মাত্র এক বছরের প্রচারণায় নিউইয়র্ক শহর কাঁপিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ে আলোড়ন তুলেছেন জোহরান মামদানি। ৩৪ বছর বয়স্ক এই ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট নেতা উগান্ডায় জন্ম নেওয়া মুসলিম। নিউইয়র্কের শত বছরের ইতিহাসে তিনি সর্বকনিষ্ঠ এবং প্রথম মুসলিম মেয়র।

মামদানিকে মোকাবেলা করতে হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর ধনকুবের সহযোগীদের বিপরীতমুখী অবস্থান, নেতিবাচক মিডিয়া ন্যারেটিভ আর নানা প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিকূলতা। এসবের মাঝে অ্যান্ড্রু কুমোর মতো প্রভাবশালী ও ঝানু রাজনীতিবিদকে হারানোটা ছিল অসম্ভবকে সম্ভব করার মতো।

নিউইয়র্কের কর্মজীবী বাসিন্দাদের কাছে সবচেয়ে জীবনঘনিষ্ঠ সমস্যা ছিল জীবনযাত্রার খরচ জোগানো। মামদানি তাঁর নির্বাচনী কৌশলের কেন্দ্রে রেখেছিলেন এ সমস্যাটিকে। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘোরা ও ডিজিটাল মিডিয়ার মাধ্যমে নাগরিকদের সমস্যা জানা, নির্বাচনী প্রচারণায় সেগুলোকে উল্লেখ করাসহ নিজের ব্যক্তিজীবনের স্বচ্ছতা তুলে ধরে মামদানি এই জয় ছিনিয়ে এনেছেন। তাঁর এই জয় প্রমাণ করে বিদ্যমান ব্যবস্থার বিপরীতে দীর্ঘমেয়াদি কৌশল ও জোট করতে পারলে তরুণদের পক্ষে প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে জনসমর্থন আদায় করা সম্ভব।

আরও পড়ুন‘মামদানি মডেল’ কি নিউইয়র্কের বাইরেও ছড়িয়ে পড়বে০৭ নভেম্বর ২০২৫

২০২৪ সালে জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া নাহিদ ইসলামদের হাত ধরে দেশে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান হয়েছে। ১৪০০-এর অধিক শহীদ আর অসংখ্য আহত ব্যক্তির নেতা নাহিদ ইসলামরা জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের স্বপ্ন দেখছেন। আমাদেরও দেখাচ্ছেন। কিন্তু গণ-অভ্যুত্থানের দেড় বছর পার হলেও, বিএনপি ও জামায়াতের দ্বিমেরুর বাইরে তাঁদের তৃতীয় শক্তি হয়ে ওঠা নিয়ে সংশয় দৃশ্যমান। বিভিন্ন সময়ে করা নানান সংস্থার জরিপে তাঁদের কমতে থাকা জনসমর্থনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর নাহিদদের সহযোদ্ধাদের হাত ধরে প্রথমে লিয়াজোঁ কমিটি ‘জাতীয় নাগরিক কমিটি’ ও পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এনসিপিকে মনে করা হচ্ছিল আগামীর বৈষম্যহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণে তারুণ্যের স্বপ্নের সারথি। কিন্তু বিভিন্ন সময় এনসিপির কিছু নেতা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা অভিযোগ সামনে এসেছে। তাঁরা সেগুলোকে অস্বীকার করলেও অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর আইনানুগ ব্যবস্থা নেননি। ফলে অভিযোগগুলো প্রমাণিত না হলেও সেগুলো নাগরিকদের কাছে তাঁদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। অনেকেই তাঁদের বাংলাদেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মুদ্রার অপর পিঠ বলছেন, যেখানে ক্ষমতা আর দুর্নীতি হাত ধরে চলে।

আরও পড়ুনমামদানি দেখালেন কীভাবে নির্বাচিত হতে হয়০৬ নভেম্বর ২০২৫

নাহিদরা শুরু থেকে তাঁদের লক্ষ্য হিসেবে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ এর কথা বললেও সাধারণ নাগরিকরা সেই ধারণার সঙ্গে পরিচিত নন। নাহিদরা তাঁদের এই সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার কোনো রূপরেখাও পরিষ্কার করে উত্থাপন করতে পারেননি। তাঁরা কী চায়, কেন এবং কীভাবে চায়, সেটার স্পষ্ট কোনো ধারণা নাগরিকেরা এখনো পায়নি।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে নিজেদের রাজনৈতিক আদর্শকে একটি ‘কোর থিম’-হিসেবে নাগরিকদের সামনে উত্থাপন করেছে, নাহিদরা সেখানে ব্যর্থ হয়েছেন।

বিএনপির বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ কিংবা জামায়াতের ইসলামি রাজনীতি মানুষের কাছে যতটা সহজভাবে প্রতীয়মান হয়, নাহিদদের বাংলাদেশপন্থা ততটা হয় না। রাজনীতি তো জনগণের জন্য। জনগণের কাছে আধিপত্যবাদবিরোধী, আদর্শ-উত্তর, সেকেন্ড রিপাবলিকের ধারণা পরিষ্কার না হলে তারা নতুন মেরুকরণেও আগ্রহী হবে না। এ ক্ষেত্রে মামদানি বেশ সফল। তিনি খুবই স্বল্প সময়ে তাঁর ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট আদর্শকে কেবল প্রচারই করেননি, বরং সেটাকে নাগরিকদের কাছে সহজবোধ্য ও জীবনঘনিষ্ঠ করে উত্থাপন করে তাদের সমর্থনও আদায় করে নিয়েছেন।

মামদানি তাঁর প্রায় ১ লাখো স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ১০ লাখের বেশি ভোটারের দ্বারে কড়া নেড়েছেন। নতুন আদর্শ প্রচারে এটি অপরিহার্য এবং বেশ কার্যকর। তবে সময় ও লোকবল বিবেচনায় এনসিপি এটা কতটুকু করতে পারবে বলা মুশকিল। বাড়ি বাড়ি না গিয়ে শুধু পথসভা আর জনসংযোগ করে ভোটার আকৃষ্ট করা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ কঠিন। এনসিপির কয়েকজন প্রার্থী সে পথে হাঁটলেও বেশির ভাগই এ বিষয়ে এখনো নিষ্ক্রিয়। প্রান্তিক জনতার শক্ত সমর্থন না থাকলে এভাবে প্রচারণা করাও মুশকিল।

গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ৩ জন ছাত্র প্রতিনিধি যোগ দিয়েছিলেন। এর মধ্যে নাহিদ ইসলাম পরবর্তী সময়ে পদত্যাগ করে এনসিপির হাল ধরেছেন। তিনিসহ বাকি দুজন ছাত্র প্রতিনিধি যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদে যোগ দিয়েছিলেন, সেগুলো কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছেন তা অস্পষ্ট। বিশেষত গণমাধ্যম এবং জনপ্রশাসনে ফ্যাসিবাদী আমলের কাঠামোতে কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ফলে ছাত্র উপদেষ্টাদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তাঁরাও নানা সময় স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারার বিষয়ে অভিযোগ তুললেও দায়িত্ব ছাড়েননি। ফলে তাঁদের উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

দায়িত্ব ছাড়ার পর নাহিদ ইসলাম তাঁর কার্যক্রম কিংবা সাফল্যের কোনো প্রতিবেদন নাগরিকদের সামনে উত্থাপন করেননি। অন্য দুজন করবেন কি না, তা-ও অনিশ্চিত। এ ক্ষেত্রে মামদানি বেশ ভিন্ন। তিনি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলির মেম্বার হিসেবে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, নাগরিকদের কাছে তা স্পষ্ট করেছেন এবং জনসমর্থন আদায়ে সেই অভিজ্ঞতাকে কাজেও লাগিয়েছেন।

আরও পড়ুনডাকসু ও জাকসু: জাতীয় নির্বাচনে কী করবে এনসিপি১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সামনের ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলো আসন বণ্টন ও প্রচারণা শুরু করেছে। ইতিমধ্যে জামায়াত প্রায় ৩০০ আসন এবং বিএনপি ২৩৭ আসনের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করছে। এনসিপি এখানে অনেকখানি পিছিয়ে আছে। তাদের সব নেতার এখনো আসন নির্ধারিত হয়নি। এ ছাড়া উপদেষ্টা পরিষদে থাকা দুজন ছাত্র প্রতিনিধি কোন আসন থেকে নির্বাচন করবেন, আদৌ নির্বাচন করবেন কি না কিংবা করলেও সেটা এনসিপি থেকে করবেন কি না, সেটাও এখনো স্পষ্ট না। এ ছাড়া প্রচারণা শুরু করলেও তাঁদের বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

মামদানি তাঁর প্রায় ১ লাখো স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে ১০ লাখের বেশি ভোটারের দ্বারে কড়া নেড়েছেন। নতুন আদর্শ প্রচারে এটি অপরিহার্য এবং বেশ কার্যকর। তবে সময় ও লোকবল বিবেচনায় এনসিপি এটা কতটুকু করতে পারবে বলা মুশকিল। বাড়ি বাড়ি না গিয়ে শুধু পথসভা আর জনসংযোগ করে ভোটার আকৃষ্ট করা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশ কঠিন। এনসিপির কয়েকজন প্রার্থী সে পথে হাঁটলেও বেশির ভাগই এ বিষয়ে এখনো নিষ্ক্রিয়। প্রান্তিক জনতার শক্ত সমর্থন না থাকলে এভাবে প্রচারণা করাও মুশকিল।

এ ক্ষেত্রে তাঁরা মামদানির মতো অনলাইন প্রচারনাকে গুরুত্ব দিতে পারেন। মামদানি ফেসবুক, এক্স, টিকটকের মতো জনপ্রিয় ডিজিটাল মিডিয়া সাইটগুলো ব্যবহার করে তাঁর ভোটারদের বৃহৎ অংশের সঙ্গে সংযোগ ঘটিয়েছেন। কেবল একটা টিকটক ভিডিও থেকেই তিনি ২ দশমিক ৫ লাখো ডলার তহবিল উত্তোলন করেছেন।

আরও পড়ুনএনসিপি কেন ‘ডিফিকাল্টির’ মধ্যে আছে?২৯ জুলাই ২০২৫

তবে নিউইয়র্কের প্রেক্ষাপটে এই কাজ যতটা সহজ, বাংলাদেশে ততটা সহজ হবে না। পরিবর্তনকামী যে জনগোষ্ঠীকে নাহিদদের ভোটার হিসেবে ধরা হচ্ছে, তাদের একটা বড় অংশ শহুরে এবং জেন-জি। এদের কাছে ডিজিটাল মিডিয়া ব্যবহার করে পৌঁছানো তুলনামূলকভাবে সহজ। কিন্তু বাংলাদেশে নিউইয়র্কের চেয়ে ডিজিটাল লিটারেসি অনেক কম। জনসংখ্যার বৃহত্তর অংশ ডিজিটাল বলয়ের বাইরে অবস্থান করায় এবং ডিজিটাল মিডিয়াকে রাজনৈতিক সচেতনতার কাজে না লাগানোয় শুধু অনলাইন প্রচারণায় সবার কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে না।

নির্বাচনের খরচ জোগাতেও ভুগতে হতে পারে এনসিপিকে। মামদানি তাঁর নির্বাচনী ব্যয়ের একটা বড় অংশ গণচাঁদা থেকে পেলেও বাংলাদেশে এই পদ্ধতি এখনো জনপ্রিয় না। খরচ জোগাড় করতে গিয়ে তাঁরা কোনো অনৈতিক পন্থা নিচ্ছেন কি না, সেদিকেও সবার কড়া নজর থাকবে। তাঁরা কীভাবে এই খরচ জোগাড় করেন ও ব্যয় করেন, সেটা ভোটারদের অন্যতম আগ্রহের জায়গা।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে দলের সমার্থক হচ্ছে তার প্রতীক। ভোটাররা বিএনপি বা জামায়াতের প্রার্থীকে না চিনলেও ধানের শীষ বা দাঁড়িপাল্লা প্রতীক চেনে। কিন্তু নাহিদদের নিবন্ধন আর প্রতীক নিয়ে দীর্ঘ জটিলতা জনসাধারণের কাছে তাদের পরিচিত করার পথে অনেকখানি পিছিয়ে দিয়েছে।

আরও পড়ুনএনসিপি: তারুণ্যের উত্থান, নাকি জাসদের ছায়া০৭ এপ্রিল ২০২৫

আগামী নির্বাচনে জোটসঙ্গীদের সবাইকে নিজস্ব দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে করতে হবে। ফলে জোট কিংবা একক, যেভাবেই নাহিদরা নির্বাচন করুন না কেন, শাপলা কলি প্রতীককে জনগণের কাছে পরিচিত করানোর কোনো বিকল্প নেই। তবে এই কাজে যেখানে মামদানি পেয়েছেন বছরের বেশি সময়, নাহিদদের তা করে দেখাতে হবে মাত্র ৪ মাসে।

এ ছাড়া নাহিদরা যাদেরকে নিজেদের মূল ভোটার হিসেবে বিবেচনা করছেন, সেই তরুণ ভোটারদের মাঝেও আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে কি না, সেটা ভাববার অবকাশ রয়েছে।

গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের প্রধান চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে গণ-অভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা নাহিদদের সহযোদ্ধাদের ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ’ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের প্যানেলে নির্বাচন করেছে। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনোটিতেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সমর্থন না পেয়ে বাকি দুটিতে তারা কোনো প্যালেনও দেয়নি। সম্প্রতি তারা সংগঠনের নামও পরিবর্তন করেছে। তাদের সমর্থন হারানোর এই বাস্তবতা বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন সংস্থা দ্বারা পরিচালিত জরিপে ফুটে উঠেছে।

এ বছরের জুলাইয়ে সানেম-এর জরিপে যেখানে এনসিপির প্রতি ১৬ শতাংশ জনসমর্থন দেখা গিয়েছিল, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে প্রকাশিত বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে তা ২-৫ শতাংশে ঠেকেছে। অথচ মার্চে এনসিপির একজন যুগ্ম আহ্বায়ক মোট ভোটের ৩০-৩৫ শতাংশ পেয়ে বিরোধী দলে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছিলেন।

এই অবনমনের পেছনে কিছু দৃশ্যমান কারণও রয়েছে। গণ-অভ্যুত্থানে সম্পৃক্ত অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে নাহিদদের দূরত্ব ক্রমাগত বেড়েছে। এর পেছনে গণ-অভ্যুত্থানের অংশীদারত্ব এককভাবে নিজেদের কাছে রাখার প্রবণতাকে কারণ হিসেবে দেখছেন অনেকে। আবার কিছু ক্ষেত্রে এর পেছনে অন্যদের রাজনৈতিক স্বার্থবাদিতা থাকলেও নাহিদরা পুরোপুরি দায় এড়াতে পারেন না। যেই অপরায়ণের রাজনীতির বিরুদ্ধে তাঁদের দৃঢ় অবস্থান ছিল, জাতীয় নাগরিক কমিটি থাকাকালীন তাঁদের বিরুদ্ধে সেই অপরায়ণের অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক ভিন্ন আদর্শের কারণে অন্যদের মাইনাস করার এই অভিযোগ তাঁদের রাজনৈতিক ভাবমূর্তিতে কালিমা লাগিয়েছে।

এ ছাড়া সম্প্রতি নাহিদদের কাছের কয়েকজন গণ-অভ্যুত্থানের নেতাকে অনলাইনে একে অপরের প্রতি বিষোদ্‌গার করতে দেখা গেছে। একে অপরকে ব্যক্তিগত স্বার্থে দলীয় ক্ষমতা ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের জন্য দায়ী করেছেন। দলীয় পরিসরে জবাবদিহি না করে গণপরিসরে পারস্পরিক কাদা-ছোড়াছুড়ি বাংলাদেশের প্রথাগত ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু নতুন বন্দোবস্তের উদ্দেশ্য তো ছিল পুরোনো রাজনৈতিক সংস্কৃতি ভেঙে নতুন সংস্কৃতি নির্মাণ করা। ফলে নতুন মোড়কে পুরোনো রাজনীতি ভোটের মাঠে ফিরছে কি না, ভোটারদের সেটা ভাববার অবকাশ রয়েছে।

নুরুল হুদা সাকিব সভাপতি ও অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

মো.

ইকরামুল হক রিয়ন প্রভাষক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

*মতামত লেখকদের নিজস্ব

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম র জন ত ক দল ন উইয়র ক র ব শ বব দ য র র জন ত খরচ জ গ এনস প র ব যবহ র উপদ ষ ট কর ছ ন ন হ দর ম মদ ন ন কর ছ ক ষমত করব ন সরক র বছর র ব এনপ আদর শ

এছাড়াও পড়ুন:

নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলেই গ্রেপ্তার হবে: মামদানি

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু নিউইয়র্ক সফরে এলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছেন শহরটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা চালানোর অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন আগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামদানি এ ঘোষণা দিয়েছেন।

স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী মেয়র এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মামদানি এ কথা বলেন। এ সময় তাঁকে মেয়র পদে অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আমন্ত্রণ জানান মামদানি।

এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এবিসি৭-এ সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠানে যোগ দেন মামদানি। এ সময় তিনি নিউইয়র্ক শহরকে ‘আন্তর্জাতিক আইনের শহর’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এখানে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে আইসিসির জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল থাকবে। ওই পরোয়ানায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে গাজার বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা এবং যুদ্ধের কৌশল হিসেবে ক্ষুধাকে ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়েছে।

নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র বলেন, ‘আমি বারবার বলেছি যে আমি বিশ্বাস করি, এটি আন্তর্জাতিক আইনের শহর। আন্তর্জাতিক আইনের শহর হওয়ার মানে সেই আইনকে রক্ষা করা। আর তার মানে হলো আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বহাল রাখা। সেটি বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জন্য হোক কিংবা ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য।’

মেয়র নির্বাচনে জয়ের আগে গত অক্টোবর মাসে ফক্স নিউজের দ্য স্টোরি অনুষ্ঠানে মার্থা ম্যাককালামের সঙ্গে আলাপচারিতায় মামদানি বলেছিলেন, আইনগত অনুমতি থাকলে তিনি নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করবেন। তিনি বলেন, নিউইয়র্ক এ ধরনের ‘নীতিকে সমুন্নত ও সংরক্ষণ করতে চায়’।

মামদানি বলেন, নেতানিয়াহুর গ্রেপ্তার নিশ্চিত করতে তিনি কোনো নতুন আইনের আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। এ সময় তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো নই। আমি এমন একজন, যে বিদ্যমান আইনের মধ্যেই থাকতে চায়। তাই আমি নিজে থেকে কোনো আইন বানাব না। বরং বিদ্যমান আইনের ভেতরে থেকে সব ধরনের আইনগত সম্ভাবনা খুঁজে দেখব।’ উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়।

এদিকে সিবিএসের খবরে বলা হয়েছে, দায়িত্ব গ্রহণের সময় ‘ট্রানজিশন’ দলের খরচের জন্য সমর্থকদের কাছে অনুদান চেয়েছেন মামদানি। গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি এ অনুদান চান। তিনি জানান, এখন পর্যন্ত তাঁর প্রচারণা দল খরচের জন্য ১০ লাখ ডলার সংগ্রহ করতে পেরেছে। তবে তাদের আরও ৪০ লাখ ডলার প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মামদানির সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাৎ করবেন ট্রাম্প
  • নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে এলেই গ্রেপ্তার হবে: মামদানি
  • ক্লাউডফ্লেয়ারের নেটওয়ার্কে বিপর্যয় এক্স, চ্যাটজিপিটিসহ সারা বিশ্বের ইন্টারনেটের সেবায় বিঘ্ন