গতকালও ওরা এখানেই ছিল। চায়ের দোকানের পাশে যে অ্যালোভেরার ঝোপ, তার ঠিক পাশেই বেঞ্চি পেতে বসেছিল ওরা তিনজন। অথচ ওদের মধ্যে একজনের অ্যালোভেরাগাছগুলোকে ছোট ছোট সাপ বলে ভ্রম হয়, অনেক দিন ধরেই। তারপরও ওই ঝোপের পাশেই ওরা বসেছিল।
ওদের মধ্যে একজন কখনো হাসে না। এ বিষয়ে ওর কাছ থেকে কোনো হৃদয়বিদারক গল্প ওরা শুনতে পায়নি। কেবল পরিচয়ের শুরু থেকেই ওরা জানত, ও কখনো হাসবে না। হৃদয়ের অনুভূতি প্রকাশের জন্য ওদের কাছে হাসিটাকে কখনো গুরুত্বপূর্ণ মনেও হয়নি। বরং কান্না, কান্নাকে সব সময়ই ওদের কাছে খাঁটি একটা অনুভূতি বলে মনে হয়। মনে হয়, বৃষ্টি আর কান্না, এই দুইজন বেরিয়ে আসে কেবল আকাশ যখন ফেটে পড়ে তখনই।
তাই বলে গতকাল, অ্যালোভেরা ঝোপের পাশে বসে, ওরা কাঁদছিলও না। ওদের কান্নার নিজস্ব সময় আছে, সূর্যাস্ত আর সূর্যোদয়ের মতোই। শিশুর মতো যখন–তখন কেঁদে ফেলার বাতিক ওদের নেই। যদিও ঠিক এই সময়টায় না কাঁদলে, আর কখন কাঁদা উচিত, সেটাও ওরা বুঝতে পারছিল না।
‘আমাদের নিশ্চয়ই আবার দেখা হবে। সাধারণত শেষ দেখা বলতে আমরা যা বুঝি, তা আরও অনেক বেশি বিয়োগাত্মক হওয়ার কথা। আমার মনে হয় না এত শান্ত একটা বিদায়, শেষবারের মতো হতে পারে।’—না হাসতে পারা মানুষটা বলল।
‘কোনটা শেষবার, তা কি আসলেই কখনো জানা সম্ভব? এমনকি মৃত্যুও এভাবে বলেকয়ে আসে না। কেবল হয়তো মৃত্যুদণ্ডের আসামিদের ব্যাপারটা বাদ দিলে’—মেয়েটা জবাব দিল।
‘কিন্তু তারপরও, ফাঁসির আসামি হলেও, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত জীবনের আশা সবারই থেকেই যায়। একদম সত্যিকারের মরে যাওয়ার আগে, কেউ কি বিশ্বাস করে যে সে মরে গেছে?’—ওদের মধ্যে প্রথমে যে এসেছিল এই চায়ের দোকানটায়, সে নিজের অভিমত জানাল।
অথচ আশ্চর্য ব্যাপার হলো, ও চা খায় না। এমনকি যেবার শ্রীলঙ্কা থেকে চা এল বলে বাসায় খুব হইচই হলো, সেবারও, ও এক চুমুক চা মুখে দেয়নি। এমনকি ও সিগারেটও খায় না। কিন্তু তবু, চায়ের দোকানে ও–ই প্রথমবার এসেছিল। এসেছিল আসলে অ্যালোভেরার ঝোপের কথা জানতে পেরে।
‘আমাদের নিশ্চয়ই আবার দেখা হবে। সাধারণত শেষ দেখা বলতে আমরা যা বুঝি, তা আরও অনেক বেশি বিয়োগাত্মক হওয়ার কথা। আমার মনে হয় না এত শান্ত একটা বিদায়, শেষবারের মতো হতে পারে।’—না হাসতে পারা মানুষটা বলল।না! পেটের বা যৌনাঙ্গের কোনো ব্যারামই ওকে অ্যালোভেরার খোঁজে এত দূর নিয়ে আসেনি। আপনারা যতটা ভাবছেন, চায়ের দোকানটা অত কাছেও না, যে বিনা পয়সার অ্যালোভেরার লোভে ও এত দূর আসবে। অ্যালোভেরার ঝোপের কাছে ও এসেছিল, কারণ সুদূর অতীতে এমন কোনো অ্যালোভেরার ঝোপের ভেতরেই, সে তার শৈশব হারিয়ে ফেলেছিল। এরপর একটু বড় হওয়ার পর থেকে, কারও মুখে অ্যালোভেরার ঝোপের গল্প শুনলেই, সেখানে সে হাজির হয়।
শৈশব ফিরে পাওয়ার কোনো প্রকল্প হাতে নিয়ে কিন্তু সে ঘুরে বেড়ায় না। কারণ একে একে কৈশোর, যৌবন বা আরও যা কিছু নিয়ে সবাই হাপিত্যেশ করে, তার সবকিছু অকালেই হারিয়ে ফেলার পর, ফিরে আসার জন্য অ্যালোভেরার ঝোপ ছাড়া ওর আসলে আর কিছু ছিল না।
‘মরে যাওয়ার নিশ্চয়তার বিষয়টা নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা কিন্তু ঠিক জুতসই মানুষ নই’—খেই ধরে না হাসতে পারা মানুষটা ‘বরং এই আলোচনা আমরা রাস্তার ওই পাশের বাসিন্দাদের জন্য ছেড়ে দিতে পারি। ওখানে ওদের, মৃত্যুর বাইরে আর কী নিয়েই–বা কথা বলার আছে।’
রাস্তার ওপাশে একঝাঁক ফিঙে হঠাৎ আকাশে উড়াল দিল। কিন্তু ওই ফিঙেরা ওর আলাপের বিষয়বস্তু নয়। বরং ফিঙেদের আকাশটাকে ঢেকে রেখে যে গাছগুলো গোঁয়ারের মতো দাঁড়িয়ে আছে, তার পেছনের কবরস্থানটার দিকেই তার ইঙ্গিত।
‘আমার মনে হয় না’ মেয়েটা দ্বিমত করে। ‘মৃত্যু নিয়ে আমাদের এত অবসেশন, কারণ জন্ম নেওয়ার পর থেকে জীবনের সবচেয়ে নিশ্চিত বিষয়টা মেনে নিতে, আমাদের বড় কষ্ট হয়। ওপাশে, ওদের এপিটাফে লেখা সন তারিখের ওপরও শেওলা পড়ে গেছে অনেক বছর আগে। আমার মনে হয়, তার চেয়ে জীবন নিয়ে কথা বলতেই ওরা বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে। মৃত্যু পুরোপুরিই জীবিতদের বিষয়।’
তিনজনের কান্নার নিজস্ব সময়টা তিনটা ঘড়ির কাঁটার অঙ্কের মতো, একই সঙ্গে একই ঘরে না আসতে পারায়, ওরা কাঁদছিল না। কিন্তু এ কথা সত্যি, সময়টা কান্নারই ছিল। আর এই বেদনামুখর সময়কে আরও গুরুগম্ভীর করে তোলার জন্য মৃত্যুর চেয়ে ভারী বিষয় আর কী–ই বা হতে পারত?
অবাক করা বিষয় হলো, মৃত্যু নিয়ে কথা বলতে ওদের ভালোই লাগছিল। একটা কুকুরের মৃত্যু যেমন করে মাঝেমধ্যে মানুষকে পারমাণবিক বোমার কথা ভুলিয়ে দেয়, হয়তো তেমনি করেই। তাই মৃত্যুর আলাপটা শেষ করতে চাইছিল না কেউ।অথচ অবাক করা বিষয় হলো, মৃত্যু নিয়ে কথা বলতে ওদের ভালোই লাগছিল। একটা কুকুরের মৃত্যু যেমন করে মাঝেমধ্যে মানুষকে পারমাণবিক বোমার কথা ভুলিয়ে দেয়, হয়তো তেমনি করেই। তাই মৃত্যুর আলাপটা শেষ করতে চাইছিল না কেউ। সে জন্যই কিছুটা অপ্রাসঙ্গিকভাবে কথাটা তুলল হাসতে না পারা মানুষটা।
‘আমার সাপটা মরে গেছে, গতকাল রাতে। সকালেও ওকে খাবারদাবার খাইয়ে বের হয়েছিলাম। রাতে ফিরে দেখলাম, মরে পড়ে আছে। একটা ইঁদুর মুখে নিয়ে মরেছিল ও, অথচ খাঁচাটার মধ্যে ইঁদুর ঢোকার মতো কোনো রাস্তাই নেই।’ প্রিয় পোষ্যর মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত হওয়ার চেয়ে, বিষয়টার রহস্যময়তা সম্পর্কেই ওর আগ্রহ বেশি মনে হলো। অথবা হয়তো মৃত্যু সম্পর্কেই, কে জানে।
বাকিরা কিন্তু এবার বেশ শোকগ্রস্ত হয়ে পড়ল। সাপটার সঙ্গে ওদেরও অনেকবার দেখা হয়েছে। বরং এটাই খুব আশ্চর্যের বিষয় যে সাপটাকে জ্যান্ত খাবার খেতে দেওয়ার সময়, মৃত্যু বিষয়টা ওদের কখনো বিচলিত করেনি।
‘আহা!’ বলল মেয়েটা। ‘প্রচণ্ড বিষধর হলেও, ও কিন্তু বেশ লাজুক ছিল। শুধু খাওয়ার সময়টা বাদে। বাকি সময় কেমন চুপটি করে পড়ে থাকত খাঁচার কোনায়। আমার মনে হয় আমাদেরকে চিনতে পারত, ঘরে ঢুকলেই দেখেছি কেমন এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত।’
এই দৃষ্টির বিষয়টা নিয়ে, স্বীকার না করলেও, ওদের কিন্তু একটা ভাবনা আছে। সে জন্যই সাপের পাশাপাশি, সাপের খাঁচাটার কথাও ওদের বিশেষ করে মনে পড়ে। না হাসতে পারা বন্ধুটি থাকে চিলেকোঠায়। এই চিলেকোঠায় সরাসরি ঘরের ভেতরের সিঁড়ি দিয়ে ওঠা যায় না। কোনো একটা নিরাপত্তাজনিত কারণেই হয়তো বাইরের একটা ঘোরানো সিঁড়ি দিয়ে সেখানে উঠতে হয়। সিঁড়িটা আবার ঘেরা একটা তারের জাল দিয়ে। যতবারই এই সিঁড়ি দিয়ে ওরা ওঠে, ওদের মনে হয় ওরা একটা খাঁচার মধ্যে ঢুকে পড়ছে ধীরে ধীরে। দূর থেকে কেউ দেখলে হয়তো ভাবত সাপের লেজটাই এঁকেবেঁকে ঢুকছে। চিলেকোঠায় ঢোকার পর সাপটাকে দেখতে দেখতে, ওদেরও নিজেদের বন্দী মনে হতো। পার্থক্য কেবল সাপটার মতো নিজেদের এই বন্দিত্ব নিয়ে ওরা এতটা নিস্পৃহ থাকতে পারত না। বরং সাপটার আধবোজা চোখের দিকে তাকিয়ে ওদের মনে হতো ওই চোখে ওদের জন্য উপচে পড়ছে উপহাস। খাঁচার কোন পাশে কে দাঁড়িয়ে আছে, তা বুঝতে না পারাদের দিকে, একজন বোদ্ধার চোখের ভাষা যেমন হয়।
সাপের মুখে থাকা মরা ইঁদুরের দিকে শুরুতে সাপের মালিকের মতো এত মনোযোগ না দিলেও, একটা সময় ওরা ইঁদুরটার কথাও ভাবতে শুরু করে। বাসাটায় খুব একটা ইঁদুরের উপদ্রব আছে বলে ওরা কখনো শোনেনি। ওই ঘোরালো সিঁড়ি বেয়ে একটা ইঁদুর চিলেকোঠায় পৌঁছে, সাপের সরু জালির খাঁচায় কী করে ঢুকে পড়ল, তার হদিস কিছুতেই ওদের মিলছিল না।
‘ইঁদুর বোধ হয় মানুষের মতোই, তাই না? যখন তার ডাক আসে, তখন যেমন করেই হোক একটা সাপ খুঁজে নিয়ে তার খাঁচায় ঢুকে পড়বেই। মানুষের জীবনে ঢুকে পড়ার মতো একটা সাপের খাঁচার কখনো অভাব হয় না, তাই না? বা ঢোকার পথের? যতই সুখের জীবন থাকুক তার; থাকুক নিরাপত্তা, একটা সাপ কিন্তু সব সময় তাকে ডাকতেই থাকে। সবকিছু ছেড়েছুড়ে ওই সাপের বিষদাঁত আলিঙ্গন করার তাড়নাতেই যেন মানুষ ছুটে চলেছে, সৃষ্টির আদি থেকে।’ হাসতে না–পারা মানুষটার নিজের জীবনের কথাই যেন মনে হয়।
আগন্তুকেরা ক্ষণিকের জন্য আসে, আবার চলে যায়। ওরা তিনজন জানে, ওরা আর এখানে কখনো ফিরবে না। কখনো কখনো মৃত্যুর চেয়েও বড় কোনো অন্ধকার, মানুষকে আড়াল করে ফেলে। তারা আর ফিরে আসতে পারে না।‘হুম, আর সাপেরও কখনো অভাব হয় না নিজস্ব একটা মানুষের। যদিও ওরা বলে, সাপের কোনো স্মৃতি নেই, শত্রু–মিত্র চেনার ক্ষমতাও নেই, আমার কিন্তু কথাটা বিশ্বাস হয় না। আমার মনে হয়, বিষ নিজেই একটা স্মৃতি। বিষদাঁতের পথ বেয়ে যে খুঁজে ফেরে নিজের অতিক্রান্ত অতীতকে। আর খুঁজে না পেয়ে আতঙ্কিত হয়েই ছোবল দিতে থাকে একে-তাকে’—কথাগুলো বলতে বলতে প্রথমবার আসা মানুষটা খানিকটা চঞ্চল হয়ে উঠল। হঠাৎ করে তার মনে হলো, অনেক দিন আগে যাকে সে অ্যালোভেরার ঝোপে হারিয়ে ফেলেছিল, সেটা কি তার শৈশব? নাকি কোনো একটা সাপ? নাকি একটা অতিদীর্ঘ সাপের বিষদাঁত হয়ে সে নিজের অতিক্রান্ত অতীতকেই খুঁজে ফিরছে ঝোপঝাড়ে?
তার অন্যমনস্কতা অন্য দুজনের মধ্যেও সংক্রমিত হলো। একজন ডুবে গেল তার মৃত সাপটির স্মৃতিচারণায়। আরেকজন সময়কে একটা সাপের আদলে কল্পনা করতে করতে নিজেই যেন একটা ফণা হয়ে দুলতে লাগল মৃদু ছন্দে। আর মেয়েটা, তার মন এখনো পড়ে আছে ওপাশের কবরগুলোর মধ্যেই। সত্যিই কি মৃতরা কেবল জীবনের কথাই ভাবে? নাকি মরে যাওয়ার পরে, এসব ভাবনা খস খস শব্দ করে উড়ে যাওয়া বাদুড়গুলোর মতোই অর্থহীন মনে হয়?
একটা সময় আলো নিভে আসে। চায়ের দোকানের আগন্তুকেরা ক্ষণিকের জন্য আসে, আবার চলে যায়। কিন্তু ওরা তিনজন জানে, ওরা আর এখানে কখনো ফিরবে না। কখনো কখনো মৃত্যুর চেয়েও বড় কোনো অন্ধকার, মানুষকে আড়াল করে ফেলে। তারা আর ফিরে আসতে পারে না।
কিন্তু শব্দ? শব্দ বেঁচে থাকে। যা কিছু উচ্চারিত হলো, তাই ধ্বনিত হবে ইথারে, আরও অনেক যুগ পরেও। আমাদের শ্রবণসীমার বাইরে চলে গেলে, শব্দগুলোকে আমরা মৃত ভাবি। নিজেদের কানের ক্ষমতা সম্বন্ধে কোনো দ্বিধাই আমাদের মধ্যে জন্ম নেয় না। অথচ শব্দ অমর, অক্ষয়, অজর। যা কিছু উচ্চারিত হলো, সাপের খোলসের মতো হয়তো সে বারবার নিজেকে পাল্টাবে। কিন্তু সেটা প্রস্থান নয়, পুনরায় ফিরে আসার সংকেত মাত্র। হয়তো মৃত্যুও, আমাদের অনুভূতির বা বোধের সংকীর্ণতারই আরেক নাম। হয়তো আমাদের বোধের সীমার বাইরে, সচেতন সত্তার কখনো মৃত্যু হয় না।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম দ র র জন য এস ছ ল জ বন র সময ট র কখন ব সময ত নজন
এছাড়াও পড়ুন:
একজন ব্যাটসম্যান থাকলেই হতো…
১৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৫৭ রানে ৫ উইকেট নেই বাংলাদেশের। স্কোরবোর্ডে আরো ২০ রান যোগ করতেই আরো ১ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের করুণ ব্যাটিংয়ে ১৬ রানের ব্যবধানে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটিতে হেরেছে বাংলাদেশ। যে হারের একমাত্র কারণ বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতা।
যদিও অধিনায়ক লিটন দাস স্লগ ওভারের বোলিংকে সামনে এনেছেন। তবুও শুরুর ব্যাটিং ব্যর্থতাই হারের কারণ। কেননা শেষ দিকে লেজের ব্যাটসম্যানরা ম্যাচের ব্যবধান কমিয়ে এনেছিলেন। বাংলাদেশের পেসার তানজিম হাসান সাকিবের আক্ষেপ শেষ দিকে একজন ব্যাটসম্যান থাকলেই ম্যাচটা বাগিয়ে নিয়ে আসতে পারত বাংলাদেশ।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তানজিম বলেছেন, ‘‘যদি দেখেন, শেষের দিকে শিশিরের কারণে বল অনেক সহজে ব্যাটে আসছিল। আমার মনে হয়, যদি একজন থিতু ব্যাটসম্যান থাকত, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যেত। শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে ম্যাচ হাতের মধ্যেই থাকত।”
১৪৯ রানে বাংলাদেশের ইনিংস থামে। তানজিম ছিলেন দলের সেরা ব্যাটসম্যান। ২৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ রান করেন। শেষ পর্যন্ত থাকতে না পারায় নিজের ইনিংস নিয়েও আক্ষেপ ঝরল তানজিমের কণ্ঠে, “আমি যদি ম্যাচ শেষ করতে পারতাম, খুব ভালো লাগত। বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল, আমি সেট ছিলাম, নাসুম ভাইও ভালো সাপোর্ট দিচ্ছিলেন, বাউন্ডারি মারছিলেন। মনে হচ্ছিল, আমি এক ব্যাটসম্যানকে নিয়েই ব্যাট করছি। যদি আরও কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম, হয়তো ম্যাচটা একদম শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম। রিশাদও তখন আসত, ম্যাচটা হয়তো অন্যরকম হতো।”
বাংলাদেশের জন্য ম্যাচটা এত দূর নিয়ে এসেছে আসলে তানজিমের সঙ্গে নাসুম আহমেদের জুটি। সপ্তম উইকেট জুটিতে ২৩ বলে দুজন মিলে করেছেন ৪০ রান। এর আগে পাওয়ারপ্লেতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে দূরে সরে গিয়েছিল অনেকটাই। তানজিমও মনে করেন তেমন, ‘‘উইকেটগুলো হারিয়েছি পাওয়ারপ্লেতে। তারা যদি সেট হয়ে আউট হতো, আলাদা একটা দৃশ্য হতো। কিন্তু বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই সেট হওয়ার আগেই আউট হয়ে গেছে।’’
বাংলাদেশের প্রথম ৬ ব্যাটসম্যানের চারজনই যেতে পারেননি দুই অঙ্কের ঘরে। ব্যাটসম্যানদের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেন তানজিম, ‘‘আমি মনে করি আরেকটু দায়িত্ব নিতে হবে। দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করার কোনো বিকল্প নেই।’’
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন