পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা ঋণপত্র খোলা বাড়িয়েছেন। বিগত ছয় মাসের হিসাবে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আমদানি বেড়েছে। সব মিলিয়ে সরবরাহ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) নিত্যপণ্যের চাহিদা, আমদানি ও আমদানির ঋণপত্র খোলা এবং স্থানীয় উৎপাদন পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া এক প্রতিবেদনে এ কথা বলেছে। ব্যবসায়ীরাও বলছেন, সরবরাহ নিয়ে সমস্যা হবে না। বিশ্ববাজারে অস্থিতিশীলতা নেই। চিন্তার বিষয় হলো মার্কিন ডলারের দাম। ডলারের দাম বাড়লে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।

বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন, আমদানি ও সরবরাহ পরিস্থিতি ঠিক থাকলেও স্থানীয় বাজারে কারসাজির কারণে অনেক সময় পণ্যের দাম বেড়ে যায়। তাই প্রতিটি পর্যায়ে নজরদারি দরকার। অতীতে দেখা গেছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা অন্য কোনো কারণ দেখিয়ে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন কোনো নির্দিষ্ট পণ্যের সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়। বাজারে দাম বেড়ে যায়।

সরকার ভোজ্যতেল, চিনিসহ কয়েকটি পণ্যে যে শুল্কছাড় দিয়েছে, তা যেন সাধারণ মানুষ পান, সেটা নিশ্চিত করার তাগিদও দিয়েছেন বিশ্লেষকেরা।

ব্যবসায়ীরাও বলছেন, সরবরাহ নিয়ে সমস্যা হবে না। বিশ্ববাজারে অস্থিতিশীলতা নেই। চিন্তার বিষয় হলো মার্কিন ডলারের দাম। ডলারের দাম বাড়লে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা থাকে।

আগামী মার্চের প্রথম সপ্তাহে পবিত্র রমজান মাস শুরু হবে। রোজার বাজার ধরার জন্য ঋণপত্র খোলা হবে জানুয়ারি শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত। ফেব্রুয়ারি মাসেই পাইকারি বাজারে রোজার পণ্যের বেচাকেনা শুরু হবে। তার আগে রোজার বাজার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ৯ জানুয়ারি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় ট্যারিফ কমিশন। তাতে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের (২০২৪-২৫) ১ জুলাই থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় অপরিশোধিত চিনি, চাল, মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুরের ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে।

যেমন এবার খেজুর আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৮৬ হাজার মেট্রিক টনের। গত বছর একই সময়ে ৪৮ হাজার টন খেজুরের ঋণপত্র খোলা হয়েছিল; অর্থাৎ খেজুরের ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ৭৯ শতাংশ। এবার ১ লাখ ৮৯ হাজার টন ছোলার ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি। মসুর ডালের ঋণপত্র খোলার হার ২১ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ২ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে।

পেঁয়াজের ঋণপত্র খোলার হার কমেছে। অবশ্য বাজারে এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা কম। কারণ, এখন দেশে উৎপাদিত মুড়িকাটা (কন্দ থেকে উৎপাদিত) পেঁয়াজ বাজারে রয়েছে। তাতে পেঁয়াজের দাম কমেছে। পবিত্র রমজান মাসে হালি (বীজ থেকে উৎপাদিত) পেঁয়াজের ভরা মৌসুম চলবে।

এবার খেজুর আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়েছে ৮৬ হাজার মেট্রিক টনের। গত বছর একই সময়ে ৪৮ হাজার টন খেজুরের ঋণপত্র খোলা হয়েছিল; অর্থাৎ খেজুরের ঋণপত্র খোলার হার বেড়েছে ৭৯ শতাংশ। এবার ১ লাখ ৮৯ হাজার টন ছোলার ঋণপত্র খোলা হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি। মসুর ডালের ঋণপত্র খোলার হার ২১ শতাংশ বেড়ে ২ লাখ ২ হাজার টনে উন্নীত হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য নিয়ে দেখা যায়, ছোলার আমদানি শুরু হয়েছে। এ বছরের ১-১১ জানুয়ারি সময়ে প্রায় ৪০ হাজার টন ছোলা আমদানি হয়েছে। মটর ডাল আমদানি হয়েছে ৫৬ হাজার টন। মসুর ডাল আমদানি হয়েছে ১৩ হাজার টন। ভোজ্যতেল পাম ও সয়াবিন আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার টন। অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে ৪৩ হাজার টন; অর্থাৎ পাইপলাইনের পণ্য আসতে শুরু করেছে।

অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে পণ্যের দাম বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি থেকে কয়েকটি নিত্যপণ্যের শুল্ক-কর কমানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে চাল, ডিম, সয়াবিন তেল, পাম তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আলু ও খেজুর। এরপর পণ্য আমদানির উদ্যোগ বাড়তে থাকে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুল্কছাড়ের কারণে চাল, ভোজ্যতেল, খেজুরসহ নিত্যপণ্যের দাম রমজানে স্থিতিশীল থাকবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে মসুর ও ছোলার মজুত ও সরবরাহ তদারকি করা দরকার বলে মনে করে সংস্থাটি।

ঋণপত্র খোলা মানেই আমদানি নয়। ঋণপত্রের বিপরীতে পণ্য শেষ পর্যন্ত আমদানি হয় কি না, সেদিকে নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে গুটিকয় বড় ব্যবসায়ী বেশি আমদানি ও সরবরাহ করেন। তাঁদের কারও সরবরাহে বিঘ্ন হলেই বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা থাকে। সেদিকেও দৈনিকভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ দরকার।সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম

চিনি ছাড়া ভোজ্যতেল, গম, ছোলা, মসুর ও মটর ডালের মতো পণ্য আমদানি ও প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করে টি কে গ্রুপ। জানতে চাইলে গ্রুপটির পরিচালক শফিউল আতহার প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ছোলার দাম বাড়তি থাকলেও আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে হবে। ভোজ্যতেল, মসুর, মটর ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট হবে না। এ মুহূর্তে বিশ্ববাজারেও কোনো পণ্যের দামে অস্থিতিশীলতা নেই। তিনি বলেন, পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির একমাত্র কারণ হতে পারে ডলারের দাম। ডলারের দাম বেড়ে গেলে পণ্যের আমদানি খরচ বাড়বে। তেমনি বাড়বে শুল্ক–করের পরিমাণও।

ট্যারিফ কমিশনের প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, আমদানি ব্যয় নির্বাহের জন্য বৈদেশিক মুদ্রার মান ধরে রাখা দরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত আগস্টে আমদানিতে ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ছিল ১২০ টাকার মতো। তবে সংকটের কারণে অনানুষ্ঠানিকভাবে ১২৩-১২৪ টাকায়ও ডলার কিনতে হয়েছে আমদানিকারকদের। এখন আমদানিতে আনুষ্ঠানিক দর ১২৩ টাকা। এই দামে আমদানির জন্য ডলার পাওয়া যাচ্ছে।

সার্বিকভাবে ডলার–সংকট কমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার মজুতও বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে, আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী দেশে প্রায় ২ হাজার ১৬৮ কোটি ডলার, যা গত আগস্টের শুরুতে ছিল ২ হাজার ৪৮ কোটি ডলার। এই সময় বকেয়া বিদেশি দেনা একটি বড় অংশ (৩৫০ কোটি ডলার) পরিশোধ করা হয়েছে।

চাল আমদানির সুযোগ ও শুল্ক কমানো হলেও পরিস্থিতি আশাব্যঞ্জক নয়। চাল আমদানি ততটা বাড়ছে না। এদিকে ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের দাম বাড়ছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি চার টাকা।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, ঋণপত্র খোলা মানেই আমদানি নয়। ঋণপত্রের বিপরীতে পণ্য শেষ পর্যন্ত আমদানি হয় কি না, সেদিকে নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে গুটিকয় বড় ব্যবসায়ী বেশি আমদানি ও সরবরাহ করেন। তাঁদের কারও সরবরাহে বিঘ্ন হলেই বাজারে অস্থিরতা তৈরির আশঙ্কা থাকে। সেদিকেও দৈনিকভিত্তিতে পর্যবেক্ষণ দরকার।

গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, গত বছরের তুলনায় এবার ডলারের দাম বেশি এবং বিশ্ববাজার চড়া। ফলে পণ্যের আমদানি ব্যয় কিছুটা বেশি পড়বে। অন্য কোনো কারণে যাতে দাম না বাড়ে, সেটি নিশ্চিত করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন ‘বরাদ্দ হয়নি’

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় গত জুলাই মাসে ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) উপকারভোগীদের জন্য ৭৭ দশমিক ৮ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রক্রিয়া অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ চাল খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) একজন ডিলার (পরিবেশক) তুলেও নেন। তবে ওই মাসে টিসিবির অন্য পণ্য পেলেও চাল পাননি বলে অভিযোগ করেছেন উপকারভোগীরা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মহম্মদপুরের ৮ ইউনিয়নে টিসিবির উপকারভোগী কার্ডধারী আছেন ১৫ হাজার ৫৬৭ জন। এসব উপকারভোগী নিজেদের কার্ড দেখিয়ে প্রতি মাসে একবার ইউনিয়নের টিসিবির নিয়োগ করা ডিলারের কাছ থেকে বাজারের চেয়ে কম মূল্যে তেল, চিনি, ডাল ও চাল কিনতে পারেন। গত জুলাইয়ে ডিলারদের কাছ থেকে তেল, চিনি ও ডালের একটি প্যাকেজ কিনতে পেরেছেন তাঁরা। ওই মাসে চালের বরাদ্দ আসেনি বলে জানানো হয় কার্ডধারীদের।

মহম্মদপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে পাওয়া নথিতে দেখা গেছে, গত ৩০ জুলাই উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মজনুর রহমান স্বাক্ষরিত দুইটি বিলি আদেশে (ডিও) উপজেলার হোসেনিয়া কান্তা ঋতু নামে একজন ওএমএস ডিলারের অনুকূলে ৭৭ দশমিক ৮৩৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ওই দিনই মহম্মদপুর ও বিনোদপুর খাদ্যগুদাম থেকে এ চাল তুলেও নেওয়া হয়।

সেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া যায়। বাজার থেকে ওই চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা লাগে। জুলাই মাসে চাল না পাওয়ায় কিছুটা কষ্টই হইছে।শরিফা, টিসিবির কার্ডধারী, রাজাপুর ইউনিয়ন

টিসিবি ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন টিসিবি উপকারভোগীদের চাল ছাড়া অন্য পণ্য সরাসরি তাঁদের নিয়োগ করা ডিলারদের কাছে সরবরাহ করে। চালের বরাদ্দ দেওয়া হয় খাদ্য বিভাগ থেকে। এ অনুযায়ী উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে প্রথমে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ করা ওএমএস বা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারদের অনুকূলে ২৬ টাকা কেজি দরে চাল বরাদ্দ দেয়। সেই চাল ওই ডিলারদের কাছ থেকে ২৮ টাকা কেজি দরে নেন টিসিবির ডিলাররা। এরপর তাঁরা ৩০ টাকা কেজি দরে ওই চাল উপকারভোগীদের কাছে বিক্রি করেন।

উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের পারুল নামে টিসিবির এক উপকারভোগী ১ সেপ্টেম্বর জানান, আগস্ট মাসে চাল, ডাল, তেল ও চিনির প্যাকেজ পেলেও জুলাই মাসে তাঁদের চাল ছাড়া অন্য তিন ধরনের পণ্যের প্যাকেজ দেওয়া হয়েছিল। জুলাই মাসে তাঁদের জানানো হয় চাল বরাদ্দ হয়নি।

বিষয়টি জানতে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে টিসিবির নিয়োগ করা ৮ জন ডিলারের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। তাঁদের মধ্যে মহম্মদপুর সদর, নহাটা, পলাশবাড়ীয়া, বালিদিয়া, রাজাপুর ও বাবুখালী ইউনিয়নের ডিলার জানিয়েছেন, জুলাই মাসে তাঁদেরকে চাল দেওয়া হয়নি। নহাটা ও রাজাপুর ইউনিয়নের ডিলার মিলন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মিলন ঘোষ ৪ সেপ্টেম্বর বলেন, ‘জুলাই মাসে আমাদের বলা হইছিল চাল বরাদ্দ নেই। এ কারণে চাল ছাড়া অন্য পণ্যগুলো বিক্রি করেছি। তবে অ্যাপে দেখাইছিল চাল। কিন্তু আমরা পাইনি।’

হোসনিয়া কান্তা উপজেলার বিনোদপুর এলাকার ওএমএস ডিলার। গত ২৫ জুলাই লটারির মাধ্যমে তিনিসহ তিনজন উপজেলায় ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পান

অবশ্য বিনোদপুর ও দীঘা ইউনিয়নের দুই ডিলার দাবি করেছেন তাঁরা অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে চালও কার্ডধারীদের কাছে বিক্রি করেছেন। তবে দুই ইউনিয়নের অন্তত ১০ জন উপকারভোগীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে তাঁরা কেউই চাল পাননি। এর মধ্যে বিনোদপুর বাজারের একজন ফল ব্যাবসায়ী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘জুলাই মাসে ডিলার জানাইছিল চাল ফুরায় গেছে।’

হোসনিয়া কান্তা উপজেলার বিনোদপুর এলাকার ওএমএস ডিলার। গত ২৫ জুলাই লটারির মাধ্যমে তিনিসহ তিনজন উপজেলায় ওএমএস ডিলার হিসেবে নিয়োগ পান বলে খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে হোসেনিয়া কান্তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে সরবরাহ করা তাঁর মুঠোফোনে সোমবার যোগাযোগ করা হলে একজন ধরে জানান, ওই নম্বর হোসেনিয়া কান্তা ঋতু নামে কেউ ব্যবহার করেন না।

জানতে চাইলে টিসিবির ঝিনাইদহ ক্যাম্প অফিসের উপপরিচালক আকরাম হোসেন সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিসিবির চাল খাদ্য বিভাগ থেকে সরবরাহ করা হয়। আর বিতরণ কার্যক্রম তদারকির জন্য প্রতিটি উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটি রয়েছে। যেখানে প্রতি ইউনিয়নে একজন ট্যাগ অফিসার আছেন, যিনি এগুলো তদারকি করেন।’

জেলার কয়েকজন চাল ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৬ টাকা কেজি দরে কেনা এসব চাল বাজারে প্রায় ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। উপকারভোগীদের কাছে তা ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করার কথা। এ হিসাবে উপকারভোগীদের ফাঁকি দিয়ে এ চাল বাজারে বিক্রি করতে পারলে কেজিতে ২২ থেকে ২৪ টাকা লাভ হয়।

চাল না পাওয়ার বিষয়ে কেউ কোনো অভিযোগ করেননি বলে জানিয়েছেন মহম্মদপুরের ইউএনও শাহীনুর আক্তার। সোমবার মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাল দেওয়া হয়নি এখন পর্যন্ত এমন অভিযোগ কেউ দেয়নি। খাদ্য অফিস থেকে আমি যত দূর জানতে পেরেছি তাতে সবকিছু দেওয়া হয়ে গেছে। বরাদ্দ থাকলে তা আটকে রাখার সুযোগ নেই। তারপরও কোনো অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখব।’  

হঠাৎ এক মাসে চাল না পাওয়ায় বিপাকে পড়েন উপকারভোগীরা। রাজাপুর ইউনিয়নের শরিফা নামের টিসিবি কার্ডধারী এক নারী বলেন, ‘সেখানে ৩০ টাকা কেজিতে চাল পাওয়া যায়। বাজার থেকে ওই চাল কিনতে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা লাগে। জুলাই মাসে চাল না পাওয়ায় কিছুটা কষ্টই হইছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রথম চালানে ৩৭ হাজার ৪৬০ কেজি ইলিশ গেল ভারতে
  • তুরস্কের সঙ্গে উত্তেজনা: সাইপ্রাসকে ‘এস–৩০০’–এর চেয়েও ভয়ংকর ‘বারাক এমএক্স’ দিল ইসরায়েল
  • গুদামে খাওয়ার অনুপযোগী চাল নিয়ে রাজশাহী খাদ্য বিভাগে তোলপাড়, ৮ তদন্ত কমিটি
  • ‘কেনতো পারমু না, হেইতে ইলশার সুরতটা দেইখ্যা যাই’
  • ৭৭ মেট্রিক টন চাল তুলে নিয়েছেন ডিলার, উপকারভোগীরা জানেন ‘বরাদ্দ হয়নি’
  • বাংলাদেশ ব্যাংক এক দিনে ২৬ ব্যাংক থেকে ৩৫ কোটি ডলার কিনল কেন
  • নিলামে ৩৫৩ মিলিয়ন ডলার কিনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক
  • যুক্তরাজ্য থেকে আসছে মাদক এমডিএমএ, গ্রেপ্তার ৫
  • চাপে পড়ে নয়, অনুরোধে ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমোদন: ফরিদা আখতার
  • ভোটের সরঞ্জাম আসছে ইসিতে