যশোরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সদস্যসচিবের পদ স্থগিত
Published: 4th, February 2025 GMT
কমিটি গঠনের দুই মাসের মাথায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা সদস্যসচিব জেসিনা মোর্শেদ প্রাপ্তির পদ স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের সই করা এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোর জেলা আহ্বায়ক রাশেদ খান।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা কমিটি গঠন সংক্রান্ত সাংগঠনিক নীতি বহির্ভূত কর্মকাণ্ড নজরে আসে কেন্দ্রীয় কমিটির। যার পরিপ্রেক্ষিতে জেসিনার পদটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত কমিটির সামনে জেসিনাকে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
তদন্ত কমিটির ৩ সদস্য হলেন- আশরেফা খাতুন, ওয়াহিদুজ্জামান ও আকরাম হোসাইন রাজ। তারা সবাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের এক নেতা বলেন, সর্বশেষ জেসিনার বিরুদ্ধে ঝিকরগাছার কমিটি গঠন নিয়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে যশোর জেলার ৫৮ জন নেতার সই করা একটি লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় কমিটিতে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি যশোরে তদন্ত আসেন দুই কেন্দ্রীয় নেতা।
এদিকে পদ স্থগিত হওয়া সদস্যসচিব জেসিনা সাংবাদিকদের জানান, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। যেহেতু কেন্দ্রীয় কমিটি তাকে হাজির হওয়ার জন্য বলেছে তিনি সেখানে জবাব দেবেন।
গত ২৬ নভেম্বর রাশেদ খানকে আহ্বায়ক এবং জেসিনাকে সদস্যসচিব করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১০১ সদস্য বিশিষ্ট যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে ৯ নেতা পদত্যাগ করেন ছয় মাসের জন্য অনুমোদনপ্রাপ্ত এ কমিটি থেকে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সদস যসচ ব র জন য কম ট র তদন ত সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
পুতিন দিল্লি পৌঁছানোর আগেই ভারত-রাশিয়ার সামরিক চুক্তি অনুমোদন
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আহ্বানে ২৩তম ভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ বৃহস্পতিবার দিল্লি আসছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তার আগেই রাশিয়ার পার্লামেন্ট ভারতের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এক সামরিক চুক্তির অনুমোদন দিয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ ওই চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের সামরিক বাহিনী একে অপরকে লজিস্টিক্যাল সাপোর্ট দেবে, অর্থাৎ এক দেশের বাহিনী অপর দেশে গিয়ে সামরিক পরিকাঠামো ব্যবহার করতে পারবে।
আরো পড়ুন:
ইউক্রেন চুক্তি চূড়ান্ত করতে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ট্রাম্পের দূত
ইউক্রেনের কৌশলগত শহর পোকরোভস্ক দখলের দাবি রাশিয়ার
পুতিন দুই দিনের সফরে ভারতে আসছেন। এই সফরে সামরিক, বাণিজ্য ও খনিজ তেলের বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে পুতিনের সফর শুরুর ঠিক আগেই তার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার ক্ষেত্রে রাশিয়া কতটা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে, তা নির্ভর করছে ভারত কতটা এগিয়ে আসতে চায়, তার ওপর।
দুই দেশের মধ্যে ‘রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট’ বা ‘রেলোস’ চুক্তি সই হয়ে গিয়েছিল গত ১৮ ফেব্রুয়ারি। তবে সেটি মঙ্গলবার রাশিয়ার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ‘স্টেট ড্যুমা’র অনুমোদন পেল।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, গত সপ্তাহে চুক্তিটি ‘ড্যুমা’র কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন।
পিটিআই জানিয়েছে, ‘স্টেট ড্যুমা’র স্পিকার ভ্যাচেস্লাভ ভোলোদিন সভার শুরুতে তার ভাষণে ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ককে ‘সার্বিক এবং কৌশলগত’ বলে বর্ণনা করেন এবং এই সম্পর্ককে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় তার দেশ, সেটাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, “যে চুক্তির অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে, তা পারস্পরিক বোঝাপড়া আরো বাড়াবে এবং নিঃসন্দেহে আমাদের সম্পর্ক আরো উন্নত করবে।”
ভারত আর রাশিয়ার মধ্যে যে রেসিপ্রোকাল এক্সচেঞ্জ অফ লজিস্টিক সাপোর্ট বা ‘রেলোস’ চুক্তি হয়েছে, তা মূলত এক দেশ অপর দেশটিতে সামরিক বাহিনীর সদস্য, সরঞ্জাম, যুদ্ধ জাহাজ, সামরিক বিমান পাঠানোর কার্যপদ্ধতি।
শুধু যে বাহিনীর সদস্যদের অথবা সরঞ্জাম একটি দেশ অপর দেশে পাঠাতে পারবে ‘রেলোস’ চুক্তি অনুযায়ী, তা নয়। অপর দেশটিতে গিয়ে সেখানকার সামরিক পরিকাঠামোও ব্যবহার করা যাবে।
যৌথ মহড়া, প্রশিক্ষণ, মানবিক সহায়তা এবং ত্রাণ ও উদ্ধার কাজের ক্ষেত্রে এই চুক্তি অনুযায়ী সামরিক সহায়তা করবে একে অপরকে। ‘স্টেট ড্যুমা’র ওয়েবসাইটে রাশিয়ার মন্ত্রিসভাকে উদ্ধৃত করে লেখা হয়েছে যে একটি দেশ অপর দেশের আকাশসীমা এবং বন্দর সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারবে।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স বলছে, দিল্লি সফরকালে পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় সুখোই-ফিফটি সেভেন যুদ্ধবিমান ভারতকে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এগুলো সব থেকে আধুনিক যুদ্ধবিমান। ভারতের ২৯টি যুদ্ধবিমানের স্কোয়াড্রন আছে, তার বেশিরভাগই রাশিয়ার তৈরি সুখোই-থার্টি। এখন তারা আরও আধুনিক সুখোই-ফিফটি সেভেনও দিতে চাইছে ভারতকে, এমনটাই দুইজন ভারতীয় কর্মকর্তার সূত্র উদ্ধৃত করে লিখেছে রয়টার্স।
সংবাদ সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, রাশিয়ার সঙ্গে এই সপ্তাহের আলোচনায় উঠে আসতে কয়েকটি এস-ফোর হান্ড্রেড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কথাও। গত সপ্তাহে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং এই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
রাশিয়ার সঙ্গে ২০১৮ সালের এক চুক্তি অনুযায়ী ভারত ইতোমধ্যেই তিনটি এস-ফোর হান্ড্রেড পেয়ে গেছে, আরো দুটি পাওনা আছে তাদের। সংবাদ সংস্থা এএনআইকে ফার্স্ট ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার মন্তুরোভ জানিয়েছেন, এস-ফোর হান্ড্রেড আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সময়মতোই সরবরাহ করা হবে। এদিকে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, শব্দের চেয়েও দ্রুতগতির 'ব্রাহ্মোস' ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নততর ভ্যারিয়্যান্ট কেনা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
রাশিয়ার সঙ্গে ভারত তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কতটা নিবিড় করতে চায়, সেটা দিল্লির হাতেই ছেড়ে দিয়েছে মস্কো, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, “বল এখন ভারতের কোর্টে।”
প্রেসিডেন্ট পুতিনের সফরের ঠিক আগে, মঙ্গলবার, তার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ যোগ দিয়েছিলেন এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্কের দিগন্ত যেমন বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত, ভারতের ক্ষেত্রেও তাই। তবে ওই সম্পর্ক কতটা বিস্তৃত হবে, তা নির্ভর করছে ভারতের ওপরে।
ঢাকা/ফিরোজ