তালিকাভুক্ত না হলে সরকারি ঠেন্ডারে অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার পরি
Published: 19th, February 2025 GMT
সরকারের শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে তালিকাভুক্ত না হলে সরকারি দরপত্র অংশগ্রহণ করতে না দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এজন্য উপদেষ্টা পরিষদকে চিঠি দেওয়া হবে। সরকারের অনুমোদন পেলেই এটি বাস্তবায়ন করা হবে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের তহবিলে বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসি (বিএসসিপিএলসি) থেকে ১ কোটি ৬ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “আমি দেখলাম মাত্র ৫০০ কোম্পানি এনলিস্টেড (তালিকাভুক্ত)। এই ৫০০ কোম্পানি পয়সা দেয়। বাংলাদেশে ৫০০ কোম্পানি এটা তো বিশ্বাসযোগ্য না, হতেই পারে না। এতদিন অন্যরা কেন এনলিস্টেড হলো না, আমি জানি না। বাংলাদেশে বিশাল বিশাল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি আছে, যারা হাজার কোটি টাকার কাজ করেছে এবং করে যাচ্ছে। তারা কেন নেই, তারা কেন তাদের প্রফিট থেকে কন্ট্রিবিউশন করে না।”
“এটা আমার কাছে একটু খটকা লাগল, তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম এদেরকেও এর আওতায় আনতে হবে। তাদের শ্রমিকদের ক্ষতি হয় বেশি, কনস্ট্রাকশন কোম্পানিতে মারা যান, বিকলাঙ্গ হয়। তাদের আমরা কমপেনসেশন (ক্ষতিপূরণ) দিতে পারি না, কারণ তারা এনলিস্টেড না জানান সাখাওয়াত হোসেন।”
তিনি বলেন, “আমি কেবিনেটকে লিখছি বড় কোম্পানি, শিপবিল্ডার্স যদি এনলিস্টেড না হয়, তাহলে অন্তত সরকারি কোনো দরপত্রে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এটা সরকার সিদ্ধান্ত নিলে তাই হবে। আর শিপবিল্ডিংয়ে যারা কাজ করছে, তারা যদি না (রাজি) হয় তাহলে আমাদের তরফ থেকে তাদের ফারদার টেন্ডারে (পরবর্তী দরপত্রে) অংশগ্রহণ করতে দেবো না। এটা মোটামুটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা এখন সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায়।”
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম এই চেক এম. সাখাওয়াত হোসেনের হাতে তুলে দেন।
এ সময় নাহিদ ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস’র পক্ষ থেকে আমরা শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিলে ১ কোটি ৬ লাখ টাকা চেক হস্তান্তর করতে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমরা একটা উৎসাহ-উদ্দীপনা তৈরি করতে চাচ্ছি, যেন অন্যান্য কোম্পানি এই কাজগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে করে। অল্পসংখ্যক কোম্পানি এটা দিচ্ছি। আমি মনে করি এটা শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা এবং রাষ্ট্রের তরফ থেকে তার সুবিধা-অসুবিধা দেখা।”
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের শ্রমিকরা নানান ধরনের অসুবিধার মধ্যে থাকেন। ন্যায্য মজুরিসহ তাদের নানান ধরনের নাগরিক সুবিধাগুলো থেকে তারা বঞ্চিত। সেই জায়গা থেকে এই তহবিল একটা বড় জায়গা, শ্রমিকদের জন্য কাজ করার জন্য। শ্রম মন্ত্রণালয়ের প্রতি আমাদের আবেদন থাকবে যেন এটার তদারকি বাড়ানো হয়। নিয়ম-নীতিমালার অধীনে অন্যান্য কোম্পানি থেকে যেন আদায় করতে পারে।”
“বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের পক্ষ থেকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে,” বলেও জানান তিনি।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, এই তহবিলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা আছে। মূলত এগুলো আমরা বিভিন্ন ব্যাংকে ডিপোজিট রাখি।তার প্রফিট থেকে দেওয়া হয়। প্রতি বছর যে টাকাগুলো আসে, তার একটা অংশ আমরা বিতরণ করি।
চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব ড. মো. মুশফিকুর রহমান এবং বিএসসিপিএলসি এর কর্মকর্তা মির্জা কামাল আহম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট সরক র তহব ল
এছাড়াও পড়ুন:
দুর্নীতির মামলায় শেখ হাসিনার পরিবারের ৭ সদস্যের বিচার শুরু, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আবদুল্লাহ আল মামুন ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।
প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম ও সুলতান মাহমুদ।
আগামী ১১ ও ১৩ আগস্ট মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের ঠিক করা হয়েছে।
মামলায় অভিযুক্ত শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যরা হলেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক (ববি)।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের পৃথক ছয়টি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের পক্ষে আদালতে যুক্তি তুলে ধরা হয়। শুনানি নিয়ে আদালত শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন আদালত।
এর আগে গত ২০ জুলাই পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের ৭ সদস্যসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে করা মামলাটি এই আদালতে বদলি হয়।
দুদকের পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগের ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্যদের আদালতে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। পরে মামলাগুলো বিচারের জন্য অন্য আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিন মামলায় গত এপ্রিলে শেখ হাসিনা, তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলায় তাঁদের বিরুদ্ধে সম্প্রতি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক। তিনটি মামলায় তাঁদের ছাড়াও সাবেক গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদসহ ১৬ জন অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি।
২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের নামে বরাদ্দ নেওয়া প্লটের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ছয়টি মামলা করে দুদক।
পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠার প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলায় শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে গত ১০ মার্চ অভিযোগপত্রের অনুমোদন দেয় দুদক।