জাবিতে আবাসিক হলের ছাদ থেকে পড়ে শ্রমিক নিহত
Published: 4th, February 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মোশাররফ হোসেন হলে ইন্টারনেট সংযোগের কাজ করার সময় ছাদ থেকে পড়ে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন।
নিহত শ্রমিকের নাম প্রীতম (১৮)। তিনি ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মাস্টারনেটের কর্মরত ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মীর মোশাররফ হোসেন হলের এ ব্লকের পশ্চিম পাশে নতুন স্থাপিত আনসার ক্যাম্পে ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়ার কথা ছিল। রাত ১১টার দিকে আনসার সদস্য রবিউলকে ফোন করে সংযোগ দিতে এসেছিলেন প্রীতম। রবিউল তাকে নিচতলার কক্ষে রাউটার ও সংযোগের স্থান দেখিয়ে দিয়ে চলে যান। পরে ইন্টারনেটের তার টেনে নিয়ে আসার জন্য এ ব্লকের ছাদে উঠেন প্রীতম
ছাদের সর্বশেষ কোণায় রেলিংয়ের পাশ দিয়ে অতিক্রম করার সময় ইট খসে পড়ে। এতে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যান বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে তাকে গুরুতর আহত ও অচেতন অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রীতমের সহকর্মী লিংকন বলেন, “আমরা রাত ১০টা থেকে একসঙ্গে কাজ করছিলাম। রাত ১১টার দিকে আনসারের ক্যাম্প থেকে ফোন আসলে প্রীতম ওইদিকে কাজ করতে যায়। পরে দেখি দেড় -দুই ঘণ্টা হয়ে গেলে সে আসছে না এবং ফোন দিলেও ধরছে না।”
তিনি বলেন, “আমি সেখানে গিয়ে আশেপাশে আনসারদের জিজ্ঞেস করি- যে ক্যাম্প কোথায়। তাদের দেওয়া ঠিকানা অনুযায়ি আমি ছাদে গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ। আশেপাশে অনেক খোঁজাখুঁজি করে দেখি সে নিচে পড়ে আছে। প্রথমে আমি ভাবছিলাম হয়তো মারা গেছে। কিন্তু ছাত্র ভাইরা বলল, বেঁচে আছে। পরে ওনারাই অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে গেছে।”
মীর মশাররফ হলের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রাহাত বলেন, “সন্ধ্যা থেকে ওরা হলে ইন্টারনেটের কাজ করছে। হঠাৎ করে রাত ১টার দিকে মাস্টারনেটের মালিক আমাকে ফোন দিয়ে বলে যে, আপনাদের হলে কাজ করতে গিয়ে আমার একটা ছেলে মারা গেছে; একটু দেখেন। পরে আমি হলের পেছনে এসে দেখি ও পড়ে আছে। প্রথমে মৃত ভেবে কেউ সামনে যাইনি।”
তিনি বলেন, “আশেপাশে আরো কয়েকজনকে ডেকে তাকে ধরে দেখি পালস আছে। তার মুখ দিয়ে প্রচুর ফেনা বের হচ্ছিল। আমরা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে এনাম মেডিকেলে নেওয়ার ব্যবস্থা করি।”
৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের শাবাব বলেন, “স্বাভাবিকভাবে ছাদ থেকে পিছলে পড়লে দেয়ালের খুব কাছে থাকার কথা ছিল। কিন্তু অন্তত ১০ ফিট দূরে সে চিৎ হয়ে পড়ে ছিল। কোনভাবে এত দূরে তো পড়ার কথা না। আমরা বিষয়টা নিয়ে সন্দিহান।”
তবে আনসার সদস্য রবিউল ইসলাম বলেন, “আমি রাত ১০টা থেকে প্রকৌশল অফিসে ডিউটি করছিলাম। ১১টার দিকে ইন্টারনেটের লোক আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, আপনাদের এখানে কাজ করতে আসছি। আমি তাকে রাউটার ও অন্যান্য জিনিস দিয়ে আবার ডিউটিতে চলে যাই। পরে ছাত্র ভাই ও আনসারদের ফোন পেয়ে আবার আসছি।”
এ ব্যাপারে জাবি অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান বলেন, “আমি রাত ১টার দিকে খবর পেয়ে কোয়ার্টার থেকে বের হই। ছাত্ররা তখন তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখনই প্রক্টরিয়াল টীম ও নিরাপত্তা কর্মীরা আসেন। প্রাথমিকভাবে, ছাদের রেলিংয়ের খসে যাওয়া ইট দেখে ধারণা করছি, তার টানতে গিয়ে সে হয়তো পা পিছলে পড়ে মারা গেছে।”
সাভারের এনাম মেডিকেলের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক বলেন, “আমাদের এখানে তাকে রাত দেড়টার দিকে নিয়ে আসে। আমরা জরুরি বিভাগে ইসিজি করে তাকে মৃত বলে নিশ্চিত হই। তিনি এখানে আসার অন্তত ৩০ মিনিট আগে মারা গেছেন।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক জ কর আনস র
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপির প্রার্থী মান্নানের গণসংযোগ
নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নানের ধানের শীষের গণসংযোগকে কেন্দ্র করে সিদ্ধিরগঞ্জ ২নং ওয়ার্ড এলাকায় সৃষ্টি হয় জনস্রোত।
উৎসবমুখর পরিবেশে হাজারো নারী-পুরুষ ফুল ছিটিয়ে ও ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে প্রার্থী মান্নানকে স্বাগত জানান।
গণসংযোগজুড়ে কর্মী-সমর্থকদের শ্লোগান ‘ভোট দিব কিসে ধানের শীষে’ বারবার ধ্বনিত হতে থাকে। এতে পুরো এলাকাজুড়ে আনন্দ উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে।
রবিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল চারটায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মৌচাক এলাকা থেকে গণসংযোগের সূচনা হয়। পরে মিজমিজি পশ্চিমপাড়া, দক্ষিণ পাড়া, কান্দাপাড়া ও মধ্য কান্দাপাড়া হয়ে সাহেবপাড়ায় পৌঁছে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
এদিকে গণসংযোগকে সফল করতে দুপুর থেকেই মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আওতাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ, সদর থানা, বন্দর থানা এবং বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীরা ব্যানার–ফেস্টুন, সাউন্ড সিস্টেম, ঢাক-ঢোল ও বিশাল মোটরসাইকেল গাড়িবহরসহ পৃথক পৃথক মিছিল নিয়ে মৌচাক স্ট্যান্ডে জড়ো হন। পরে তারা গণসংযোগে যোগ দিয়ে পুরো কার্যক্রমকে আরও উৎসবমুখর করে তোলেন।
এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন—নারায়ণগঞ্জ মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাখাওয়াত ইসলাম রানা, সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক রিপন সরদার, সদস্য সচিব রেদোয়ান হোসেন পাপ্পু, বন্দর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সোহেল প্রধান, বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মোশারফ হোসেন মশুসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ।