প্রতিদিন এক টেবিল চামচ মিষ্টিকুমড়ার বীজ খেলে যে ৫টি উপকার পাবেন
Published: 10th, February 2025 GMT
১. হৃৎপিণ্ডের জন্য দারুণ উপকারী
কুমড়ার বীজে আছে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ও হৃৎপিণ্ডকে সুস্থভাবে কাজ করতে সহায়তা করে। এ ছাড়া এতে আছে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট ও স্বাস্থ্যকর চর্বি, যা খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল (এইচডিএল) বাড়ায়। ফলে হৃৎপিণ্ডের অসুখের ঝুঁকি কমে এবং কার্ডিওভাস্কুলার স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
২.ভালো ঘুমের সহায়ক
পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের জন্য মিষ্টিকুমড়ার বীজ ঘুমপাড়ানি মাসিপিসির মতো। এতে আছে ট্রিপটোফ্যান নামের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা সেরোটোনিন ও মেলাটোনিন তৈরি করতে সাহায্য করে। আর এই দুটি হরমোন স্বাভাবিক ঘুমের জন্য অপরিহার্য। রাতে শোয়ার আগে এক টেবিল চামচ কুমড়ার বীজ খেলে ভালো ঘুম হবে এবং ঘুমের চক্র থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এ ছাড়া এর ম্যাগনেশিয়াম শরীরের পেশি ও স্নায়ু শিথিল করতে সহায়তা করে, ফলে রাতের ঘুমটা ভালো হয়।
আরও পড়ুনপেঁপের বীজ খেলে কি আসলেই উপকার মেলে০৩ জুলাই ২০২৪৩. মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করেএই ছোট্ট সুপারফুডে আছে প্রচুর জিঙ্ক, ম্যাগনেশিয়াম ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বাড়াতে সহায়ক। বিশেষ করে জিঙ্ক স্নায়ুর সংকেত আদান-প্রদান ও মস্তিষ্কের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৪ সালের এক গবেষণা বলছে, নিয়মিত মিষ্টিকুমড়ার বীজ খেলে মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়তে পারে, কমতে পারে আলঝেইমার্স ডিজিজসহ স্নায়ুর রোগের ঝুঁকি।
৪. রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়রোগ প্রতিরোধক্ষমতা শক্তিশালী করতে চাইলে মিষ্টিকুমড়ার বীজ খান। এতে পাবেন জিঙ্ক ও ভিটামিন ই। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত করে এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। জিঙ্ক ক্ষত সারিয়ে তুলতে এবং ঠান্ডার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে, আর ভিটামিন ই কাজ করে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে, যা প্রদাহ কমায় এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দৃঢ় রাখে।
আরও পড়ুন৫টি সুপার হেলদি বীজ খাবেন যে কারণে১২ নভেম্বর ২০২৪৫. পাচনতন্ত্র ও অন্ত্রের জন্য ভালোসুস্থ পরিপাকক্রিয়া ভালো স্বাস্থ্যের মূল ভিত্তি। আর মিষ্টিকুমড়ার বীজ অন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। এতে থাকা ফাইবার বা আঁশ হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং অন্ত্রের ভালো ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য বজায় রাখে। ২০২৪ সালের মার্চ মাসে করা এক গবেষণায় জানা গেছে, মিষ্টিকুমড়ার বীজে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-প্যারাসাইটিক গুণ আছে, যা অন্ত্রের ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দূর করতে এবং হজমক্রিয়া ভালো করতে সহায়ক।
সূত্র: হেলদি
আরও পড়ুনএত উপকারী জানলে লাউয়ের বীজ হয়তো আর ফেলে দেবেন না১৬ ডিসেম্বর ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ