Samakal:
2025-09-17@21:09:26 GMT

সড়কে নেমে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ

Published: 12th, January 2025 GMT

সড়কে নেমে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ

ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়সহ নানা অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকরা। গতকাল রোববার দুপুরে নগরীর প্রাণকেন্দ্র চাষাঢ়ায় ভ্যান রেখে তারা দেড় ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করেন। এ সময় তারা চাঁদাবাজি ও হয়রানি বন্ধের দাবিতে নানা স্লোগান দেন। বিক্ষোভ চলাকালে গুরুত্বপূর্ণ বঙ্গবন্ধু সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নগরজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়। 
রোববর দুপুর ১২টার দিকে ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকরা শুরুতে চাষাঢ়ায় অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান নেন। পরে তারা চলে যান চাষাঢ়া গোলচত্বরে। সেখানে এলোপাতাড়ি ভ্যান রেখে সড়ক অবরোধ করেন। নারায়ণগঞ্জ ব্যাটারিচালিত ভ্যান মালিক-শ্রমিক সংহতির ব্যানারে সেখানে মানববন্ধনে মিলিত হন। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এ সময় তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে যোগ দেন গণসংহতি আন্দোলন ও ছাত্র ফেডারেশনের জেলা শাখার নেতাকর্মীরা। 
আব্দুস সালাম নামের একজন ভ্যানচালক বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যাটারিচালিত ভ্যানচালকদের কাছ থেকে মাসে ৫০০ টাকা করে চাঁদা নেওয়া হতো। গত ৫ আগস্টের পর চালকরা ওই চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা এখন ভ্যান আটক করছেন। জরিমানার নামে এক হাজার টাকা করে চাঁদা আদায় করছে পুলিশ।
এ ছাড়া নানাভাবে হয়রানি অভিযোগ তুলে অন্য ভ্যানচালকরা অবিলম্বে ট্রাফিক পুলিশের এই চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান। তাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন জানান, ভ্যানচালকরা নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা পরিশ্রম করে নানা পণ্য পরিবহন করেন। কিন্তু ট্রাফিক পুলিশ নানা অজুহাতে তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছে। পুলিশের এ ধরনের চাঁদাবাজি বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। 
এদিকে ভ্যানচালকদের অবরোধে শহরে তীব্র যানজট দেখা দেয়। সংবাদ পেয়ে সেখানে আসেন নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নাসির আহমেদ। এ সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ বাদানুবাদ হয় ভ্যানচালক নেতাদের। পরবর্তী সময়ে তাঁর অনুরোধে ভ্যানচালকরা সড়ক অবরোধ তুলে নেন। 
এ বিষয়ে রোববার রাত ১০টার দিকে সমকালের সঙ্গে কথা হয় নারায়ণগঞ্জে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) রুহুল আমিন সাগরের। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার ট্রাফিক পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে সভায় বসেছেন। এসব অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি হতে পারে। কমিটির সদস্যরাই ঘটনাগুলোর তদন্ত করবেন। যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।  
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে

বর্তমানে নারায়ণগঞ্জের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যানজট। এ যানজটের কারণে মাত্র ৫ মিনিটের রাস্তা পেরুতে সময় লেগে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। ফলে প্রতিনিয়ত চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে নারায়ণগঞ্জবাসীকে।

নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক বিভাগ কিংবা সিটি কর্পোরেশন এ যানজট থেকে জেলাবাসীকে পরিত্রাণ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে দিন যতই বড়ছে ততই বাড়ছে নারায়ণগঞ্জবাসীর দুর্ভোগ।

নারায়ণগঞ্জে এমন কোন সড়ক নাই সেই সড়কে যানজট নাই। মূল সড়ক থেকে শুরু করে অলি-গলি সব জায়গায়ই যানজট আর যানজট। তবে এ যানজটের পেছনে মূল সড়কের যানজটকেই দায়ি করছেন অনেকে।

তারা বলছেন, মূল সড়ক যদি যানজট মুক্ত থাকতো তাহলে এর আশেপাশের সড়কগুলো যানজটের সুষ্টি হতো না। মূল সড়কে তীব্র যানজটের কারণেই এর প্রভাব পড়ছে অন্য সড়কগুলোতেও।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে শহরের চাইতে চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে যানজট ভয়াবহ আকার ধারণে করেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচলের কথা শুনলেই মানুষ আতকে উঠে। কারণ, যানজটের মাত্র পনেরো মিনিটের রাস্তা পাড় হতে সময় লাগে ঘন্টার পর ঘন্টা। 

এ রাস্তায় এ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসের গাড়ীকেও যানজটে আটতে থাকতে দেখা যায় ঘন্টার পর ঘন্টা। একবার যানজটে আটকা পড়লেই দিন শেষ। কখন বাড়ী কিংবা অফিসে যাবেন তার কোন ঠিক নেই।

অনুসন্ধানে জানাগেছে, এ যানজটের প্রধান কারণ হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ। ফ্লাইওভারের কর্মযজ্ঞের ফলে যানবাহনগুলোকে একটু ধীর গতিতে যেতে হয়। ফলে যানজটের সৃষ্টি হয়।

তবে এ যানজটের আরও একটি বড় কারণ চোঁখে পড়ে, আর তা হলো পঞ্চবটি এলাকায় ফ্লাইওভারের নিচে এবং চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কের দু’পাশে ট্রাক ও কভার্ডভ্যানগুলো অবৈধভাবে পাকিং করে রাখা। 

এসব যানবাহনগুলো সড়কের দু’পাশে পার্কিং করে রাখার কারণে মূল সড়ক অনেকটাই সরো হয়ে যায়। ফলে এ সড়ক দিয়ে অন্যসব যানবাহনগুলো ঠিকমত চলাচল করতে পারে না। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

অথচ, পঞ্চবটির খুব কাছেই রয়েছে ট্রাক ও কভার্ডভ্যান স্ট্যান্ড। যানবাহনের চালকরা ওই স্ট্যান্ডে গাড়ী না রেখে সড়কের পাশে অবৈধভাবে বাঁকাত্যাঁড়া গাড়ীগুলো রাখছেন। এর ফলে যে, ওই সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে এবং যানজটের কবলে পড়ে মানুষের ভোগান্তি হচ্ছে, এ বিষয়ে যেন তাদের কোন মাথা ব্যথা নেই। 

তাদের ভাব-নমুনা দেখা মনে হয় যে, তারাই যেন এ সড়কটির মূল মালিক। না পুলিশে তাদের কিছু বলে, না তারা জনগণের কোন কথা শোনে। তারা তাদের ইচ্ছেমত গাড়ীগুলো রেখে যানজটের সৃষ্টি করছেন।

চাষাঢ়া-পঞ্চবটি সড়কে চলাচল করা ভুক্তভোগী পথচারিরা বলছেন, এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করাটা বর্তমানে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এত ভয়াবহ যানজট আমরা কখনোই চোঁখে দেখিনি। পঞ্চবটি ফ্লাইওভারের নিচে যেভাবে ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো রাখা হয় পুরো সড়কটা তারা কিনে নিয়েছে। পুলিশও কিছু বলে না। 

এছাড়া চাষাঢ়া থকে পঞ্চবটি পর্যন্ত পুরো সড়কে দু’পাশেই তারা গাড়ীগুলো রাখছেন। রাস্তাটি পাশে এমনিতেই জায়গা কম, আবার যদি তারা এভাবে গাড়ী রাখেন তাহলে যানজটের সৃষ্টিতো হবেই। এ বিষয়ে পুলিশ প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জের সচেতন মহল বলেন, আসলে নিতাইগঞ্জ এলাকা থেকে ট্রাক স্ট্যান্ডটি সরিয়ে নেয়ার জন্য সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র আইভী একটি উদ্যোগ গ্রহণ করে। তিনি শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে পঞ্চবটি এলাকাতে সিটি কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে একটি ট্রাক স্ট্যান্ড গড়ে তোলেন এবং সেখানে এ স্ট্যান্ডকে স্থানান্তর করেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। 

এখন তারা কিছু গাড়ী ওই স্ট্যান্ডে রাখে বাকি গাড়ীগুলো সড়ক দখল করে এলোপাথারিভাবে রাখে। এতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হলেও যেন কারো কোন কিছু বলার নেই। কারণ, এ সমস্যা নিয়ে বহুবার ডিসি-এসপির সাথে বসা হয়েছে, আলোচনা হয়েছে কিন্তু সুরাহা হয় নাই। 

তবে, ৫ আগস্টে দেশে একটি বড় পরিবর্তনের পর আশা করছিলাম এবার হয়তো এর একটা সুরাহা হবে। কিন্তু না। সড়ক দখল করে রাখা ট্রাক-কভার্ডভ্যানগুলো বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত তেমন কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে মানুষকে বাধ্য হয়েই যানজটের মত দুর্ভোগ দুর্দশাময় পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে পথ চলতে হচ্ছে।

তারা বলেন, আসলে দেশে শান্তি শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য সেদিন ছাত্র-জনতা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে এতবড় একটা পরিবর্তন নিয়ে এসেছিলো। কিন্তু দেশের মানুষ যদি সেই শান্তি শৃঙ্খলা ভোগই করতে না পারে, তাহলে এত প্রাণ দিয়ে কি লাভ হলো? 

আমরা জানিন না, প্রশাসন আসলে কাদেরকে খুশি করাতে চাচ্ছেন? মুষ্টিম কিছু চালকদের জন্য হাজার হাজার মানুষের এ কষ্ট কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি করবো, তারা যেন খুব শীঘ্রই এ সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেয়। নারায়ণগঞ্জবাসীকে যেন কিছুটা স্বস্তি দেয়।

এ বিষয়ে টিআই করিম বলেন, ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জে যানজটের যে ভয়াবহতা সৃষ্টি হয়েছিলো বর্তমানে তা কমে আসছে। আশাকরছি, আগামীতে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে। পঞ্চবটি সড়কে ফ্লাইওভারের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। এজন্য এ রুটে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

 এমতাবস্তায় যদি কোন চালক রাস্তা দখল করে অবৈধভাবে গাড়ী পার্কিং করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ইন্ধন থাকতে পারে তৃতীয় পক্ষের”
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০ (ভিডিও)
  • শিক্ষার্থীদের উপর অটো চালকদের হামলা, আহত ২০
  • ফতুল্লায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানে কারখানার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন
  • সোনারগাঁয়ের সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে সিদ্ধিরগঞ্জ বিএনপির চিঠি
  • নারায়ণগঞ্জে বিদেশি পিস্তল-গুলিসহ গ্রেপ্তার ৩
  • সড়ক দুর্ঘটনায় যুবদল নেতা রিয়াদের দুই মেয়ে গুরুতর আহত : দোয়া প্রার্থনা 
  • আড়াইহাজারের সেপটি ট্যাংকির ঝুঁকি ও করণীয় নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা
  • বন্দর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত
  • ফতুল্লায় নির্মাণাধীন ফ্লাইওভারের নিচে অবৈধ পাকিংয়ে তীব্র যানজট, জনদুর্ভোগ চরমে