কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ চলাকালে দেশীয় অস্ত্রের আঘাতে মো. মোশাররফ হোসেন (২০) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে উপজেলার রায়টুটী ইউনিয়নের শোয়াইর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত মোশাররফ একই গ্রামের মৃত আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।

আরো পড়ুন:

যবিপ্রবিতে ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করায় গ্রামবাসীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ

ঝিনাইদহে বিএনপির ২ পক্ষের সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ৬

ইটনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাফর ইকবাল জানান, দীর্ঘদিন ধরে শোয়াইর গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। আজ সকালে স্যালো মেশিন চুরির অভিযোগে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এসময় প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে মোশারফ হোসেন গুরুতর আহত হন।

আত্মীয়-স্বজনরা তাকে পাশ্ববর্তী তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তাড়াইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা.

মো. সারোয়ার হোসেন রনি জানান, সকালে ইটনা থেকে স্বজনরা আহত মোশাররফকে  স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। এখানে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়। তাৎক্ষনিক আমরা ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়েছি।”

ইটনা থানার ওসি জাফর ইকবাল জানান, বর্তমানে ওই এলাকার পরিস্থিত স্বাভাবিক রয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্ত করাা হবে। মরদেহ কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ন হত র স ঘর ষ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর

শহরের নিতাইগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। প্রথমে সে জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারকে দেখান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি ডাক্তারের কাছে।

কার্ডিওলজি ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করে এসে ডাক্তারের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৪ নভেম্বর  (সোমবার) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।

মৃত্যু ব্যক্তিটির নাম আব্দুল জব্বার। তিনি ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব সস্তাপুর এলাকায় অস্থায়ী বাসিন্দা। তার গ্রামের বাসা ময়মনসিংহ জেলায়। পেশায় তিনি ছিলেন মাছ বিক্রেতা।

এদিকে তার মৃত্যুবরণ হাসপাতালে এক প্রকার হৈচৈ পড়ে যায়। কারণ, তার সাথে কোন স্বজন ছিলো না। ফলে কার কাছে লাশটি বুুঝিয়ে দিবেন সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফলে শুরু হয় লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান। কিন্তু স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি রাখা হয় হিমঘরে।

গত দুইদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান করা হয়। কিন্তু কোনভাবেই স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি অজ্ঞাতভাবে লাফন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।

বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এ আবেদনটি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হাসপাতালের অফিস সহায়ক সাউদ নূরে শফিউল কাদের। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে যাওয়ার পর পরই তাকে হাসপাতাল থেকে কল করে বলা হয়, ‘লাশটির স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসুন।’

এদিকে জরুরী বিভাগের পাশে লাশকাটা ঘরের সামনে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়ে আছে মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তারা পিতা মারা গেছে। একদম জলজ্যান্ত মানুষটি বাসা থেকে অনেকটাই সুস্থভাবেই বেড়িয়ে আসলেন, অথচ তিনি আজ মৃত। এসব ভেবেই তিনি অনেকটাই দুঃখে শোকে কাতর। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ ছিলো না।

তবে এ বিষয়ে মৃত আব্দুল জব্বারের চাচাতো ভাই মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, যথারীতি ২৪ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন আব্দুল জব্বার। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাইনি। আমরা তাকে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছি।

কিন্তু পাই নি। আজ সকালে আমাদের এলাকারই এক মহিলা বলে, ওনাকে নাকি এ হাসপাতালে দেখছে। তার কথা শুনে আমরা এ হাসপাতালে এসে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে তিনি মারা গেছে।

তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহে নিয়ে যাবো এবং ওখানে দাফন করবো।

এ ব্যাপারে হাসপাতালটির ওয়ার্ড মাষ্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি প্রথমে জরুরী বিভাগে আসেন। সেখান থেকে তাকে ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি স্যারের কাছে পাঠানো হয়। স্যার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্যারের রুমে মাটিতে পড়ে যান এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।

তিনি বলেন, আমরা তার স্বজনদের খোঁজ পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাই নি। আজ তাই ডিসি স্যারের কাছে লিখিত আবেদন নিয়ে পাঠিয়েছিলা যে, এ লাশটি এখন কি করবো। তার নির্দেশনা আসলে আমরা তাকে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করতাম।

আল্লাহ্’র রহমতে এর আগেই তার স্বজনরা চলে আসছে। আমরা মৃত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ও ছবির সাথে মিলিয়ে এবং যাচাই করে এ স্বজনদের হাতে লাশটি বুঝিয়ে দিচ্ছি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর