এবারের নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে একটা দিক থেকে বাংলাদেশ ছিল সবচেয়ে সৌভাগ্যবান। টুর্নামেন্টে তারাই ছিল একমাত্র দল, যাদের কোনো ম্যাচ বৃষ্টির কবলে পড়েনি।

কিন্তু আজ নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃষ্টি থেকে রেহাই পায়নি বাংলাদেশও। তবে ম্যাচের ফল ও টুর্নামেন্টে নিজেদের অবস্থান বিবেচনায় আকাশের এই আর্তনাদকেই সৌভাগ্যের বাহক ভেবে নিতে পারে নিগার সুলতানার দল।

নাবি মুম্বাইয়ে বৃষ্টির বাগড়ায় স্বাগতিক ভারতের বিপক্ষে নিশ্চিত পরাজয় দেখতে থাকা ম্যাচটায় যে হার এড়িয়েছে বাংলাদেশ দল!

শুধু কি তাই? ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার সুবাদে পাওয়া ১ পয়েন্ট নিগার–মারুফা–নাহিদাদের ‘লজ্জার’ হাত থেকেও বাঁচিয়েছে।

এই ম্যাচ হারলে আট দলের বিশ্বকাপে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থাকত বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে পাওয়া জয়ে ২ পয়েন্ট আর আজ ভারতের বিপক্ষে সৌভাগ্যে পাওয়া ১ পয়েন্ট তাদের সাতে তুলে এনেছে।

বাংলাদেশ–পাকিস্তান দুই দলেরই পয়েন্ট সমান ৩ করে। কিন্তু একটি ম্যাচ জেতায় ও নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় নিগারের দল পাকিস্তানের চেয়ে এক ধাপ ওপরে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করল। ২০২২ সালে নিজেদের অভিষেক ওয়ানডে বিশ্বকাপেও পয়েন্ট তালিকার সাতে ছিল বাংলাদেশ নারী দল।    

আজ কয়েক দফা বৃষ্টিতে ম্যাচ প্রথমে ৪৩, পরে ২৭ ওভারে নেমে আসে। তবে ম্যাচের দৈর্ঘ্য যা–ই হোক, ব্যাটিং–ব্যর্থতার ‘ধারাবাহিকতা’ ঠিকই ধরে রাখে বাংলাদেশ। আসরের প্রথম পর্ব থেকে আগেই ছিটকে পড়া নিশ্চিত হওয়া দলটা আজ টেনেটুনে ২৭ ওভার খেললেও ৯ উইকেটে ১১৯ রানের বেশি করতে পারেনি।

সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন শারমিন আক্তার, সোবহানা মোস্তারি করেন ২৬। প্রায় টি–টোয়েন্টিতে পরিণত হওয়া ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংসের একমাত্র ছক্কা আসে রিতু মনির ব্যাট থেকে। ভারতের বাঁহাতি স্পিনার রাধা যাদব নেন ৩ উইকেট।

ডাকওয়ার্থ–লুইস–স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে ভারতের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১২৬। দুই ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও আমানজোত কৌর উড়ন্ত শুরু এনে দেওয়ার পর দলকে অনায়াস জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ৮.

৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তোলার পর আবার মুষলধারে বৃষ্টি নামলে ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর

বাংলাদেশ: ২৭ ওভারে ১১৯/৯
(শারমিন ৩৬, মোস্তারি ২৬, রুবাইয়া ১৩, রিতু ১১; রাধা ৩/৩০, চরণি ২/২৩, আমানজোত ১/১৮, রেনুকা ১/২৩, দীপ্তি ১/২৪)।

ভারত: ৮.৪ ওভারে ৫৭/০
(মান্ধানা ৩৪*, আমানজোত ১৫*; রিতু ০/৫, রাবেয়া ০/৭)।

ফল: ম্যাচ পরিত্যক্ত।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পর্কোন্নয়নের ইঙ্গিত দিয়ে আবারও ভারত-চীন সরাসরি ফ্লাইট চালু

পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর রোববার থেকে ভারত ও চীনের মধ্যে আবারও সরাসরি বিমান চলাচল শুরু হয়েছে। এটি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে একটি প্রতীকী পদক্ষেপ। দুই দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এ পদক্ষেপ জরুরি।

 ভারতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক উড়োজাহাজ সংস্থা ইন্ডিগো স্থানীয় সময় রাত ১০টায় কলকাতা থেকে গুয়াংঝুতে প্রথম দৈনিক ফ্লাইটটি পরিচালনা করে। ভারত ও হংকংয়ের মধ্যে নিয়মিত ফ্লাইট চলছে। আর রাজধানী নয়াদিল্লি থেকে সাংহাই ও গুয়াংঝুর অতিরিক্ত ফ্লাইট নভেম্বর থেকে চালু হবে।

আঞ্চলিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে বিশ্বের দুই জনবহুল দেশ ভারত ও চীন একে অপরের কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০২০ সালে দুই দেশের সেনাসদস্যদের মধ্যে প্রাণঘাতী সীমান্ত সংঘাতকে কেন্দ্র করে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তবে সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করে।

ভারত সরকার বলেছে, নতুন করে ফ্লাইট চলাচল শুরু হওয়ার বিষয়টি দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ৫০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ, ভারত মস্কোর তেল কিনে রাশিয়াকে ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে সাহায্য করছে। এ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য সহযোগী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। আর এমন প্রেক্ষাপটে দিল্লি-বেইজিং সম্পর্ক উষ্ণ হতে শুরু করে।

আরও পড়ুনভারত-চীন কাছাকাছি এলে যুক্তরাষ্ট্র কি এশিয়ায় ধাক্কা খাবে২৪ আগস্ট ২০২৫

চীনের সঙ্গের ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বন্দর শহর কলকাতার সম্পর্কটা কয়েক শতাব্দী পুরোনো। অর্থাৎ ব্রিটিশ শাসনের সময় থেকেই দুই পক্ষের সম্পর্ক আছে। ওই সময় চীনা ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য করতে কলকাতায় যেতেন।

কলকাতার চায়না টাউন এলাকার সামাজিক সংগঠনের নেতা চেন খোই কুই বলেন, ‘আমাদের মতো যেসব মানুষের চীনে আত্মীয়স্বজন আছে, তাদের জন্য এটা দারুণ খবর। আকাশপথের এ যোগাযোগ দুই দেশের বাণিজ্য, পর্যটন ও ব্যবসায়িক ভ্রমণকে আরও এগিয়ে নেবে।’

আরও পড়ুনভারত কি চীনের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পথে হাঁটছে১০ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ