এক সপ্তাহ ধরে চলা কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের শিক্ষানবিশ (ইন্টার্ন) চিকিৎসকেরা। এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া অন্য কাউকে চিকিৎসকের স্বীকৃতি না দেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে তাঁরা কর্মবিরতি পালন করে আসছেন। দাবির সঙ্গে সংহতি রেখে একই দিন থেকে ক্লাস বর্জনের কর্মসূচির ডাক দেন চমেকের শিক্ষার্থীরাও। শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচিও প্রত্যাহার করা হয়েছে।

আন্দোলন ও কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ শনিবার দুপুরে ‘চমেক শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকবৃন্দ’ ব্যানারে ক্যাম্পাসে এক মানববন্ধন ও সমাবেশ আহ্বান করা হয়। ওই সমাবেশ থেকে কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে বক্তব্য দেন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহমদ হাসনাইন ও শিক্ষার্থী মো.

সাকিব হোসেন। এর আগে তাঁদের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চমেক অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন ও উপাধ্যক্ষ আবদুর রব বক্তব্য দেন।

কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা আজ, নাকি আগামীকাল রোববার সকালে কাজে যোগ দেবেন, সে বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু জানানো হয়নি। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সমাবেশের পর এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

সমাবেশে চমেক অধ্যক্ষ মো. জসিম উদ্দীন ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমি যতটা জানি, সরকারিভাবে বিষয়গুলো মীমাংসার চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে ১২ মার্চ আদালতের একটি রায় আসার কথা রয়েছে। তোমরা অন্তত ১২ তারিখ পর্যন্ত কর্মবিরতিটা প্রত্যাহার করো। আর ছাত্ররা ক্লাসে যাও। এরপর কী রায় আসে, তার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নাও। যদি সমাধান না হয়, তখন আমরাও এই আন্দোলনের সঙ্গে থাকব।’

হাসপাতালের পরিচালক মো. তসলিম উদ্দীন বলেন, বিএমডিসির নিবন্ধন ছাড়া কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারেন না। চলমান সংকটের বিষয়ে মন্ত্রণালয় বিএমডিসিকে দায়িত্ব দিয়েছে। এ ছাড়া পাঁচ হাজার চিকিৎসক নিয়োগসহ নানা বিষয়ে মন্ত্রণালয় পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশনা দিয়েছে।

ইন্টার্ন চিকিৎসক আহমদ হাসনাইন বলেন, ‘মানবিক বিবেচনায় ও স্যারদের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। ১২ তারিখে রায় নিয়ে যেন ছিনিমিনি করা না হয়। যদি দাবি আদায় না হয়, তাহলে আবার আন্দোলন শুরু হবে।’

চমেকের শিক্ষার্থী মো. সাকিব হোসেন বলেন, যৌক্তিক দাবি আদায়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল, তা ১২ তারিখ পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হলো। যদি আদালতের রায় পক্ষে না আসে এবং অন্য দাবিগুলো পূরণে যদি আন্তরিক না হয়, তাহলে আবার আন্দোলন শুরু হবে। আগামীকাল থেকে ক্লাসে ফিরবেন বলে জানান সাকিব।

চমেক হাসপাতালে প্রায় ১৮০ ইন্টার্ন চিকিৎসক পালা করে মূল চিকিৎসকদের সঙ্গে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে থাকেন। টানা কর্মসূচির কারণে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল স্থায়ী চিকিৎসকদের। বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগীরা এতে ভোগান্তির শিকার হন। ডাকাডাকি করেও চিকিৎসকদের দেখা মিলছিল না।

শিক্ষার্থীদের দাবি, এমবিবিএস ও বিডিএস ছাড়া কেউ চিকিৎসক লিখতে পারবেন না। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) বিরুদ্ধে করা রিট ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার করতে হবে। বিএমডিসি নিবন্ধন শুধু এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীদের দিতে হবে। ২০১০ সাল থেকে সরকার ম্যাটসদের (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল) বিএমডিসি থেকে নিবন্ধন দেওয়া শুরু করেছে, যা বন্ধ করতে হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসকদ র ব এমড স

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’

তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’

অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’

তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’

সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’

আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’

ঢাকা/আসাদ/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি