ঘন কুয়াশার কারণে আজ বৃহস্পতিবার সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ সাতটি ফ্লাইট নিদ্দিষ্ট সময়ে উঠানামা করতে পারেনি। ফ্লাই ডিলে হওয়ার কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিমানবন্দরে বসে থাকতে হয়েছে যাত্রীদের। 

বিভিন্ন এয়ারলাইন্স সূত্রে জানা গেছে, অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের মধ্যে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারের দুটি ফ্লাইট ছিল। এসব ফ্লাইট সিলেট থেকে ছেড়ে যায় ১২টা ১০ ও ১২টা ৩০ মিনিটে। বাংলাদেশ বিমানের আরও দুটি ফ্লাইট ছিল সকাল ৯টা ও সাড়ে ৯টায়। এ দুটি ফ্লাইট সিলেট ছাড়ে ১১টা ৫০ ও ১২টা ৩০ মিনিটে। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের মধ্যে লন্ডন থেকে সিলেটগামী বিজি-২০২ ফ্লাইট ১০টা ১৫ মিনিটে আসার কথা থাকলেও ওসমানীতে অবতরণ করে ১টা ১০ মিনিটে। 

সিলেট-ম্যানচেষ্টার বিজি-২০৭ বিমানটি ১২টা ১০ মিনেটে উড্ডয়নের কথা থাকলেও ২টার দিকে বিমানবন্দর ছাড়ে। জেদ্দা থেকে সিলেটগামী বিজি-২৩৫ বিমানটি সাড়ে ১০টায় অবতরণের কথা থাকলেও বিকাল ৪টার দিকে বিমানবন্দরে অবতরণ করে বলে জানা গেছে। 

অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক এসব ফ্লাইটের এসব যাত্রীদের মধ্যে কেউ ৪ ঘণ্টা কেউবা ২ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেছেন। এসব যাত্রীদের আবার অনেকে হজযাত্রী ছিলেন। কেউবা সিলেট-ঢাকা হয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফ্লাইট ডিলে হওয়ার কারণে দুর্ভোগের শিকার হন যাত্রীরা। সিলেট থেকে ঢাকায় যাওেয়ার পর তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে, জানা যায়নি।

সিলেটের বালাগঞ্জের বিদেশযাত্রী শাহিন জানান, তার বিকেল ২টায় ঢাকা থেকে বাহরাইনের ফ্লাইট ছিল। সেজন্য সকাল সাড়ে ৮টার অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে ঢাকায় যাওয়ার জন্য বিমানবন্দরে আসেন। কিন্তু কুয়াশার কারণে দুপুর হয়ে গেছে সিলেট বিমানবন্দরে। যদি ঢাকার ফ্লাইট ডিলে হয়, তাহলে বিদেশ যেতে পারবেন না।

ওসমানী বিমানবন্দরের পরিচালক হাফিজ আহমদ সমকালকে জানিয়েছেন, প্রত্যেক ফ্লাইট ডিলে হয়েছে। কয়েক ঘণ্টা পর আবার ফ্লাইট হয়েছে। আবহাওয়ার কারণে বিমানের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। 

এদিকে দুপুরের পর থেকে বিমান চলাচল স্বাভাবিক হলেও আজ বৃহস্পতিবার সারাদিনই সুর্য়ের দেখা মেলেনি সিলেটে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে আকাশ। বিকেল ৫টা পর্যন্ত কুয়াশা দূর হয়নি সিলেটের আকাশ থেকে। সিলেটে আজকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ওসম ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ 

সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়। 

মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়। 

ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে। 

এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”

সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে। 

পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।” 

বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”

তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”

ঢাকা/ইমরান/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ