ডাকাতিতে বাধা দেওয়ায় হামলা, ৭ জন গুলিবিদ্ধ
Published: 27th, February 2025 GMT
ঢাকার দোহারে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ খবর মাইকে প্রচার হলে দুর্বৃত্তদের ধরতে গিয়ে তাদের হামলায় সাতজন গুলিবিদ্ধসহ ১৩ জন আহত হন। এর মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের চর-কুতুবপুর গ্রামে ব্যবসায়ী শেখ নিলুয়ার হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ডাকাতি শেষে দুর্বৃত্তরা পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উদ্দশে গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে ধাওয়া করে একজনকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে জনতা। আটক মো.
নিজেকে ট্রলারের মাঝি দাবি করে আটক সাহেব আলী বলে, ‘আমি ১৬ জন শ্রমিককে ট্রলারে নিয়ে এসেছিলাম। তারা কাজে গেলে আমি ট্রলার পাহারা দিচ্ছিলাম। আমাকে ডাকাত সন্দেহে পিটুনি দেওয়া হয়েছে।’
আহত ব্যক্তিরা হলেন– উপজেলার দেবীনগর গ্রামের সোহেল ভান্ডারী, নাঈম মিয়া, মো. বাবুল শেখ, বিলাসপুর গ্রামের মো. মাসুদ, নুর মোহাম্মদ, মো. রবিন, বায়েজিদ হোসেন, ফিরোজ ব্যাপারী, চান মিয়া, বাবু শেখ, রিয়াজুল ইসলাম, মো. সাহেব আলী ও সজীব।
বাড়ির মালিক জয়পাড়া বাজারের ব্যবসায়ী শেখ নিলুয়ার হোসেন জানান, রাত ২টার দিকে গেট ভেঙে ১৫-২০ জন বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তাঁর বাবা শেখ আব্দুর রশিদ ও মা হেলেনা বেগমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। মায়ের ব্যবহৃত সাড়ে আট ভরি স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও সাড়ে ৫ হাজার টাকা লুটে নেয় তারা। পরিবারের সদস্যদের চিৎকার ও ডাকাতির বিষয় টের পেয়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তিনি ও তাঁর ছোট ভাই ওমর ফারুক চিৎকার শুরু করেন। এ সময় এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অনেকে আহত হন। গ্রামের বাসিন্দাদের প্রতিরোধে তারা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়।
ব্যবসায়ী বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারযোগে বাড়ির পেছনে পদ্মা নদীর ঘাটে আসে। তাদের ট্রলার জব্দ করা হয়েছে।
ওমর ফারুকের ভাষ্য, রাতেই হামলায় আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় গ্রামের লোকজনের হাতে আটক একজনকে থানায় নিয়ে যায় তারা।
গুলিবিদ্ধ বায়েজিদ হোসেন বলেন, তাঁর শরীরে অন্তত ১০টি রাবার বুলেট লেগেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন।
দোহার থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক একজনকে পাওয়া গেছে। বেশকিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। বাদীর অভিযোগ পেলে মামলা করা হবে। দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, আটক ব্যক্তি ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় চোর সন্দেহে একজনকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় চুরির অভিযোগে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার জাঙ্গালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বেলা পৌনে ১১টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত ব্যক্তির নাম মো. ইসরাফিল (৪০)। তাঁর বাড়ি উপজেলা সদরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ ভোরে জাঙ্গালিয়া গ্রামে তিনটি মুঠোফোন ও নগদ ১ হাজার ৬০০ টাকা চুরি হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে এলাকাবাসী ইসরাফিলকে নিজ বাড়ি থেকে ধরে এনে মারধর করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে মহম্মদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
ইসরাফিলের পরিবারের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কয়েক দিন আগে পূর্ব নারায়ণপুর গ্রামের ইমরুল নামের এক ব্যক্তির মুঠোফোন চুরি হয়। সে সময় থেকেই ইসরাফিলকে সন্দেহ করা হচ্ছিল। আজ এলাকায় আরও একটি চুরির ঘটনা ঘটলে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে তাঁকে বাড়ি থেকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যা করেন।
মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহমান বলেন, একরামুল নামের এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে তিনটি মুঠোফোন ও টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় ইসরাফিলকে অভিযুক্ত করে স্থানীয় লোকজন পিটুনি দেন। পরে হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বিরুদ্ধে আগে কয়েকটি চুরির অভিযোগ থাকলেও বর্তমানে কোনো মামলা নেই। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।