ব্যবসায়ীদের নির্ভরযোগ্যতার প্রমাণ দিতে হবে, এনবিআরকেও আস্থা রাখতে হবে
Published: 23rd, February 2025 GMT
বার্জার পেইন্টস আজ রোববার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে অথরাইজড ইকোনমিক অপারেটর (এইও) সনদ পেয়েছে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত গর্ব ও আনন্দের ক্ষণ।
আমি সব সময় বলি, কমপ্লায়েন্স অর্জনের জন্য কিছু ব্যয় করতে হয়। এই ব্যয়ের পুনর্ভরণ করা যায় দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে। কারণ হলো, কমপ্লায়েন্স অর্জনের সঙ্গে উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।
বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যেখানে আমাদের ৮০ শতাংশ পণ্যের জন্য আমদানির ওপর নির্ভর করতে হয়। আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ সীমিত। ফলে আমদানি করা বেশির ভাগ পণ্যের ক্ষেত্রে আমাদের মূল্য সংযোজন করতে হয়। এই প্রক্রিয়ায় আমাদের (ব্যবসায়ীদের) লিড টাইম (উৎপাদন শুরু ও শেষের অন্তর্বর্তী সময়) গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এইওর সুবিধা আমাদের লিড টাইম কমানো, ইনভেনটরি হ্রাস ও মূলধন (ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল) দ্রুত কাজে লাগানোর সুযোগ দেয়। ফলে সব খাতের ব্যবসায়ীদের জন্য এটি বিশেষ সুবিধা বয়ে আনবে।
আস্থা, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা একসঙ্গে কাজ করে। শুধু এনবিআর নয়, ব্যবসায়ীদেরও প্রমাণ করতে হবে, তাঁরা বিশ্বাসযোগ্য। অন্যদিকে এনবিআরকেও ব্যবসায়ীদের ওপর আস্থা রাখতে হবে। শক্তিশালী কাঠামো গড়ে তুলতে উভয়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, যেখানে বিশ্বাস হবে মূল ভিত্তি। এই বিশ্বাসযোগ্যতা কাজের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে।
এ পর্যন্ত হাতে গোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান এইও সনদ পেয়েছে। সূচনা হিসেবে তা ভালো হলেও সনদপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখনো খুবই কম বা পর্যাপ্ত নয়। আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। প্রতিযোগী দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আমাদেরও অনুরূপ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
আজ যারা এইও সনদ পেয়েছে, তারা বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য দূত হিসেবে কাজ করবে। এইও অর্জনে উৎসাহিত করতে আমি চেম্বার ও ব্যবসায়ীদের এ বিষয়ে অবহিত করব।
এইও অর্জনের তিনটি ধাপ—পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে সাধারণত দুই থেকে তিন বছর সময় লাগে। এই সময়সীমা কমানো প্রয়োজন। এ ছাড়া আমদানি-রপ্তানির সব সমস্যার মূলে হচ্ছে এইচএস কোড। আমরা সরকারের কাছ থেকে কিছুই গোপন করতে চাই না। তাই এইচএস কোড–সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যবসায়ীদের মতামত নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ব্যবসায়ীরাই সঠিক পণ্যটি চিনি এবং তার প্রয়োজনীয়তা বুঝি।
এইও সনদ শুধু সার্টিফিকেট নয়, এটি আমাদের ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতি ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যম। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগ বাংলাদেশের ব্যবসায়িক খাতকে আরও গতিশীল ও প্রতিযোগিতামূলক করে তুলবে।
বার্জার পেইন্টসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি)
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব যবস য আম দ র র জন য ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?