আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা, পরে নাক-মুখ চেপে হত্যা
Published: 28th, February 2025 GMT
আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে ছয় বছরের শিশুকে আমবাগানে নিয়ে যান বিক্রেতা। সেখানে তিনি শিশুটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। চিৎকার দিলে শিশুটির নাক-মুখ চেপে হত্যা করেন। এরপর সেই লাশ বস্তায় ভরে পুকুরের কচুরিপানার নিচে লুকিয়ে রাখেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই আইসক্রিম বিক্রেতা এসব তথ্য জানিয়েছেন। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার একটি গ্রাম থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত মঙ্গলবার রাত থেকে সে নিখোঁজ ছিল। পরদিন বুধবার অপহরণ মামলা করে শিশুটির পরিবার। ওই মামলায় আইসক্রিম বিক্রেতা সাব্বির হোসেনকে (২৫) গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ।
শিশুটির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার রাতে শিশুটির বাড়ির পাশে ওয়াজ মাহফিল চলছিল। খালাতো বোনের সঙ্গে সেদিন বিকেলে বের হয় সে। মাহফিলকে কেন্দ্র করে পাশেই খেলনা, খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যের অস্থায়ী দোকান বসেছিল। খালাতো বোন চলে আসতে চাইলে সেখানে থাকার বায়না করে শিশুটি। একপর্যায়ে তাদের এক বড় ভাইয়ের কাছে শিশুটিকে রেখে চলে আসে তার বোন। সেখান থেকে নিখোঁজ হয় শিশুটি।
খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে শিশুটির স্বজনেরা জানতে পারেন, শেষবার তাকে আইসক্রিম বিক্রেতা সাব্বিরের সঙ্গে দেখা গেছে। মঙ্গলবার রাতেই এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সাব্বির সন্দেহজনক জবাব দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে পিটুনি দেন এলাকার লোকজন। পরে সাব্বিরকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ বিষয়ে সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহেদ আল মামুন আজ শুক্রবার সকালে বলেন, অপহরণ মামলায় সাব্বিরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের নির্দেশে তাঁকে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন। গতকাল তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে শিশুটিকে হত্যা এবং হত্যার পর লাশ গুমের বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেন। আসামির স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে গতকাল রাত দুইটার দিকে একটি পুকুরের কচুরিপানার নিচ থেকে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সাব্বির ধর্ষণচেষ্টার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়েছে কি না, তা পরীক্ষার জন্য লাশটি মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সাব্বিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে শিশুটির চাচা বলেন, ‘শিশুটির বাবা বিদেশে থাকে। ওর মা প্রায় অচেতন হয়ে আছে। বাচ্চা একটা মেয়ের সঙ্গে এমন নির্মমতা হলো। আসামি সাব্বিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ এদিকে শিশুটিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যার ঘটনাটি জানতে পেরে আজ ভোরে সাব্বিরের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের পর ঘরের মালামাল বাইরে নিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আইসক র ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি সোনা উদ্ধার, গ্রেপ্তার ৫
মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ডাকাতি হওয়া ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা উদ্ধার করেছে মুন্সিগঞ্জ পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান জেলার পুলিশ সুপার মেনহাজুল আলম।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) উপপরিদর্শক আক্তারুজ্জামান মুন্সি, মাই টিভির প্রতিনিধি মো. রমজান, মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি রমজান আলী, মাইক্রোবাসচালক জাকির হোসেন ও মিরপুরের জুয়েলারি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৭ ডিসেম্বর বিকেল সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যাত্রীবাহী বাসে করে সোনা নিয়ে যাচ্ছিলেন দুই ভাই। বাসটি গজারিয়া এলাকায় পৌঁছালে পুলিশের পোশাক পরা তিনজনসহ পাঁচজনের একটি দল ওই দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে মাদক মামলার অজুহাত দেখিয়ে বাস থেকে নামিয়ে নেন। একপর্যায়ে তাঁদের হাতকড়া পরিয়ে একটি মাইক্রোবাসে তোলা হয়। পরে তাদের চোখ বেঁধে মারধর করে ১৪৫ ভরি স্বর্ণালংকার, টাকা, মুঠোফোন, এটিএম কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয়। ওই দুই ব্যবসায়ীকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার একটি এলাকায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয়।
খবর পেয়ে মুন্সিগঞ্জ ডিবি পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযান শুরু করে। ৯ ডিসেম্বর সকাল থেকে রাজধানীর কাফরুল, মিরপুর ও মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসব এলাকা থেকে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওই পাঁচজনকে আটক করা হয়।
একপর্যায়ে তাঁদের কাছ থেকে ৯৪ ভরি ১৪ আনা সোনা, সোনা বিক্রির ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ডাকাতিতে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, ২ জোড়া হাতকড়া, ২টি ওয়াকিটকি, পুলিশের ৩ সেট ইউনিফর্ম ও ৭টি মুঠোফোন উদ্ধার করা হয়।
মুন্সিগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মেনহাজুল আলমের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় গজারিয়া থানায় মামলা করা হয়েছে। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অবশিষ্ট সোনা ও পলাতক এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।