ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকরা। গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়ায় ভ্যান রেখে তারা দেড় ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে নানা স্লোগান দেন। বিক্ষোভ চলাকালে গুরুত্বপূর্ণ বঙ্গবন্ধু সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নগরজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়।
রোববর দুপুর ১২টার দিকে ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকরা শুরুতে চাষাঢ়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। পরে তারা চলে যান চাষাঢ়া গোলচত্বরে। সেখানে এলোপাতাড়ি ভ্যান রেখে সড়ক অবরোধ করেন। নারায়ণগঞ্জ ব্যাটারিচালিত ভ্যান মালিক-শ্রমিক সংহতির ব্যানারে সেখানে মানববন্ধনে মিলিত হন। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যোগ দেন গণসংহতি আন্দোলন ও ছাত্র ফেডারেশনের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা।
আব্দুস সালাম নামের একজন ভ্যানচালক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকদের কাছ থেকে মাসে ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হতো। গত ৫ আগস্টের পর চালকরা ওই চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা এখন ভ্যান আটক করছেন। জরিমানার নামে এক হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে পুলিশ।
এ ছাড়া নানাভাবে হয়রানি অভিযোগ তুলে অন্য ভ্যানচালকরা অবিলম্বে ট্রাফিক পুলিশের এই চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান। তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন জানান, ভ্যানচালকরা নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা পরিশ্রম করে নানা পণ্য পরিবহন করেন। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ নানা অজুহাতে তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। পুলিশের এ ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।
এদিকে ভ্যানচালকদের অবরোধে শহরে তীব্র যানজট দেখা দেয়। সংবাদ পেয়ে সেখানে আসেন নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নাসির আহমেদ। এ সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ বাদানুবাদ হয় ভ্যানচালক নেতাদের। পরবর্তী সময়ে তাঁর অনুরোধে ভ্যানচালকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন।
এ বিষয়ে রোববার রাত ১০টার দিকে সমকালের সঙ্গে কথা হয় নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগরের। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার ট্রাফিক পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সভায় বসেছেন। এসব অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি হতে পারে। কমিটির সদস্যরাই ঘটনাগুলোর তদন্ত করবেন। যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
আড়াইহাজার উপজেলার শীর্ষ মাদক কারবারি ও সন্ত্রাসী সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল ও তার সহযোগী ফজলুল হক ওরফে ফজুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দি থানার দাউদকান্দি ব্রিজের টোল-প্লাজা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত সোহেল মেম্বার ওরফে ফেন্সি সোহেল (৩৮) আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার মোঃ মকবুল হোসেনের পুত্র। অপরদিকে ফজলুল হক ওরফে ফজু (৩০) একই এলাকার আউয়ালের পুত্র।
গ্রেপ্তারকৃত আসামীদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা সূকৌশলে দীর্ঘদিন যাবৎ মাদক ক্রয়-বিক্রয়সহ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিল মর্মে স্বীকার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর বিরুদ্ধে নারয়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী ও মাদক, অপহরণ, চুরি, হত্যা চেষ্টাসহ ১৪-১৫টি মামলা রয়েছে।
এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত আসামি ফজলুল হক ফজু এর বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানায় সন্ত্রাসী, অপহরণ, ছিনতাইসহ ৪-৫টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদ্বয়কে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে র্যাব-১১ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বালিয়াপাড়ার মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল বিগত ইউপি নির্বাচনে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হয়। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে সে আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠে।
পরবর্তীতে সে অবৈধ মাদক সেবন ও ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে জড়িয়ে পরে। পরবর্তিতে এক সময় সে এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি পায়। তখন থেকে সবাই ফেন্সি সোহেল হিসাবে ডাকে। দীর্ঘদিন ধরে মাদক বিক্রির সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে আসছে। তার পুরো পরিবার মাদকের সঙ্গে জড়িত। প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
ফজলুল হক ফজু এই শীর্ষ সন্ত্রাসী-মাদক ব্যবসায়ী সোহেল মেম্বার ফেন্সি সোহেল এর একান্ত সহযোগী। তাদের ভয়ে এলাকাবাসী ভীত-সন্ত্রস্ত। যারাই তাদের এই সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও মাদক ব্যবসার বিরোধিতা করে তাদেরকেই সোহেল ও তার সহযোগীরা নির্মমভাবে নির্যাতন করে।