লালমনিরহাটে সারের দাবিতে কৃষকদের মহাসড়ক অবরোধ
Published: 11th, December 2025 GMT
লালমনিরহাটে সারের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেড় ঘণ্টাব্যাপী কালীগঞ্জ উপজেলার লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী জাতীয় মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন তাঁরা।
স্থানীয় লোকজন জানান, লালমনিরহাটে ভুট্টার চাষের শুরুতেই সারসংকটের খবরে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী ইউনিয়নের বিসিআইসির (বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন) পরিবেশক ‘মেসার্স সাইফুল ইসলাম সার ঘর’ থেকে সার বিক্রি করার কথা। কয়েক দিন ধরে কৃষকেরা সার পাচ্ছিলেন না। বিক্রয়কেন্দ্র থেকে জানানো হয়েছিল, আজ সকালে ভোটমারী ইউনিয়নের চাষিদের কাছে সার বিক্রি করা হবে। সে অনুযায়ী আজ সকালে উপজেলার কৃষকেরা সেখানে এসে ভিড় জমাতে থাকেন। তবে কয়েকজন কৃষককে তাঁদের চাহিদামতো সার না দিয়ে হঠাৎ বিক্রয়কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সার না পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত কৃষকেরা লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কের ভুল্লারহাট বাজার এলাকায় বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।
কৃষকদের অভিযোগ, সার ডিলারদের কাছ থেকে চাহিদামতো সার না পেয়ে কৃষকদের যেতে হচ্ছে খুচরা দোকানে। সেখানে সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার কিনতে হচ্ছে তাঁদের। একশ্রেণির সার ডিলাররা অধিক মুনাফার জন্য বাইরে বেশি দামে সার বিক্রি করছেন বলে কৃষকদের অভিযোগ।
এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমা আক্তার ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তুষার কান্তি। কালীগঞ্জ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সার সরবরাহ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে মহাসড়ক ছেড়ে চলে যান কৃষকেরা।
ইউএনও শামীমা আক্তার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আজ সার ডিলারের গোডাউনে সার আসে। নিয়ম অনুযায়ী কৃষি কর্মকর্তার উপস্থিতি ও স্বাক্ষরে সার মজুতসংক্রান্ত রেজিস্ট্রার রক্ষণাবেক্ষণ করতে হয়। ভুল্লারহাটে সেটা করা হয়নি। আমরা সবকিছু খতিয়ে দেখে কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট সার ডিলারের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এআই দিয়ে করা জালিয়াতি রোধে পৃথক আইন করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
দেশে কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা (এআই) আসার পর এটি ব্যবহার করে জালিয়াতি অনেক বেড়েছে বলে মনে করছে অন্তর্বর্তী সরকার। ভিসা নিয়েও জালিয়াতি হচ্ছে। এর ফলে অনেক দেশে বাংলাদেশের নাগরিকেরা হেনস্তার স্বীকার হচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে এআই ব্যবহার করে করা জালিয়াতি রোধে জরুরি ভিত্তিতে পৃথক আইন (অধ্যাদেশ) করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এ বিষয়ে আলাদা আইন করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা দেন।
পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
প্রেস সচিব বলেন, বাংলাদেশে এআই আসার পর জালিয়াতি বেড়ে গেছে অনেক। এত বিস্তৃতি যে এটিকে জালিয়াতির সমুদ্র বলা যায়। এর ফলে দেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। জালিয়াত চক্র অনেক মানুষকে ঠকাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে, তারা ভিসাও জালিয়াতি করছে। এর ফলে অনেক দেশে বাংলাদেশের নাগরিকেরা হেনস্তার স্বীকার হচ্ছেন। তাঁদের ভিসা প্রক্রিয়ায় সমস্যা হচ্ছে। এই জালিয়াতি কীভাবে রোধ করা যায়, সে বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা আলাদা আইন করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছেন।
প্রেস সচিব বলেন, আইনটি খুব জরুরি ভিত্তিতে করা হবে। যাঁরা এই জালিয়াতি করছেন, তাঁদের বিষয়ে সুস্পষ্ট শাস্তিসহ এটি রোধে যত ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া যায়, সে রকম ব্যবস্থা করা হবে।
বৈঠকে বাণিজ্যিক আদালত অধ্যাদেশ, রেজিস্ট্রেশন (সংশোধন) অধ্যাদেশ এবং আইনগত সহায়তা প্রদান (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ক্যারিবীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র গ্রেনাডাকে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয় বৈঠকে।
বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করা দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার জন্য ধন্যবাদ প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে ধন্যবাদ প্রস্তাব পড়ে শোনান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ দুজনের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয়।