লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর প্রার্থী ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, “এ দেশের মানুষ ইসলামের পক্ষে আছেন এবং আগামী দিনেও তারা ইসলামের পক্ষে থাকবেন। ইতোমধ্যে দেশের শান্তি প্রিয় জনগণ ইসলামের পতাকা তলে সামিল হতে শুরু করেছেন।”

তিনি বলেন, “জনগণ আর কোনো চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীকে ভোট দেবে না। আগামী নির্বাচনে ভোটাররা ইসলামী দলগুলোকে বেছে নেবেন। নির্বাচনে তারা ইসলামী দলগুলোকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগ করে দেবেন।” 

আরো পড়ুন:

ইসলাম প্রতিষ্ঠায় নারীদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে: গোলাম পরওয়ার

বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মিছিল

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে লক্ষ্মীপুর সদর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়িপাল্লার নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় অছিমউদ্দিন ক্বারি বাড়ি মাদারাসা মাঠে এ সভার আয়োজন করা হয়। ড.

মুহাম্মদ রেজাউল করিম ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের সেক্রেটারি। 

রেজাউল করিম বলেন, “ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা বিজয় অর্জন করেছেন। কারণ, তারা মেধাবী। মেধা ও গুণ দেখে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের পক্ষে রায় দিয়েছেন।” 

তিনি বলেন, “সারা পৃথিবীতে ইসলামের বিজয় শুরু হয়ে গেছে। আগামী দিনে বাংলাদেশও ইসলামের বিজয় হবে। যদি ইসলামের বিজয় হয়, তাহলে দেশ আল্লাহর আইন মতো চলবে। ওমরের শাসন চলবে। তখন আর অন্যায় হবে না। চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাস থাকবে না। সুখে শান্তিতে থাকবে আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ।”

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা নাছির উদ্দীন মাহমুদ, শহর জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট আবুল ফারাহ নিশান, নায়েবে আমির মাওলানা জহিরুল ইসলামসহ দলটির অন্য নেতারা।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম র প র জ উল

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়, জনগণের জীবন বদলানোর বেলায় নেই

রাষ্ট্রের অর্থে শিক্ষা আমাদের অধিকার, কিন্তু এর উৎস সাধারণ মানুষের রক্ত-ঘাম, যা আমরা প্রায়শই ভুলে যাই। শিক্ষিত নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়বদ্ধতা কতটা সামাজিক বা ব্যক্তিকেন্দ্রিক, তা এখন জরুরি প্রশ্ন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্রী হিসেবে আমি গভীরভাবে চিন্তা করি যে আমার শিক্ষাজীবনে কোনো টিউশন ফি লাগে না, বইপত্র লাইব্রেরি থেকে পাই, ক্লাস সরকারি ভবনে হয় এবং আমার পড়াশোনার সম্পূর্ণ ব্যয় সরকার বহন করে। কিন্তু এই বিপুল অর্থের উৎস কী? তা আমাকে প্রতিনিয়ত ভাবায়।

এই অর্থের উৎস হলো সমাজের সেইসব সাধারণ মানুষ, যাঁদের কঠোর পরিশ্রম ও ত্যাগের ওপর দেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল। একজন রিকশাওয়ালা, কৃষক, পোশাককর্মী এবং দিনমজুরের শ্রম ও করই আমার শিক্ষার ভিত্তি। কিন্তু যখন আমরা শিক্ষিত হয়ে নিজেদের জীবন উন্নত করি, তখন সেসব সাধারণ মানুষের জীবন পরিবর্তনের দায়িত্ব কার?

যাঁদের টাকায় আমরা শিক্ষিত হলাম, যাঁদের শ্রমের ওপর ভর করে আমাদের শিক্ষাজীবন গড়ে উঠল, তাঁরা আজও তাঁদের পূর্বের অবস্থানেই দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে আমরা কতটা ভূমিকা রাখতে পারছি? তখন মনে প্রশ্ন জাগে যে ডাক্তার তাঁর টাকায় বড় হয়েছেন তিনি কি তাঁর জীবন বদলাতে পারলেন? এই বৈষম্যমূলক চিত্র আমাদের সমাজের এক কঠিন বাস্তবতা। একজন রিকশাওয়ালা যাঁর দেওয়া করের টাকায় রাস্তাঘাট নির্মিত হয়। কিন্তু সেই রাস্তা যেন তাঁর নিজের নয়। যে রাস্তায় তিনি প্রতিদিন চলাচল করেন, সেই রাস্তাই ভাঙা কারণ, কোনো প্রকৌশলী তাঁর দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেননি। অথচ সেই ইঞ্জিনিয়ারও একসময় সরকারি অর্থে পড়াশোনা করেছেন, জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়েছেন।

পোশাককর্মীরা, যাঁরা দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেন, অথচ ছুটির দিনে তাঁদের বেতন কাটা যায়। তাঁরা পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা পান না। তাঁদের শ্রমের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সুউচ্চ ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু তাঁদের জন্য উন্নত জীবনের আলোর জানালা আজও খোলা হয়নি।

আমরা যাঁরা সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, বা আইন নিয়ে পড়াশোনা করি, আমাদের শিক্ষা কি এই গভীর সামাজিক বৈষম্যকে সঠিকভাবে বোঝাতে পেরেছে? আমরা কি এই বৈষম্য দূরীকরণে কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছি?

একজন সরকারি ডাক্তার মাস শেষে যে বেতন পান, তা জনগণের করের টাকা থেকেই আসে, তবু অনেক ডাক্তার সকালে সরকারি হাসপাতালে তাঁদের দায়িত্ব পালন না করে বিকেলে প্রাইভেট চেম্বারে বসেন। যেখানে রোগীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের ফি নেওয়া হয়। রোগীরা সরকারি হাসপাতালে যায় উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার আশায়, কিন্তু প্রায়শই তারা সঠিক চিকিৎসা পায় না। ওষুধের তালিকায় থাকে বিভিন্ন কোম্পানির নাম। রোগীর স্বার্থ সেখানে গৌণ হয়ে পড়ে।

তাহলে শিক্ষা কোথায়? নৈতিকতা কোথায়? এসব কিছুর দায় কার? এই প্রশ্নটি আমাদের সমাজের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে থাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির দিকে ইঙ্গিত করে। এই দায় শুধু সরকারের নয় আমাদেরও। আমরা যদি জনগণের টাকায় পড়াশোনা করি, তবে আমাদের শিক্ষার প্রথম এবং প্রধান দায়িত্ব জনগণের প্রতিই।

একজন শিক্ষক যদি ক্লাসে ঠিকমতো না পড়ান, একজন ডাক্তার যদি হাসপাতালে তাঁর দায়িত্ব পালন না করেন, একজন ইঞ্জিনিয়ার যদি নিম্নমানের সেতু নির্মাণ করেন, তাহলে শিক্ষার মানে শুধু কাগজের ডিগ্রি হয়ে যায়। যা সমাজের কোনো উপকারে আসে না। আজ দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়ছে। ডিগ্রিধারীর সংখ্যাও বাড়ছে, কিন্তু সমাজে ন্যায়বোধ ও মানবিকতা কমছে।

শিক্ষিত লোকজন উন্নত জীবন পাচ্ছেন, নিজেদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করছেন। আর যাঁরা ট্যাক্স দিয়ে সেই শিক্ষা সম্ভব করছেন, তাঁরা এখনো বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হেরে যাচ্ছেন। এটাই আজকের বাস্তব বাংলাদেশ। যেখানে শিক্ষা আর মানবিকতা দুটি ভিন্ন পথে হাঁটে।

সবশেষে আমরা হয়তো নিজেদের জীবন বদলে ফেলতে পারি, নিজেদের জন্য একটি উন্নত জীবন নিশ্চিত করতে পারি, কিন্তু যে মানুষগুলো আমাদের জীবনের ভিত্তি তৈরি করেছেন, যাঁদের শ্রম ও ত্যাগের ওপর ভর করে আমরা শিক্ষিত হয়েছি, তাঁদের জীবনের পরিবর্তনের দায় যদি আমরা এড়িয়ে যাই তাহলে আমাদের এই শিক্ষা অর্থহীন হয়ে পড়ে।

জনগণের টাকায় তৈরি শিক্ষিত নাগরিকের সবচেয়ে বড় ঋণ হলো জনগণের জীবন বদলে দেওয়া। তাঁদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা, তাঁদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা এবং তাঁদের জন্য একটি ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তোলা। না হলে এই শিক্ষা তখন কেবল ব্যক্তিগত উন্নতির হাতিয়ার হয়ে দাঁড়ায়, যা সমাজের বৃহত্তর কল্যাণে কোনো ভূমিকা রাখে না। আমাদের শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের জীবনমান উন্নত করা, বৈষম্য দূর করা এবং একটি ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। এই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে আমাদের শিক্ষা কেবল একটি ডিগ্রি হয়েই থাকবে, যা সমাজের প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারবে না।

ইতি আক্তার

শিক্ষার্থী, আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদ,

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ধানের শীষে ভোট দেয়ার জন্য উদগ্রীব জনগণ : মাসুদুজ্জামান
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহালের মধ্য দিয়ে জনগণের বিজয় হয়েছে: খেলাফত মজলিস
  • কথায় নয়, কাজে প্রমাণ দেব: সাতক্ষীরার ডিসি
  • নাশকতাকারীদের ঢাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে: ডিএমপি কমিশনার
  • শঙ্কা ও ভীতি দূর না হলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব নয়  
  • জনগণের টাকায় শিক্ষিত হয়, জনগণের জীবন বদলানোর বেলায় নেই
  • গণভোটে ‘হ্যাঁ’ পাস করলে কী হবে, ‘না’ পাস করলে কী হবে
  • যশোরে জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু সম্মেলন অনুষ্ঠিত
  • দিনের ভোট রাতে করতে রাষ্ট্রের ৮ হাজার কোটি টাকা লুট করেছিলেন শেখ হাসিনা: রিজভী