চট্টগ্রাম শহরের অন্যতম জনপরিসর সিআরবি এলাকা। প্রাণ–প্রকৃতিসমৃদ্ধ এলাকাটি শহরের ফুসফুস হিসেবে খ্যাত। এলাকাটিতে আছে অনেকগুলো বড় বড় গর্জন ও শিরীষগাছ। প্রায় শতবর্ষী গাছগুলোই সিআরবির অনন্য বৈশিষ্ট্য। দুঃখজনক হচ্ছে, ১০ বছর ধরে গাছগুলোর ডালপালায় মড়ক লেগেছে। কোনো রোগ কিংবা ছত্রাকের আক্রমণে নয়, বয়স ও কংক্রিটের আস্তরণের কারণে গাছগুলো মৃত্যুপথযাত্রী। দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নেওয়া গেলে গাছগুলো রক্ষা করা সম্ভব নয়।
দুই বছর আগে এই গাছগুলো কেটে সেখানে হাসপাতাল তৈরির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিলেন চট্টগ্রামের মানুষ। প্রতিবাদের মুখে ওই প্রকল্পও বাতিল হয়। তবে গত এক–দেড় দশকে বিভিন্ন মেলার আয়োজন ও জমায়েতের কেন্দ্র হয়ে ওঠে সিআরবি এলাকা। একসময়ের নিরিবিলি ও নৈসর্গিক এলাকাটিতে বেড়ে যায় মানুষের ভিড়, ব্যস্ততা ও যানবাহনের চলাচল। ফলে ওই এলাকায় আগের তুলনায় নানা দূষণ বেড়ে গেছে বললেই চলে। মানুষের আগমন ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের কারণে সিআরবিকে নানা সময়ে ঢেলে সাজানোও হয়। এতে ওই এলাকায় বাড়ে কংক্রিটের আধিক্য। সেটি আরও বেশি কাল হয়ে দাঁড়ায় গাছগুলোর জন্য।
বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) একটি গবেষক দল সম্প্রতি সিআরবি এলাকা পরিদর্শন করে। তাদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, সড়কের আইল্যান্ডের মাঝখানে থাকা গর্জন ও শিরীষগাছগুলোর ডালপালা মারা যাচ্ছে। এর কয়েকটি কারণের মধ্যে গাছগুলোর বয়স একটা কারণ। এ ছাড়া গাছের গোড়া চারদিক থেকে কংক্রিটের আস্তরণে ঢাকা। ফলে শিকড় বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পানি-আলো-বাতাস কম পাচ্ছে। এমনিতে গাছগুলোর বয়স ৭০ থেকে ৮০ বছর, তাই আস্তে আস্তে জীবনীশক্তি ক্ষয় হচ্ছে।
গাছগুলো টিকিয়ে রাখতে গবেষক দল তাদের প্রতিবেদনে কয়েকটি সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে গাছের গোড়ার চারপাশ থেকে কংক্রিটের আস্তরণ অপসারণ করে মাটি উন্মুক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এতে পানি ও বায়ু চলাচল স্বাভাবিক থাকবে। এ ছাড়া সড়ক বিভাজকে বৃক্ষরোপণের ক্ষেত্রে কম উচ্চতার অর্জুন, বহেড়া, হরীতকী, কৃষ্ণচূড়া, নিম, কাঠবাদামসহ অন্যান্য দেশি প্রজাতির শোভাবর্ধক গাছ রোপণের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। গাছের গোড়ায় পানি ও জৈব সার প্রয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও করা হয়।
সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) এলাকা মূলত রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের অধীন। সেখানে রেলওয়ের বিভিন্ন স্থাপনা ও পুরোনো স্থাপত্যও আছে। ফলে সিআরবি এলাকার গাছগুলো রক্ষায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। বন বিভাগ, বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তারা সমন্বিত কার্যক্রম হাতে নিতে পারে। পাশাপাশি বড় কোনো মেলা বা প্রদর্শনীর ক্ষেত্রে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানে প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন চালু
তেহরানের বাংলাদেশ দূতাবাসে বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য হটলাইন চালু করা হয়েছে।
রোববার তেহরান দূতাবাস এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য দূতাবাস ইমার্জেন্সি হটলাইন স্থাপন করেছে। ইরানে বসবাসরত সব বাংলাদেশি নাগরিকদের নিম্নোক্ত মোবাইলফোন নম্বরগুলোতে হোয়াটসঅ্যাপসহ সরাসরি যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
+ ৯৮৯৯০৮৫৭৭৩৬৮ ও +৯৮৯১২২০৬৫৭৪৫।