দুজনকে অপহরণের পর ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
Published: 26th, February 2025 GMT
কক্সবাজারের টেকনাফের জাহাজপুরা এলাকার দুই বাসিন্দাকে অপহরণের পর ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে দুজনের পরিবারের সদস্যদের কাছে মুঠোফোনে অপহরণকারীরা মুক্তিপণ দাবি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
অপহৃত দুজন হলে—জাহাজপুরা এলাকার আবছার আহমদের ছেলে আহমদ উল্লাহ (৪৮) ও আবদুস সালামের ছেলে জসিম উদ্দিন (১৮)। গতকাল সকালে স্থানীয় পাহাড়ি এলাকায় গরু চরাতে গেলে অস্ত্রের মুখে দুজনকে অপহরণ করা হয় হয় বলে জানা গেছে।
অপহৃতদের পরিবারের সদস্যদের বরাতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে দুজনকে অপহরণ করে পাহাড়ের গহিনে নিয়ে গেছেন। স্থানীয় অনেক বাসিন্দা সেটি দেখেছেন। গতকাল রাত ১০টার দিকে দুজনের পরিবারের কাছে মুঠোফোনে মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অপহৃত আহমদ উল্লাহর জন্য ২০ লাখ টাকা এবং জসিমের জন্য ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ চেয়েছেন অপহরণকারীরা। মুক্তিপণের টাকা না দিলে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এ ধরনের অপহরণের ঘটনা টেকনাফে প্রায়ই ঘটছে। অস্ত্রের মুখে মানুষকে জিম্মি করে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করে আসছে একটি চক্র। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে সন্ত্রাসীদের ধরতে পাহাড়ে অভিযান পরিচালনার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারাও দীর্ঘদিন দাবি জানিয়ে আসছেন।
জানতে চাইলে স্থানীয় বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের পরিদর্শক শুভ রঞ্জন শাহ প্রথম আলোকে বলেন, অপহরণের বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পাহাড়ি এলাকাটিতে অভিযান চলছে।
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, গত ১৪ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২২৬ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। একই সময়ে পার্শ্ববর্তী উখিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে ৮৭ জনকে অপহরণ করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ব র র অপহরণ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’