বিএনপি-এনসিপি নিয়ে একতরফা নির্বাচন হলে কেউ ভোট দিতে যাবে না: কাদ
Published: 11th, December 2025 GMT
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, বাংলাদেশের সব দল নির্বাচনে এলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও অংশ নেবে। কিন্তু, যদি বিএনপি ও এনসিপিকে নিয়ে একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে কেউ ভোট দিতে যাবে না।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা হানাদারমুক্ত দিবসে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল
‘নির্বাচন সহজ হবে না, পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামতে হবে’
আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন বঙ্গবন্ধুকে লালন করব। যতদিন বেঁচে আছি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’র আদর্শই ধারণ করে চলব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। জিয়াউর রহমানও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু, আমরা ভুল করে জামায়াত-শিবিরকে সুযোগ দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু ক্ষমা না করলে তারা টিকতেই পারত না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে নেই, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ নেই, বঙ্গবীরও নেই। শেখ হাসিনাকে আমি মায়ের মতো দেখি। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়। আর ড.
এই খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সরকার যদি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, তখন জনগণ চাইলে দলের বাইরে থেকেও প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবব। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, এই নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে হলে আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার যে ভাটি খেয়েছে, আপনাদেরও সেই ধাক্কা খেতে হতে পারে। ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় অনেকেই দেয় । যারা জনগণের পথ দেখাবেন, তারা কোথায়? জনগণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭১ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আজ জুলাই যোদ্ধারা কথা বলতে পারেন। দ্বিমতের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, এমন পরিবেশ ফেরাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন বাঙ্গাল, ফজলুল হক বীর প্রতীক, কুড়ি সিদ্দিকীসহ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ এনস প
এছাড়াও পড়ুন:
আমরা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাই: হাসনাত
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেছেন, "আমরা অবশ্যই ক্ষমতায় যেতে চাই, তবে সেটি জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। কোনো আনহোলি নেক্সাসকে ম্যানেজ করে, কোনো নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ক্ষমতায় যেতে চাই না। জনগণ আমাদের ম্যান্ডেট দিলে, জনগণ যদি মনে করে আমরা যোগ্য, তাহলেই আমরা যেতে চাই।"
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২ এ ‘আবু সাঈদকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায়’ সাক্ষ্য দিতে এসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
‘আমি রাজমিস্ত্রির ছেলে, খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধিত্ব করতে এসেছি’
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে নির্বাচন নয়, হুঁশিয়ারি হাসনাতের
এ সময় তিনি বলেন, "কোনো মিডিয়াকে, বুরোক্রেসিকে বা মিলিটারিকে নিয়ন্ত্রণ করে নয়, এবং পাশের দেশ ভারতের কনসেন্ট নিয়ে আমরা কোনো ক্ষমতায় যেতে চাই না।"
ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে আসার প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "তিনি মূলত কোটা সংস্কার আন্দোলনের পটভূমি তুলে ধরছিলেন। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কীভাবে গণঅভ্যুত্থানে পরিণত হয়, সেটিই বর্ণনা করেছেন। কীভাবে মিডিয়ার সামনে তাদের বক্তব্য বিকৃত করা হয় এবং ‘নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যমের’ মাধ্যমে রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বক্তব্যের খণ্ডিতাংশ ও আংশিক প্রচার করে ‘আন্দোলন প্রত্যাহারের নাটক’ মঞ্চস্থ করেছিল, সে বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন।
হাসনাত বলেন, “১৪ জুলাই আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি এবং রাজাকারের বাচ্চা’ বলে সম্বোধন করার পর দেশজুড়ে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হন। এর প্রতিবাদে ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর ‘নির্মমভাবে নির্যাতন ও নিপীড়ন’ চালায়। ১৬ জুলাই সারা দেশে স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ মিছিলে রংপুরে আবু সাঈদকে ক্যাম্পাস কম্পাউন্ডে গুলি করে হত্যা করা হয় এবং চট্টগ্রামে ছাত্রদলের ওয়াসিমকেও হত্যা করা হয়। সেদিন সারা দেশে মোট ৬ জন শিক্ষার্থীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।”
তিনি বলেন, “১৭ জুলাই গায়েবানা জানাজা দিতে গেলে এজেন্সির চাপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগসাজশ এবং ইউজিসির নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়। গায়েবানা জানাজায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশ, বিজিবি ও অন্যান্য সদস্য সমন্বিতভাবে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।”
এরপর তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মিটিং করার জন্য চাপ দেওয়া হয়, যা তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, “ব্যর্থ হয়ে সেদিন রাতেই আমাকে ‘সেফ হাউজে’ (মৎস্যভবন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের মাঝামাঝি) নিয়ে গিয়ে সারারাত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় এবং চাপ প্রয়োগ করা হয়। সেদিন সকালে এসে এজেন্সির একজন আমাদের হুমকি দেয় যে আমরা যেন মিটিং করে সারা দেশের সমন্বয়কদের বলি যে আমরা আন্দোলন স্থগিত করি। তাহলে আমাদের লাইফ সেটেল করে দেবে, বিদেশেও আমাদের লাইফ সেটেল করে দেবে।”
এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, “আমরা সেখানে বলেছিলাম রক্ত মাড়িয়ে কোনো সংলাপ নয়। শহীদদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা কোনো সংলাপ করতে পারি না। এবং আমরা বলেছিলাম শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। কিন্তু কোনো গণমাধ্যম সেটি সেদিন প্রচার করেনি।”
ঢাকা/রায়হান/এসবি