আমি ন্যাচারালি এভাবেই খেলি- ২৯ ছক্কার রহস্য নিয়ে তানজিদ
Published: 22nd, January 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে তানজিদ হাসান তামিমের রানের চাকা ছুটছেই। বুধবার (২২ জানুয়ারি, ২০২৫) চিটাগং কিংসের বিপক্ষে ৯০ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলেছেন ঢাকা ক্যাপিটালসের ওপেনার। তার ব্যাটে ভর করে চিটাগংকে হারিয়ে তৃতীয় জয়ের স্বাদও পেয়েছে ঢাকা। ৫৪ বলে অপরাজিত ৯০ রানের ইনিংস সাজাতে ৩ চার ও ৭ ছক্কা হাঁকান তানজিদ।
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে বিপিএলের এক আসরে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড এখন তানজিদের। ছাড়িয়ে গেছেন তিনি তাওহীদ হৃদয়কে। এবারের আসরে ১০ ম্যাচে তানজিদের ছক্কা ২৯টি। গত বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে ১৪ ম্যাচে ২৪টি ছক্কা মেরেছিলেন হৃদয়। এক বিপিএলে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছক্কার কীর্তি ছিল সেটিই।
নিজের ছক্কার এই অর্জনকে তানজিদ খুব বড় করে দেখছেন না। ২৯ ছক্কার রহস্য জানাতে গিয়ে নিজের সহজাত ব্যাটিং সামর্থ্যকে সামনে আনলেন, ‘‘আমি ন্যাচারালি এভাবেই খেলি। অনুশীলনে চেষ্টা করি নিজের যেটা শক্তির জায়গা সেটা নিয়ে কাজ করার এবং খেলায় যে ভুলগুলো করি সেগুলো নিয়ে কাজ করার। তো এটার (ছক্কার) কোনো রহস্য নেই আমি আমার স্বাভাবিক খেলা খেলি।’’
আরো পড়ুন:
উসমান-বিনুরার আচমকা বাদ পড়া নাকি অন্য কিছু!
তানজিদের ব্যাটে হেসে খেলে ঢাকার চিটাগং জয়
ছক্কার রেকর্ডে তানজিদের সামনে আছেন এখন কেবল ক্রিস গেইল। ২০১৭ আসরে ১১ ম্যাচে ৪৭টি ছক্কা মেরেছিলেন ক্যারিবীয়ান তারকা। রংপুর রাইডার্সের জার্সিতে সেবার বিপিএলের সবগুলো ম্যাচ খেলেছিলেন গেইল। এবার কি গেইলের রেকর্ড ভাঙবেন তানজিদ। কাজটা খুব কঠিন। কেননা ঢাকার প্লে’অফের আগে ম্যাচ বাকি দুইটি। প্লে’অফে সুযোগ হলেও ঢাকা কতদূর যেতে পারে তা বলা মুশকিল।
তবে রেকর্ড নিয়ে তানজিদের কোনো মাথা ব্যথা নেই কথায় বোঝা গেল, ‘‘আমি কখনই এভাবে চিন্তা করিনি। আমাদের সামনে আছে আর দুইটা ম্যাচ, সেগুলোতে কিভাবে ভালোভাবে শেষ করতে পারবো সেটাই পরিকল্পনায় রয়েছে, আমরা সবাই সেইভাবেই চিন্তা করছি। যদি এর মধ্যে হয়ে যায় (রেকর্ড) হয়ে যাবে। তবে আমি স্বাভাবিকভাবে যে পরিকল্পনায় খেলি সেভাবেই খেলার চেষ্টা করবো।’
ঢাকা পরবর্তী রাউন্ডে যাবে কি না নিশ্চিত নয়। নিজেদের হাতে থাকা শেষ দুই ম্যাচ নিয়েই চিন্তা তাদের, ‘‘সত্য কথা বলতে শেষ দিকে এসে এখন এগুলো (পরবর্তী রাউন্ডে যাওয়া) নিয়ে চিন্তা করছি না। আমরা শুধু ফোকাস করতে চাই সামনের ম্যাচগুলোতে। সামনের দুইটা ম্যাচ যদি আমরা ভালোভাবে শেষ করতে পারি হয়তোবা সুযোগ হতেও পারে। তবে এটা ভেবে আমরা আলাদা করে চাপ নিতে চাইনা কারণ আমাদের শুরুটা ভালো হয়নি। শুধু চেষ্টা থাকবে শেষ দুইটা ম্যাচ ভালোভাবে শেষ করার।’’
চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ক র ক ট র কর ড র কর ড ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে।
গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা।
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়।
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।