নওগাঁর আত্রাইয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে মারপিট করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার আহসানগঞ্জ হাটসংলগ্ন মালাধার সেতু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর দাবি, ডাকাতেরা তাঁর কাছ থেকে ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার, ৩০০ ভরি চাঁদির অলংকার ও নগদ ২ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।

ডাকাত দলের রডের আঘাতে নান্টু প্রামাণিক (৪০) নামের ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার দাঁড়িয়াগাথী গ্রামে। তিনি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

স্বজন ও থানা-পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নান্টু প্রামাণিক দীর্ঘদিন ধরে আত্রাই উপজেলা সদরের সাবরেজিস্ট্রি অফিসসংলগ্ন স্বর্ণপট্টি এলাকায় স্বর্ণের ব্যবসা করেন। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম রিংকু জুয়েলার্স। প্রতিদিন দোকানে বেচাবিক্রি ও স্বর্ণালংকারের কাজ শেষ করে দোকানের মজুত স্বর্ণালংকার ও টাকাপয়সা নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা নিয়ে মোটরসাইকেলে করে নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন। তিনি আহসানগঞ্জ হাটসংলগ্ন মালাধার সেতুর কাছে পৌঁছালে ওত পেতে থাকা ডাকাত দল পেছন থেকে তাঁর মাথায় লোহার রড দিয়ে আঘাত করে। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে যান। তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাঁকে উপর্যুপরি আঘাত করে তাঁর ব্যাগে থাকা স্বর্ণালংকার, চাঁদির অলংকার ও নগদ টাকা লুট করে নেয় ডাকাতেরা।

পরে স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সংবাদ পেয়ে রাতেই নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুদরত-ই খোদা, আত্রাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

শাহাবুদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে আত্রাই থানার ওসি শাহাবুদ্দিন বলেন, নান্টু প্রামাণিকের মাথায় ও হাতে আঘাত করে সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছে থাকা স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে একটি মামলার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এজাহার পাওয়ার পর বলা যাবে, কী পরিমাণ মালামাল ও টাকা লুট করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে পুলিশ সচেষ্ট রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ক র ও নগদ ট ক স বর ণ ল ক র ও ব যবস য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রেম ছিল না তবু কেন মধুবালাকে বিয়ে করেছিলেন কিশোর কুমার

দিলীপ কুমারের সঙ্গে বিচ্ছেদের কিছুদিন পরই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন অভিনেত্রী মধুবালা। তবে তখন তিনি ছিলেন অসুস্থ। কিশোর কুমার জানিয়েছিলেন, ভালোবাসা থেকে নয়, বরং কথা রাখতেই তিনি এ বিয়ে করেছিলেন।
মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম নিয়ে একসময় মুখর ছিল মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। কিন্তু অভিনেত্রীর বাবার বাধার কারণে সে সম্পর্কে ফাটল ধরে এবং দুজনের বিচ্ছেদ ঘটে। কিছুদিন পরেই কিশোর কুমারকে বিয়ে করেন মধুবালা। তাঁদের এই বিয়ে অনেককে চমকে দিয়েছিল। কারণ, তাঁদের প্রেমের কথা তখনো গোপন ছিল। তবে মধুবালার শরীর তখন ভালো যাচ্ছিল না। বলা হয়, দীর্ঘ রোগভোগের সময় কিশোর কুমার তাঁকে মায়ের বাড়িতে রেখেই চলে যান।

দ্য ইলাস্ট্রেটেড উইকলি অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেছিলেন, ‘বিয়ের আগেই জানতাম, ও খুব অসুস্থ। কিন্তু কথা তো দিয়েছিলাম। তাই সে কথা রেখেই ওকে ঘরে এনেছিলাম স্ত্রী হিসেবে। জানতাম, ওর জন্মগত হৃদ্‌রোগ আছে। তবু ৯ বছর ধরে সেবা করেছি। চোখের সামনেই ওকে মরতে দেখেছি। কেউ বুঝবে না এর যন্ত্রণা, না ভুগলে। ও অসম্ভব সুন্দরী ছিল। আর কত যন্ত্রণায় মারা গেছে, সেটা চোখে না দেখলে বিশ্বাস হবে না। হতাশায় চিৎকার করত, কান্নাকাটি করত। এত প্রাণোচ্ছল মানুষ নয়টা বছর বিছানায় শুয়ে থাকবে—এ কল্পনাই করা যায় না। ডাক্তার বলেছিল, ওকে হাসিখুশি রাখতে হবে। আমি তা–ই করেছি—ওর শেষনিশ্বাস পর্যন্ত। কখনো হেসেছি, কখনো কেঁদেছি ওর সঙ্গে।’

তবে কিশোর কুমারের এই বক্তব্য নিয়ে সংশয় তৈরি হয়। কারণ, পরে ফিল্মফেয়ার সাময়িকীতে দেওয়া সাক্ষাৎকারে একেবারে ভিন্ন কথা বলেন তিনি। সেই সাক্ষাৎকারে কিশোর কুমার বলেন, ‘মধুবালার সঙ্গে আমি প্রেমে পড়িনি কখনো। বরং ওর প্রেমিক ছিল আমার বন্ধু দিলীপ কুমার। আমি তো শুধু ওদের বার্তা পৌঁছে দিতাম। বিয়ের প্রস্তাবটা দিয়েছিল মধুবালাই। এমনকি, যখন আমার প্রথম স্ত্রী রুমা তখনো আমার সঙ্গে ছিল, তখনো মধু বলত, “ওকে কখনো ছেড়ো না, না হলে আমি তোমার হয়ে যাব।”’

আরও পড়ুনকিশোর কুমার কি সত্যিই ঘরে কঙ্কাল আর মাথার খুলি নিয়ে ঘুমাতেন২৭ মে ২০২৫

মধুবালার পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, চিকিৎসকেরা তখন বলেছিলেন, অভিনেত্রীর পক্ষে শারীরিক সম্পর্ক কিংবা সন্তানধারণ কোনো কিছুই সম্ভব নয়। সেই বাস্তবতা হয়তো প্রভাব ফেলেছিল কিশোরের সিদ্ধান্তে। এক ঘনিষ্ঠজন বলেন, ‘আমরা বলছি না কিশোরদা ভুল করেছিলেন। ডাক্তার তো স্পষ্ট বলেছিল—শারীরিক সম্পর্ক বা সন্তান কোনোটাই সম্ভব নয়। তবে একজন নারীর তো মানসিক সঙ্গীও দরকার হয়।’
ওই ঘনিষ্ঠজন আরও জানান, কিশোর কুমার তিন মাসে একবার আসতেন মাত্র। বলতেন, ‘আমি এলে তুমি কাঁদবে, আর এতে তোমার হৃদ্‌যন্ত্রের ক্ষতি হবে। তুমি বিষণ্ন হয়ে পড়বে।’ সে সময় মধু অনেক ছোট ছিলেন, ঈর্ষাও ছিল স্বাভাবিক। হয়তো এ দূরত্বই ধীরে ধীরে তাঁকে শেষ করে দিয়েছিল।
১৯৬৯ সালে মাত্র ৩৬ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বলিউড অভিনেত্রী মধুবালা

সম্পর্কিত নিবন্ধ