ঢাকার দোহারে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ খবর মাইকে প্রচার হলে দুর্বৃত্তদের ধরতে গিয়ে তাদের হামলায় সাতজন গুলিবিদ্ধসহ ১৩ জন আহত হন। এর মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার বিলাশপুর ইউনিয়নের চর-কুতুবপুর গ্রামে ব্যবসায়ী শেখ নিলুয়ার হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

ডাকাতি শেষে দুর্বৃত্তরা পালানোর সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে তাদের উদ্দশে গুলি ছোড়ে। এক পর্যায়ে ধাওয়া করে একজনকে আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে দিয়েছে জনতা। আটক মো.

সাহেব আলী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাসিন্দা। সে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন।

নিজেকে ট্রলারের মাঝি দাবি করে আটক সাহেব আলী বলে, ‘আমি ১৬ জন শ্রমিককে ট্রলারে নিয়ে এসেছিলাম। তারা কাজে গেলে আমি ট্রলার পাহারা দিচ্ছিলাম। আমাকে ডাকাত সন্দেহে পিটুনি দেওয়া হয়েছে।’

আহত ব্যক্তিরা হলেন– উপজেলার দেবীনগর গ্রামের সোহেল ভান্ডারী, নাঈম মিয়া, মো. বাবুল শেখ, বিলাসপুর গ্রামের মো. মাসুদ, নুর মোহাম্মদ, মো. রবিন, বায়েজিদ হোসেন, ফিরোজ ব্যাপারী, চান মিয়া, বাবু শেখ, রিয়াজুল ইসলাম, মো. সাহেব আলী ও সজীব।

বাড়ির মালিক জয়পাড়া বাজারের ব্যবসায়ী শেখ নিলুয়ার হোসেন জানান, রাত ২টার দিকে গেট ভেঙে ১৫-২০ জন বাড়িতে প্রবেশ করে। এ সময় তাঁর বাবা শেখ আব্দুর রশিদ ও মা হেলেনা বেগমকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। মায়ের ব্যবহৃত সাড়ে আট ভরি স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন ও সাড়ে ৫ হাজার টাকা লুটে নেয় তারা। পরিবারের সদস্যদের চিৎকার ও ডাকাতির বিষয় টের পেয়ে বাড়ির দ্বিতীয় তলা থেকে তিনি ও তাঁর ছোট ভাই ওমর ফারুক চিৎকার শুরু করেন। এ সময় এলাকার লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা চালান। এক পর্যায়ে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়ে ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অনেকে আহত হন। গ্রামের বাসিন্দাদের প্রতিরোধে তারা গুলি করতে করতে পালিয়ে যায়। 

ব্যবসায়ী বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারযোগে বাড়ির পেছনে পদ্মা নদীর ঘাটে আসে। তাদের ট্রলার জব্দ করা হয়েছে। 

ওমর ফারুকের ভাষ্য, রাতেই হামলায় আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এর মধ্যে পাঁচজনের অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহত অন্যরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। এ সময় গ্রামের লোকজনের হাতে আটক একজনকে থানায় নিয়ে যায় তারা।

গুলিবিদ্ধ বায়েজিদ হোসেন বলেন, তাঁর শরীরে অন্তত ১০টি রাবার বুলেট লেগেছে। তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে বিশ্রামে রয়েছেন।

দোহার থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক একজনকে পাওয়া গেছে। বেশকিছু গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। বাদীর অভিযোগ পেলে মামলা করা হবে। দোহার সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আশরাফুল আলম বলেন, আটক ব্যক্তি ঘটনার সঙ্গে জড়িত কিনা, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য় উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরা হলো না খোকনের

ঈদের ছুটিতে স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন বাড়িতে। সেখান থেকে কর্মস্থলে ফেরা হলো না খাকন মিয়ার (২৮)। পথে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মারা গেছেন তিনি। এ ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) দুপুরে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপস, ট্রাফিক- উত্তর) আরাফাতুল ইসলাম।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৩টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার ভোরে বাইপাইলের এসএ পরিবহনের গলি থেকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছুরি জব্দ হয়েছে।

আরো পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার ১

যশোরে বিএনপিকর্মীকে কুপিয়ে হত্যা

গ্রেপ্তার ব্যক্তি নাম মো. মাসুদ মিয়া ওরফে জামাই মাসুদ ওরফে রানা। তিনি নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা থানার জামধলা গ্রামের মো. সোলেমান মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধে আগেও একটি ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

নিহত খোকন মিয়ার বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার বালুয়া ভাটারপাড়া গ্রামে। তিনি আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় ভাড়া বাসায় স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন এবং স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন।

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরাফাতুল ইসলাম বলেন, “খোকন মিয়া পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে গত মঙ্গলবার (১০ জুন) রাতে ৩টার দিকে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এসে বাস থেকে নামেন। এসময় ছিনতাইকারী খোকনের স্ত্রীকে চাকু দিয়ে ভয় দেখিয়ে একটি স্মার্ট ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। খোকন মিয়া ছিনতাইকারীকে ঝাপটে ধরেন। ছিনতাইকারী চাকু দিয়ে খোকন মিয়ার বুকে ও বাম বগলের নিচে আঘাত করে। এতে তিনি মারা যান।”

তিনি আরও বলেন, “এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন। পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িত ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে। তাকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হবে।”

ঢাকা/সাব্বির/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চায়ের বিল নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, ছাত্রদল নেতাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা
  • ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফেরা হলো না খোকনের