ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।

শুভেচ্ছাবার্তায় অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করল। ঐতিহাসিক গণ–অভ্যুত্থানের পর দেশ এখন যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে—এই নির্বাচন ও গণভোট সেই পথরেখাকে দৃঢ় করবে, গণমানুষের মতকে প্রাধান্য দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি আরও সুসংহত করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের সঙ্গে। নির্বাচন ও গণভোটকে উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।’

দেশের রাজনৈতিক দলগুলো, প্রার্থী, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং সর্বোপরি দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মুহাম্মদ ইউনূস আরও বলেন, ‘এই নির্বাচন ও গণভোটকে একটি জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক আচরণ আমাদের সামনের দিনগুলোকে আরও স্থিতিশীল করবে।’

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ নতুন ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। আপনাদের সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণে সফল হব—এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হবে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে গণভোটও হবে একই দিন। ওই দিন সকাল সাড়ে সাতটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ১১ জানুয়ারি এবং আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২০ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনী প্রচার শুরু হবে ২২ জানুয়ারি, প্রচারণা শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে সাতটায়। ১২ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে ৩০০ সংসদীয় আসনে ভোট গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুনজাতীয় নির্বাচন ১২ ফেব্রুয়ারি১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনমনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর, প্রচার শুরু ২২ জানুয়ারি৪১ মিনিট আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ রহণ গণভ ট

এছাড়াও পড়ুন:

নির্বাচনের তফসিলে ভোটের তারিখ ছাড়াও যা যা থাকে

নির্বাচনকে ঘিরে দেশের মানুষের কৌতূহল ঘটতে যাচ্ছে তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে। তবে এবার জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে গণভোট একই দিনে হওয়ার কথা, যে কারণে আবহ কিছুটা আলাদা।  

আজ বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) তফসিল ঘোষণা করবে; এই তফসিলের মাধ্যমে ছাড়বে ভোটের ট্রেন। আর সেই ট্রেনের গন্তব্য অর্থাৎ নির্বাচনে ভোটগ্রহণের তারিখেই থাকবে সবার দৃষ্টি।

আরো পড়ুন:

‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে কমিশন সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেবে’

ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগে জনপ্রশাসনকে চিঠি পাঠালো ইসি

যতদূর জানা গেছে, ইসি ভোটগ্রহণের যে তারিখটি ঘোষণা করবে, ওই দিন সকাল ৭টা ৩০ মিনিট থেকে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ভোট দেওয়ার সুবিধা থাকার কথা। 

এবার যেহেতু দুটি ভোট হবে, ফলে দুটি পৃথক রঙের ব্যালট থাকবে। ইসি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্যালট হওয়ার কথা সাদা-কালো। তবে গণভোটের ব্যালটের রং হওয়ার কথা গোলাপি।

দেশের ইতিহাসে এই প্রথমবার একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট হতে যাচ্ছে।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন সন্ধ্যা ৬টায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তফসিলও ঘোষণা করবেন। এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকালে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বিটিভি এবং বাংলাদেশ বেতারে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করা হয়।

তফসিলের মধ্যে কী কী থাকে
তফসিলে মূলত নির্বাচন আয়োজনের শুরু থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথগ্রহণ পর্যন্ত সময়সূচির বিস্তারিত বর্ণনা থাকে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “খুব সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে এটি নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখের আইনি ঘোষণা।”

তফসিলে থাকে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় থেকে প্রার্থীরা কবে থেকে মনোনয়নপত্র কিনতে ও জমা দিতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বাছাই করতে কত দিন সময় লাগবে।

বাছাইয়ে বাতিল হলে প্রার্থীর আপিল করার সময়সীমা।

প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর তালিকা প্রকাশের তারিখ।

নির্বাচনি প্রচার কখন থেকে শুরু হবে এবং কতদিন চলবে।

ভোটের তারিখ ও সময়, ভোট গণনার প্রক্রিয়া ও স্থান।

নির্বাচনী প্রতীক ঘোষণা ও প্রচারের সূচি।

তফসিলের সিদ্ধান্ত কীভাবে নেওয়া হয়
সংবিধানে কিছু বিষয় নিশ্চিতভাবে বলা থাকে। তাই সেগুলোতে আলাদা সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রয়োজন হয় না। উদাহরণস্বরূপ, সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। তবে এবারের নির্বাচন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ২০২৪ সালের ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার সাংবিধানিক ক্ষমতার বলে সংসদ ভেঙে দেন এবং এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেন। তাই এবার ৯০ দিনের বাধ্যবাধকতা নেই; কমিশন দুই মাসের মধ্যে তফসিল ঘোষণা করছে।

ঢাকা/এএএম/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি
  • মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর, প্রচার শুরু ২২ জানুয়ারি
  • এবারের নির্বাচনে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না: সিইসি
  • মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা ১২ থেকে ২৯ ডিসেম্বর
  • নির্বাচনের তফসিলে ভোটের তারিখ ছাড়াও যা যা থাকে
  • জবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৪ ডিসেম্বর
  • জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন ২৪ ডিসেম্বর
  • সকালে স্থগিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন, রাতে পুনঃ তফসিল