তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন দাবি
Published: 10th, February 2025 GMT
‘বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৭১ শতাংশই অংসক্রামক রোগের কারণে ঘটছে। প্রতিরোধযোগ্য এই মৃত্যুর অন্যতম কারণ তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার। কেবল তামাকজনিত পণ্য ব্যবহারের কারণেই বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৫৩ জন মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। অথচ, এই মৃত্যুর মিছিলকে অবজ্ঞা করে তামাক তামাক কোম্পানি রাজস্বের তকমা দেখিয়ে আইন সংশোধনকে বাধাগ্রস্ত করে। তাদের এই অপকৌশল বন্ধে গণমাধ্যমের জোরালো ভূমিকা রাখা জরুরি।’
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর একটি অভিজাত রেস্তোরাঁয় ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘অধূমপায়ী ও তরুণদের সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন এবং কোম্পানির অপপ্রচার বন্ধে গণমাধ্যমের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন আলোচকরা।
এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ডা.
হার্ট ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশে ধূমপান না করেও বিভিন্ন পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে প্রতিনিয়ত পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হচ্ছেন প্রায় ৩ কোটি ৮৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। এরপর থেকেই তামাক কোম্পানিগুলো অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দিয়ে আইন সংশোধনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তারা রাজস্ব ও কর্মসংস্থান হারানোর ভিত্তিহীন তথ্য দিচ্ছে।
এনবিআর এর তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ২০০৫ সালে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন করার পরে পরবর্তী দুই অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ১৭.৯৭ শতাংশ এবং ৩৭.৫২ শতাংশ। একইভাবে, ২০১৩ সালে সংশোধনীর পর পরবর্তী দুই অর্থবছরে সিগারেট খাতে রাজস্ব আয় বেড়েছে যথাক্রমে ২৫.৫১ শতাংশ এবং ৪৬.৫২ শতাংশ।
এছাড়া ২০২১ সালের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যানুযায়ী, খাদ্য, পানীয় এবং তামাকপণ্য বিক্রি করে এরকম খুচরা দোকানের সংখ্যা মাত্র এক লাখ ৯৬ হাজার ৩৪১, যারা অন্যান্য পণ্যের সঙ্গেই তামাকপণ্য বিক্রি করে থাকে। তাই কর্মসংস্থান হারানোর তথ্যটিও বিভ্রান্তিকর।
সভায় গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা জানান, তরুণদের হাতেই দেশের ভবিষ্যৎ। আর তাদের টার্গেট করেই তামাক কোম্পানিগুলোর নানান অপতৎপরতা। তাই তরুণদের সুরক্ষায় সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টির পাশাপাশি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের দ্রুত সংশোধন দরকার।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. খন্দকার আব্দুল আউয়াল রিজভী বলেন, “ধূমপান না করেও ৬১ হাজারের বেশি শিশু পরোক্ষ ধূমপানের কারণে বিভিন্ন রোগে ভুগছে। একই সাথে আইন শক্তিশালী না হওয়ায় দেশের ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের মধ্যে ৬.৯% তামাক ব্যবহার করেন। এই তরুণদের সুরক্ষায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনী দ্রুত পাস করা প্রয়োজন। তা না হলে প্রতিরোধযোগ্য মৃত্যুর হার বাড়তেই থাকবে।
বিদ্যমান আইনটিকে বৈশ্বিক মানদণ্ডে উপনীত করতে ডব্লিউএইচও ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ট্যোবাকো কন্ট্রোল–এফসিটিসির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে। সেগুলো হলো–সব পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ‘ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান’ (DSA) নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়স্থলে (Points of Sale) তামাকজাত পণ্য প্রর্দশন (Product Display) নিষিদ্ধ করা; তামাক কোম্পানির যেকোনো ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা (CSR) কর্মসূচি পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা; তামাকজাত দ্রব্যের প্যাকেট/কৌটায় সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০% থেকে বাড়িয়ে ৯০% করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা, মোড়কবিহীন এবং খোলা ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত দ্রব্য বিক্রি নিষিদ্ধ করা এবং ই-সিগারেটসহ সব ইমার্জিং ট্যোব্যাকো প্রোডাক্টস্ পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা।
সভায় বিসিআইসির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমানসহ গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ষ দ ধ কর প বল ক প
এছাড়াও পড়ুন:
নরসিংদীতে ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি স্থগিত
নরসিংদী সদর উপজেলা বিএনপির আওতাধীন নজরপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটির সকল কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দলীয় নেতৃবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাতে দলীয় কার্যালয় চিনিশপুর থেকে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবসহ নজরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
নরসিংদী সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. মো. তোফাজ্জল হোসেন (টবু) এবং সাধারণ সম্পাদক মো. ইকবাল হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সুষ্ঠু তদন্ত কার্যক্রম নিশ্চিত করতে এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নজরপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হলো।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গুরুতর সাংগঠনিক অনিয়ম ও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি এরইমধ্যে জেলা বিএনপিকেও অবহিত করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তির অনুলিপি নরসিংদী জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছে উপজেলা বিএনপি সূত্র।
নরসিংদী সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা. মো. তোফাজ্জল হোসেন (টবু) বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) একটি আদর্শভিত্তিক সংগঠন, যেখানে শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পায়। দলের ভেতরে কোনো অভিযোগ উঠলে সেটির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। নজরপুর ইউনিয়ন বিএনপির বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা এমনই একটি অবস্থানের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। কোনো রকম ব্যক্তিগত অভিপ্রায় নয়, বরং দলীয় শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা রক্ষার্থেই আমরা কমিটির কার্যক্রম সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।”
ঢাকা/হৃদয়/এস