সুইমিংপুলে ডুবে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু নিয়ে যা জানা গেল
Published: 26th, October 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) সাঁতারে নেমে সুইমিংপুলের পানিতে ডুবে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী সায়মা হোসেন মারা গেছেন। তবে তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে চিকিৎসক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীর চর্চা বিভাগ।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
‘ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম ডিগ্রির জন্য, সে ফিরেছে মৃত্যু নিয়ে’
দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর স্মরণে জাবিতে সড়কের নামকরণ
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মাহবুবুর রহমান ও রামেকের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা.
তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম টুকটাকি বলেন, “সাঁতার প্রতিযোগিতা অংশ নেওয়ার জন্য অনুশীলন করেছিলেন সায়মা। দুই রাউন্ড সাঁতরানোর পর হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক করেন তিনি। পরে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলে নিয়ে গেলে সেখান থেকে রামেকে পাঠানো হয়। রামেকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এমন মৃত্যু কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।”
তবে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তা মারুফা সিদ্দিকা লিপি বলেন, “ওই শিক্ষার্থীকে যখন আনা হয়, আমরা তার পালস, বিপি কিছুই পাইনি। এখানে আসার আগেই সে মারা গিয়েছিল, আমাদের কিছু করার ছিল না। আমাদের এখানে সে ১০ মিনিটের মত ছিল। তারপরও আমরা অক্সিজেন দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠিয়ে দেই।”
রামেকের চিকিৎসক ডা. সংকর কে বিশ্বাস মুখপাত্র বলেন, “সায়মা নামে একজন শিক্ষার্থীকে আনা হয়েছিল। যখন আনা হয়, তাকে দেখে এখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।”
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে মৃত্যুর কারণ বলা মুশকিল আসলে। এর জন্য ময়নাতদন্ত করতে হবে। আমরা মরদেহটি ময়নাতদন্ত বা আইনি প্রক্রিয়ার জন্য মর্গে প্রেরণ করেছি। পরবর্তীতে তার পরিবারের অনুমতিতে বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত করলে এ ব্যাপারে পরিষ্কার বলা যাবে। তার আগে কিছু বলা সম্ভব না।”
হার্ট অ্যাটাকের বিষয়ে তিনি বলেন, “প্রত্যেকটা মানুষ যখন পানিতে ডুবে যায়, তখন হার্ট অ্যাটাক ও ফুসফুস জটিলতার মাধ্যমে মৃত্যুবরণ করে। তার মৃত্যুর প্রাথমিক কারণ হিসেবে পানিতে ডুবে যাওয়া। আর যদি সে সাঁতারু হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে অন্য কোনো কারণে হার্ট অ্যাটাক বা আগে কোনো অসুস্থতার কারণে ডুবে যেতে পারে।”
“এ বিষয়গুলো আসলে এখন বলা মুশকিল। যেহেতু মারা গেছেন, এখন প্রকৃত কারণ উদঘাটন করতে গেলে আমাদের ময়নাতদন্ত করতে হবে,” যোগ করেন মুখপাত্র।
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ময়ন তদন ত ময়ন তদন ত ন তদন ত চ ক ৎসক র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি নাগরিক কোয়ালিশনের
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত সবাইকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক কাঠামো সংস্কারে নাগরিক উদ্যোগ নাগরিক কোয়ালিশন।
আজ শনিবার সংগঠনটি এক বিবৃতিতে এই দাবি জানায়।
ওসমান হাদির ওপর দুর্বৃত্তের গুলির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ জানিয়ে বিবৃতিতে নাগরিক কোয়ালিশন বলেছে, এ ঘটনা পরিকল্পিত এবং ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে অর্জিত নতুন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠন প্রক্রিয়ার ওপর সরাসরি আঘাত। ওসমান হাদির ওপর আক্রমণ বাংলাদেশের নাগরিক জীবনে ও রাজনীতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত ভয়ংকর ঘটনা। রাজনৈতিক ও সামাজিক পর্যায়ে প্রভাবশালী শীর্ষ নেতাদের ওপর এ ধরনের ‘অ্যাসাসিনেশন’ প্রচেষ্টা রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে যেমন ব্যাহত করে, একই ভাবে দেশের সার্বিক নিরাপত্তাব্যবস্থা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নাগরিক কোয়ালিশন মনে করে, এই আক্রমণ চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে ওসমান হাদির মতো আরও অনেক সামনের সারির তরুণ-তরুণী জুলাই যোদ্ধাদের জীবন কী পরিমাণ ঝুঁকিতে আছে! রাষ্ট্র জুলাই যোদ্ধাদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছে বলে সংগঠনটি মনে করে না।
এই পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনটি সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছে, প্রাতিষ্ঠানিক ও আইনি কাঠামো তৈরি করে জুলাই আন্দোলনের নেতাদের বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করতে রাষ্ট্র জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত এক বছরে শতাধিক রাজনৈতিক কর্মী হত্যার ঘটনা ঘটলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অধিকাংশ ক্ষেত্রে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। এতে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন উঠেছে।
নাগরিক কোয়ালিশন আরও বলেছে, প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের আইনি ও প্রশাসনিক সংস্কারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই পরিস্থিতিতে আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের জাতীয় নির্বাচন কতটা শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ হবে, তা নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। নাগরিক সমাজ সরকারকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রত্যেক নাগরিককে নিরাপদে ভোট প্রদানের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ওসমান হাদির দ্রুত আরোগ্য কামনা করে বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে চিকিৎসাধীন ওসমান হাদির জন্য সর্বোচ্চ পর্যায়ের চিকিৎসা সহায়তার যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, তা নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে এ রকম মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে জন্য সরকারসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে বিবৃতিতে।