স্ট্রোক করে বাসায় পড়ে ছিলেন প্রকৌশলী, ৯৯৯-এ কল পেয়ে উদ্ধার
Published: 28th, January 2025 GMT
রাজধানীর খিলগাঁওয়ে বাসায় স্ট্রোক করে অবশ হয়ে পড়ে ছিলেন এক বৃদ্ধ। তাঁর কোনো সাড়া না পেয়ে সোমবার বিকেলে জাতীয় জরুরি সেবা-৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি জানান প্রতিবেশী। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। অসুস্থ ব্যক্তি বিআইডব্লিউটিএর অবসরপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী বলে জানা গেছে।
৯৯৯-এর গণমাধ্যম ও জনসংযোগ কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ার সাত্তার বলেন, সোমবার বিকেলে খিলগাঁওয়ের গোড়ান সিদ্দিকবাজার এলাকার হাড়ভাঙ্গা মোড় থেকে একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেন। তিনি জানান, তাদের প্রতিবেশী এক অসুস্থ ব্যক্তি একা থাকেন। রোববার থেকে তার কোনো সাড়া-শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। গতকালও তারা বৃদ্ধের বাসার দরজায় অনেকক্ষণ নক করেছেন কিন্তু সাড়া পাননি। কলার জরুরি পুলিশি সহায়তার জন্য ৯৯৯ এর কাছে অনুরোধ জানান।
কলটি রিসিভ করেছিলেন ৯৯৯ কলটেকার কনস্টেবল জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে কলার ও উদ্ধার সংশ্লিষ্ট পুলিশ দলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন ৯৯৯ ডেসপাচার এসআই মহিউদ্দীন মুন্না।
জনসংযোগ কর্মকর্তা জানান, ৯৯৯ থেকে সংবাদ পেয়ে খিলগাঁও থানার একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দরজা ভেঙে অসুস্থ বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, স্ট্রোক করার কারণে তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন এবং নড়াচড়া করতে পারছিলেন না। পুলিশ দল যাওয়ার পর তিনি উঠে বসেন কিন্তু নড়াচড়া করতে পারছিলেন না।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জানমালের নিরাপত্তার প্রশ্নে আপস নয়
ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপকূলীয় মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে যায় শ্বাসমূলীয় (ম্যানগ্রোভ) বন। সেই রক্ষাঢাল ধ্বংস করে গুটিকয় ব্যক্তি যখন গোটা জনগোষ্ঠীকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়, এর থেকে ভয়াবহ নৈরাজ্যের বার্তা আর কী হতে পারে। কেননা প্রভাবশালী নামে পরিচিত এসব ব্যক্তি এই অপরাধ যে সরকারি সব কর্তৃপক্ষের অজান্তে করেছেন, তা তো নয়। সবার চোখের সামনেই খননযন্ত্র এনে বন সাবাড় করে মাটি খুঁড়ে মাছ চাষের ঘের তৈরি করছেন।
প্রথম আলোর খবর জানাচ্ছে, বরগুনার তালতলী উপজেলায় আন্ধারমানিক নদের দুই তীরে প্রায় ২০ কিলোমিটার বাঁধের ঢালে ৫০টির বেশি ঘের গড়ে তোলা হয়েছে। নতুন করে আরও কিছু ঘের তৈরি করা হচ্ছে। এতে শুধু ম্যানগ্রোভ বনই উজাড় হচ্ছে না, সঙ্গে বাঁধও হুমকির মুখে পড়েছে। অথচ আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, বাঁধের ২০ ফুটের মধ্যে পুকুর, দিঘি বা ঘের নির্মাণ করা যাবে না।
প্রশ্ন হচ্ছে, এই আইন বাস্তবায়নে বন বিভাগ, পাউবো ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন কার্যকর কী পদক্ষেপ নিয়েছে? তাহলে কি আমরা ধরে নেব, ভূতটা শর্ষের ভেতরেই বিদ্যমান? ঘের তৈরির সঙ্গে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় স্থানীয় মানুষেরা কিছু বলতে পারেন না। তাঁদের অভিযোগ, নেপথ্যে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
যদিও বন বিভাগ যথারীতি দায় অস্বীকার করে বলেছে, তারা জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে। কিন্তু বন বিভাগের তথ্যই প্রমাণ করছে যে তারা যে শম্বুকগতিতে ব্যবস্থা নিচ্ছে, তাতে প্রক্রিয়াটা শেষ হতে অনন্তকালও লেগে যেতে পারে! কেননা, ছয়জন ঘেরমালিকের বিরুদ্ধে তারা মামলা করেছে আর কয়েকজনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।
বন উজাড় করে ঘের কেটে যাঁরা ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করেছেন, তাঁদের যুক্তি হলো জমি তাঁদের ব্যক্তিমালিকানাধীন। আবার কেউ যুক্তি দিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে তাঁরা বন্দোবস্ত পেয়েছেন। কিন্তু নদীর চরের জমি কীভাবে ব্যক্তিমালিকানাধীন হয়? সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, লাখ লাখ মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা যেখানে জড়িত, সেখানে আইনি যুক্তির বাইরে আর কোনো যুক্তিতর্ক কতটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
আমরা মনে করি, বন বিভাগ, পাউবো ও স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের নিষ্ক্রিয় ভূমিকার কারণেই তালতলীর উপকূলীয় এলাকায় ভয়াবহ বিপর্যয়ের ঝুঁকি তৈরি করেছে। প্রভাবশালীরা যে দলের হোক না কেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। আন্ধারমানিক নদের ঢালের অবৈধ ঘেরগুলো দ্রুত উচ্ছেদ করে সেখানকার ভূগঠনকে আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া জরুরি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস নয়।