৩৬ বার অস্ত্রোপচার, ৮ বার স্ক্রিন গ্রাফটিং এর ধকল সয়ে ৯৭ দিন পর বাড়ি ফিরল নাভিদ
Published: 27th, October 2025 GMT
মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র নাভিদ নাওয়াজ দীপ্ত ৯৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট থেকে বাড়ি ফিরেছে। আজ সোমবার তাঁকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এ সময়ে তার শরীরে ৩৬বার অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। স্কিন গ্রাফটিং (শরীরের একটি অংশ থেকে ত্বক কেটে নিয়ে অন্য ক্ষতিগ্রস্ত অংশে প্রতিস্থাপন) করা হয়েছে ৮ বার। তার শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
আজ দুপুরে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইনস্টিটিউটের যুগ্ম-পরিচালক ডা.
গত ২১ জুলাই উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ক্যাম্পাসের হায়দার আলী ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানের পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলামসহ অন্তত ৩৪ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ২৭ জনই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে বার্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, ২১ জুলাই মাইলস্টোন স্কুলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বার্ন ইনস্টিটিউটে ৫৭ জন ভর্তি হয়েছিল। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। এখন পাঁচজন ভর্তি আছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তাদেরও ছাড়পত্র দেওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
নাভিদের বিষয়ে বলতে গিয়ে মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, তাঁর বয়স ১২ বছর। সে মাইলস্টোন স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। ভর্তি হওয়ার সময় তার শরীরের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ ছিল। পুড়ে যাওয়ার ধরন ছিল মিশ্র, তবে বেশির ভাগ জায়গায় ছিল গভীর পোড়া। দুই হাত, পিঠ ও শরীরের কিছু অংশ এবং শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার শ্বাসযন্ত্রে গুরুতর সমস্যা তৈরি হয়েছিল। ফুসফুসে পানি জমে গিয়েছিল।
মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন বলেন, ‘তিন দফায় আমরা ভেবেছি নাবিদ হয়তো বাঁচবে না। এমন সময় তার বাবা-মাকে মানসিকভাবে প্রস্তুতও করতে হয়েছিল। কিন্তু আল্লাহর রহমতে এবং আমাদের চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আজ সে আমাদের সামনে হাঁটছে। নাবিদের ‘আমি বাঁচতে চাই’—এই ইচ্ছেটাই তাকে টেনে তুলেছে। আমরা দেখেছি, যেসব রোগীর ভেতরে বাঁচার মানসিক শক্তি বেশি, তারা দ্রুত সেরে ওঠে। নাবিদ তার জীবনীশক্তি দিয়ে সেটার প্রমাণ দিয়েছে।’
আরও পড়ুনমাইলস্টোনে বিমান বিধ্বস্ত: ডিএনএ পরীক্ষায় ৫ জনের পরিচয় শনাক্ত২৪ জুলাই ২০২৫নাসির উদ্দীন আরও উল্লেখ করেন, নাবিদের চিকিৎসা চলাকালে একাধিকবার বিদেশে নেওয়ার দাবি উঠেছিল। দেশের চিকিৎসকদের ওপর নাবিদের পরিবার আস্থা রেখেছে। সেই সিদ্ধান্তই সফল হয়েছে। নাবিদের বাবা মিজানুর রহমান বলেন, ‘এখান থেকে একটা জিনিস শিখে গেলাম, মানুষের পাশে কখন থাকতে হয়। আমি, আমার ছেলে এবং আমার পরিবার- এটি এখান থেকে নিয়ে গেলাম। পরবর্তীতে যত দিনই বেঁচে থাকব তত দিন মানুষের পাশে থাকব।’ তিনি দেশের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ইলস ট ন স ক ল ন স র উদ দ ন ন বল ন হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ দাবিতে অনশনে শিক্ষার্থী
বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন কলেজ ছাত্র সংসদ (বাকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে অনশন শুরু করেছেন এক শিক্ষার্থী। গত দুইদিন ধরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে তিনি এ কর্মসূচি পালন করছেন।
তিনি হলেন, কলেজে ইতিহাস বিভাগের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ফেরদৌস রুমি।
আরো পড়ুন:
বরিশালে ডেঙ্গুতে দুইজনের মৃত্যু
বরিশালে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুর্গাপূজা
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে ফেরদৌস রুমি বলেন, “৩২ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখর বিএম কলেজ। ছাত্র সংসদ নির্বাচন ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু ২৪ বছর ধরে কলেজটিতে নির্বাচন হচ্ছে না। ছাত্র সংসদ না থাকায় শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে ভূমিকা রাখতে পারছে না বাকসু।”
তিনি বলেন, “নির্বাচনের দাবিতে ১ মাসের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো কর্ণপাত করছে না। তাই বাধ্য হয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেছি। নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না করা পর্যন্ত এ অনশন চলবে।”
এ ব্যাপারে সরকারি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. শেখ মো. তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। ইতোমধ্যে শিক্ষকদের নিয়ে একটি প্রাথমিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখন ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকসু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
গত ২৩ অক্টোবর বাকসু নির্বাচনের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনের দুইটি ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, বিএম কলেজের ছাত্র সংসদ শুধু নেতৃত্ব নয়, এটি ছিল শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের অন্যতম মাধ্যম। অথচ দীর্ঘ ২ যুগ ধরে প্রশাসন নির্বাচন দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী