জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা: কমিশনের সুপারিশ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল
Published: 29th, October 2025 GMT
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। এটা ঐক্য হতে পারে না। তাহলে এই কমিশন কেন করা হয়েছিল? তিনি বলবেন, জনগণের সঙ্গে এটা একটা প্রতারণা। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এটা প্রতারণা।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদের ‘বিচার সংস্কার নির্বাচন: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে বাংলাদেশ’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এ কথাগুলো বলেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এত বড় একটা অভ্যুত্থান, এত ত্যাগের বিনিময়ে, এত প্রাণের বিনিময়ে সেটাকে ঠিকভাবে জাতির কল্যাণে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে দেখা যাচ্ছে, যতই দিন যাচ্ছে, ততই বিভক্ত বাড়ছে। বিভক্ত হয়ে পড়াটা, এটা কারা করছেন, কেন করছেন, এটাও উপলব্ধি করতে হবে। মিডিয়াতে, বিশেষ করে সোশ্যাল মিডিয়াতে কতগুলো পক্ষ নিয়ে একেবারে নেমে যাওয়া হয়। প্রতিপক্ষকে একেবারে পুরোপুরি ঘায়েল করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হয়।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে গতকাল মঙ্গলবার সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, যে বিষয়গুলোতে তাঁরা একমত ছিলেন না, সেখানে তাঁরা নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছিলেন। সেই নোট অব ডিসেন্ট সুপারিশে লিপিবদ্ধ করার একটা প্রতিশ্রুতি ছিল কমিশনের। কিন্তু অবাক হয়ে তাঁরা লক্ষ্য করলেন, সুপারিশে সেই বিষয়গুলো নেই। নোট অব ডিসেন্টগুলো পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছে। ইগনোর করা হয়েছে। এটা তো ঐক্য হতে পারে না। তাহলে ঐকমত্য কমিশনটা করা হয়েছিল কেন?
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘.
এ মুহূর্তে, এই অন্তর্বর্তীকালের সময়টা ঐক্যের সময় বলে উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, এখানে ন্যূনতম বিষয়গুলোয় একমত হয়ে একটা রাস্তা ধরা, একটা ট্র্যাক ধরা—সেই জায়গাটাকে বিভক্ত করে ফেলা হচ্ছে। কারা করছেন, কেন করছেন, এটা নিশ্চয়ই সবাই উপলব্ধি করতে পারছেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, একটি কথা তাঁরা খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চান, যা তাঁরা এর আগেও বলেছেন। তাঁরা মনে করেন, সব সংকটের মূলে যে বিষয়টা আছে, তা হলো, সত্যিকার একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। সে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের যে পার্লামেন্ট তৈরি হবে, সেই পার্লামেন্টে এই সব সমস্যাকে সংবিধানের মধ্যে নিয়ে আসবেন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা। সেভাবে দেশ চলবে। তাঁরা সে কারণেই ৫ আগস্টের বিপ্লবের পরেই নির্বাচনের কথা বলেছিলেন। তখন অনেকে বলেছিল, তাঁরা ক্ষমতা চান, সে জন্য অতি দ্রুত নির্বাচন চাচ্ছেন। আজ প্রমাণিত হচ্ছে, এই নির্বাচনটা যত দেরি হচ্ছে, তত বেশি সেই শক্তিগুলো শক্তিশালী হচ্ছে, ফ্যাসিস্ট শক্তিশালী হচ্ছে। যারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল দেখতে চায়, এখানে একটা অরাজকতা তৈরি করতে চায়।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা দৃষ্টি আকর্ষণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনি কিন্তু এইবার জনগণের সামনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ওয়াদাবদ্ধ। আপনি এখানে সত্যিকার অর্থেই যেটুকু সংস্কার দরকার, সেই সংস্কারগুলো করে আপনি জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য একটা নির্বাচন দেবেন। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট আসবে, সেই পার্লামেন্ট এই দেশের সংকটগুলো সমাধান করবে। সুতরাং আজকে যদি এর থেকে কোনো ব্যত্যয় ঘটে, এর থেকে বাইরে যদি যান, তার দায়দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনাকেই বহন করতে হবে। এ কথাটা আমি খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ট অব ড স ন ট জনগণ র স ফখর ল করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি-এনসিপি নিয়ে একতরফা নির্বাচন হলে কেউ ভোট দিতে যাবে না: কাদ
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম বলেছেন, বাংলাদেশের সব দল নির্বাচনে এলে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগও অংশ নেবে। কিন্তু, যদি বিএনপি ও এনসিপিকে নিয়ে একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে কেউ ভোট দিতে যাবে না।
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে টাঙ্গাইল জেলা হানাদারমুক্ত দিবসে কাদেরিয়া বাহিনীর উদ্যোগে শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ: ফখরুল
‘নির্বাচন সহজ হবে না, পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নামতে হবে’
আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকব, ততদিন বঙ্গবন্ধুকে লালন করব। যতদিন বেঁচে আছি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’র আদর্শই ধারণ করে চলব। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা যুদ্ধ করেছি। জিয়াউর রহমানও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। কিন্তু, আমরা ভুল করে জামায়াত-শিবিরকে সুযোগ দিয়েছি। বঙ্গবন্ধু ক্ষমা না করলে তারা টিকতেই পারত না।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যেখানে নেই, সেখানে মুক্তিযুদ্ধ নেই, বঙ্গবীরও নেই। শেখ হাসিনাকে আমি মায়ের মতো দেখি। শেখ হাসিনার অন্যায় বঙ্গবন্ধুর অন্যায় নয়। আর ড. ইউনূস মনে করেন, আওয়ামী লীগকে বিচার করবেন, এটা সম্ভব নয়। যদি আওয়ামী লীগ স্বৈরাচার হয়, তাহলে এখন কী হচ্ছে?
এই খ্যাতিমান মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সরকার যদি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, তখন জনগণ চাইলে দলের বাইরে থেকেও প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা ভাবব। কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয়, এই নির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কমে যাবে। নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে হলে আগে পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার যে ভাটি খেয়েছে, আপনাদেরও সেই ধাক্কা খেতে হতে পারে। ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয় অনেকেই দেয় । যারা জনগণের পথ দেখাবেন, তারা কোথায়? জনগণের নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি ১৯৭১ সালে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আজ জুলাই যোদ্ধারা কথা বলতে পারেন। দ্বিমতের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব, এমন পরিবেশ ফেরাতে হবে।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন বাঙ্গাল, ফজলুল হক বীর প্রতীক, কুড়ি সিদ্দিকীসহ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় মুক্তিযুদ্ধকালীন কাদেরিয়া বাহিনীর বীর মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কাওছার/রফিক