১৭৫% ক্যাশ ডিভিডেন্ডে সন্তুষ্ট ওয়ালটনের বিনিয়োগকারীরা
Published: 28th, October 2025 GMT
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি, সুপারব্র্যান্ড ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির ১৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা অত্যন্ত সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বাণিজ্যিক প্রতিকূলতার মধ্যেও ১৭৫% ক্যাশ ডিভিডেন্ড দেওয়ায় সভায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ওয়ালটনের পরিচালনা পর্ষদকে ধন্যবাদ জানান সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। তারা দেশে উদ্ভাবনী ও সর্বাধুনিক প্রযুক্তির লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন কারখানা স্থাপনে ওয়ালটনের বিনিয়োগের ঘোষণায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
অচিরেই একশরও বেশি দেশে ওয়ালটনের বৈশ্বিক বাজার সম্প্রসারিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিনিয়োগকারীরা।
আরো পড়ুন:
ওয়ালটন ডিস্ট্রিবিউটর থেকে আর্থিক সহায়তা পেল ২ পরিবার
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ ও জেনারেল হাসপাতালে ব্যবহার হচ্ছে ওয়ালটনের স্মার্ট ইনভার্টার চিলার
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীসহ বিপুলসংখ্যক সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) রাজধানীর কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবে হাইব্রিড পদ্ধতিতে ওই সভা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করেন ওয়ালটন হাই-টেকের চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম।
সভায় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানের ভাইস-চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, পরিচালক এস এম নূরুল আলম রেজভী ও এস এম মঞ্জুরুল আলম অভি, স্বতন্ত্র পরিচালক শামসুল আলম মল্লিক, এফসিএ, প্রফেসর মো.
এছাড়া ভার্চুয়াল মাধ্যমে কোম্পানির পরিচালক এস এম রেজাউল আলম, তাহমিনা আফরোজ তান্না ও রাইসা সিগমা হিমাসহ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শেয়ার হোল্ডার সভায় যুক্ত হন। সভা সঞ্চালনা করেন কোম্পানি সচিব মো. রফিকুল ইসলাম, এফসিএস।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে ওয়ালটন হাই-টেকের চেয়ারম্যান এস এম শামছুল আলম বলেন, “দেশীয় উদ্ভাবন, দক্ষ মানবসম্পদ ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পায়নের মাধ্যমে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডকে বৈশ্বিক মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছে। স্থানীয় বাজারে নেতৃত্ব ধরে রাখার পাশাপাশি ৫০টিরও বেশি দেশে সফলভাবে রপ্তানি করা হচ্ছে ওয়ালটনের পণ্য, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। টেকসই প্রবৃদ্ধি, উদ্ভাবনী গবেষণা, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন এবং কর্মসংস্থান সুষ্টির মাধ্যমে ওয়ালটন আজ জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম চালিকাশক্তি।”
সভা সাফল্যমণ্ডিত করায় কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার, স্টেকহোল্ডারসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।
ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম সভায় ২০২৪-২৫ হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপনের পাশাপাশি কোম্পানির আর্থিক সূচকের উন্নতি ও ব্যবসায়িক অগ্রগতির লক্ষ্যে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
তিনি জানান, বৈশ্বিক বাণিজ্য অস্থিরতা ও প্রতিকূলতার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ২০২৪-২৫ অর্থবছর অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। তবে দৃঢ় পদক্ষেপ ও সময়োপযোগী কৌশলগত পরিকল্পনার মাধ্যমে ওয়ালটন সেই চ্যালেঞ্জ সফলভাবে মোকাবিলা করেছে। বিভিন্ন খাতে পরিচালন ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যবসা সম্প্রসারণের মাধ্যমে পণ্য বিক্রির স্বাভাবিক ধারা বজায় রেখেছে। ফলে নানান প্রতিকূলতার মধ্যেও গত হিসাব বছরে কোম্পানির মুনাফা হয়েছে এক হাজার কোটি টাকার বেশি। ভবিষ্যতে মুনাফা অর্জনের ক্ষেত্রে কোম্পানি আরো সফলতার দিকে এগিয়ে যাবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশ্যে ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, আন্তর্জাতিক বাজারের ব্যাপক মার্কেটিং ও ব্র্যান্ডিং কার্যক্রম পরিচালনার অংশ হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা ফুটবল টিমের রিজিওনাল স্পন্সর হয়েছে ওয়ালটন। এর ফলে বিশ্বজুড়ে ওয়ালটন পণ্যের ব্র্যান্ডিংয়ে স্থান পাবে মেসি, মার্টিনেজসহ আর্জেন্টিনার তারকা ফুটবলাররা। এই উদ্যোগ বিশ্বের একশরও বেশি দেশে ওয়ালটনের ব্র্যান্ড বিজনেস সম্প্রসারণের পথকে আরো সহজ করবে বলে তিনি আশাবাদী।
সভায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব বিবরণী, নিরীক্ষা প্রতিবেদন, পরিচালকদের প্রতিবেদন ও অবসর/পুনঃনিয়োগ এবং ১৭৫ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক ডিভিডেন্ড অনুমোদন করা হয়।
এছাড়া সভায় ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য কোম্পানির সংবিধিবদ্ধ নিরীক্ষক হিসেবে মেসার্স এ কাশেম অ্যান্ড কোং, চার্টাড একাউন্টেন্টস্কে এবং কর্পোরেট গভর্নেন্স কমপ্লায়েন্স নিরীক্ষক হিসেবে মেসার্স মোহাম্মদ সানাউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস, চার্টাড সেক্রেটারি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্টের নিয়োগ এবং তাদের পারিশ্রমিক অনুমোদন করেন।
ঢাকা/সাহেল/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস ল আলম
এছাড়াও পড়ুন:
হিমাগারের গেটে টাঙানো ব্যানারে লেখা আলুর কেজি ২২ টাকা, কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১১ টাকায়
সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করে হিমাগার পর্যায়ে প্রতি কেজি আলুর দাম বেঁধে দিয়েছিল ২২ টাকা। সে অনুযায়ী রাজশাহীর হিমাগারগুলোর সামনে ব্যানারও টানানো রয়েছে। অথচ সেখানেই এখন প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৯ থেকে ১১ টাকা।
আবার সরকারের একজন উপদেষ্টা ৫০ হাজার মেট্রিক টন আলু কেনার ঘোষণা দিলেও সে অনুযায়ী কাজ হয়নি। যদিও রাজশাহীর ৩৭টি হিমাগারে এখনো ২ লাখ ৫ হাজার ১৮৬ মেট্রিক টন আলুর মজুত রয়েছে।
কৃষক ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, গত আগস্টে সরকার হিমাগার গেটে ন্যূনতম ২২ টাকা কেজি দরে ৫০ হাজার টন আলু কেনার ঘোষণা দিয়েছিল। সরকারি প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি।
সরকার কেন আলু কিনছে না, তা জানতে চাইলে রাজশাহী কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান গত রোববার প্রথম আলোকে জানান, সরকার হিমাগার পর্যায়ে ২২ টাকা কেজি দরে আলু কিনতে হবে, এটা বলেছে। কিন্তু হিমাগারগুলো থেকে ওই দামে আলু কেনার কোনো ক্রেতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। সরকার আলু কেনার ব্যাপারে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি। যে বৈঠকগুলো হয়েছে, সেখানেও এ রকম কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। শুধু সাংবাদিকদের সামনে একজন উপদেষ্টা মৌখিকভাবে বলেছিলেন। সেটা বাস্তবায়ন করার কোনো নির্দেশনা জারি হয়নি।
এক কেজি আলুর উৎপাদন খরচ, হিমাগার ও পরিবহন ভাড়া এবং বস্তা ক্রয় মিলিয়ে ৩৫ টাকা পড়েছে। কিন্তু বিক্রি হচ্ছে ১০-১১ টাকায়। প্রতি কেজিতে ২২-২৫ টাকা লোকসান। দাম কম হওয়ায় খরচ উঠছে না। সে জন্য অনেকেই হিমাগার থেকে আলু তুলছেন না।—আহাদ আলী, সভাপতি, রাজশাহী জেলা আলুচাষি ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি।আলুর দরপতনের ব্যাপারে শাহানা আখতার জাহান বলেন, বাজারে আলুর দরপতনের একটাই কারণ, তা হলো চাহিদার তুলনায় উৎপাদন বেশি হয়েছে। যেমন রাজশাহী জেলায় গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলুর আবাদ হয়েছিল ৩৪ হাজার ৯৫৫ হেক্টর জমিতে, যা পরের ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়ায় ৩৮ হাজার ৫০০ হেক্টর; অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে ৩ হাজার ৫৪৫ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ বেশি হয়েছে। আগের বছর দাম বেশি পাওয়ায় পরেরবার কৃষকেরা বেশি জমিতে আলু চাষ করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আলু উৎপাদিত হয়েছিল ৯ লাখ ৩৮ হাজার ৮২৪ মেট্রিক টন, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বেড়ে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৫১৭ মেট্রিক টন হয়েছে। এর মানে, গত বছরে আলুর উৎপাদন ৯১ হাজার ৬৯৩ মেট্রিক টন বেড়েছে। একই সময় দেশের অন্য জেলাগুলোতেও চাহিদার তুলনায় আলু উৎপাদন বেশি হয়েছে। এটিই আলুর দাম কমার মূল কারণ।
হিমাগারের গেটে টাঙানো ব্যানারে লেখা আলুর কেজি ২২ টাকা