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। এখন আমাদের উচিত স্কুলের জন্য কিছু করা। 

তিনি আরও জানান, আগামী দিনে জয়গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাইন এসোসিয়েশন প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন তৈরি করে শক্তিশালী ভীত রচনা করবে।  যা শিক্ষার মান উন্নয়ন ও ভাবমূর্তি উজ্জ্বলে কাজ করবে। 

সদস্য সচিব এড. শাহনেওয়াজ সিদ্দিক সুজন বলেন, এসোসিয়েশনে সদস্য হিসেবে সাবেক শিক্ষার্থীদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আহবান জানাচ্ছি। এজন্য ০১৮১৯৮৯৭২১২ ও ০১৮১৮০৭৬৩২০ অথবা ০১৭১২৫৮২৬৩৭ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারেন।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে ফের চালু হচ্ছে শতবর্ষী প্যাডেল স্টিমার
  • জয়গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের আত্মপ্রকাশ 
  • উপন্যাস ‘মোকাম সদরঘাট’ নিয়ে বুকটক