রাতে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ
Published: 18th, January 2025 GMT
ফরিদপুরের নগরকান্দায় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। শুক্রবার রাতে সংঘর্ষ শুরু হলেও শনিবার সকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে কয়েক দফায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে অনেককে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও নগরকান্দা উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে উপজেলার ফুলসুতি ইউনিয়নের সলিথা গ্রামবাসীর সঙ্গে নগরকান্দা পৌরসভার মিরাকান্দা গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এসময় গ্রামবাসীরা দেশীয় অস্ত্র রামদা, ঢাল সরকি, বল্লম ব্যবহার করেন। এছাড়া বেশ কয়েকটি দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সলিথা মাদরাসায় শুক্রবার রাতে ওয়াজ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এসময় মিরাকান্দা ও সলিথা গ্রামবাসীর মধ্যে পূর্বশত্রুতা ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাতে ওয়াজ মাহফিল এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে শুক্রবার রাতেই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় থানা পুলিশ উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে শনিবার সকালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দুই গ্রামবাসী আবার সংঘর্ষে জড়ায়।
দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে থানার ওসিসহ ৬ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি সফর আলী।
সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। তবে নিরাপত্তা জোরদারে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে দুই গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে পৃথক দুটি পরিবহনে আগুন দিয়ে নাশকতার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ৪০ জন আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও দুষ্কৃতিকারীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
হামলাকারীরা দলীয় স্লোগান ও রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দিয়ে পরিবহনে আগুন ধরিয়ে দেয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং পুলিশ জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিয়েছে।
জানাগেছে, গত শনিবার (১৫ নভেম্বর) ভোরে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
এরআগে , গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে। পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়।
দুটি নাশকতার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় পৃথক দুটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং জড়িতদের শনাক্তে আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা ও প্রত্যক্ষদর্শীর সাথে কথা বলছে বলে জানা গেছে।
মিনিবাসে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় দায়েরকৃত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, শনিবার ভোরে মিনিবাস চালক সোহাগ মিয়া (৩৮) স্থানীয়দের মাধ্যমে জানতে পারেন যে নাফ পরিবহন নামের একটি মিনিবাস (ঢাকা-মেট্রো-জ-১১-০৩৩৮) ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ অফিসের মেইন গেটের সামনে পার্কিং করা অবস্থায় দুষ্কৃতিকারীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে।
তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখেন, বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। ভুক্তভোগী চালক দাবি করেন, এতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। পরে হাইওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পুড়ে যাওয়া মিনিবাসটি জব্দ করে হেফাজতে নেয়।
অন্যদিকে সিএনজি চালক মো. বাবুল মিয়া (৫৪) অভিযোগ করেন, গত ১২ নভেম্বর রাতে তিনি দুই যাত্রী নিয়ে জালকুড়ি এলাকায় পৌঁছালে ২০/২৫ জন ব্যক্তি রাস্তা অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এসময় তারা জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকে।
পরবর্তীতে তারা তাঁর সিএনজিতে (ঢাকা-থ-১১-৯৯২১) পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এতে প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান। পরে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে থানায় নিয়ে আসে।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, আমরা প্রতিটি নাশকতার ঘটনা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতোমধ্যে পৃথক দুটি মামলা রুজু করা হয়েছে এবং তদন্ত দ্রুত গতিতে চলছে। জননিরাপত্তা বিঘ্নিত করে যারা এই ধরনের জঘন্য কাজ করছে, তারা যেই হোক না কেন, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।